মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলকে রক্ষা করতে অঞ্চলটিতে গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ডুবোজাহাজ পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন গত রবিবার এক বিবৃতিতে জানায়, প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ডুবোজাহাজ ইউএসএস জর্জিয়াকে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠিয়েছেন। সেই সঙ্গে বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস আব্রাহামও যেন কয়েক দিনের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে পৌঁছতে পারে সে জন্য এটির গতি বৃদ্ধি করতে তাগাদা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এফ-৩৫সি যুদ্ধবিমানবাহী ইউএসএস জর্জিয়া এরই মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের পথে রয়েছে।
সেটি সেখানে আরেকটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজের স্থলাভিষিক্ত হবে।
হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া ও হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর নেতা ফুয়াদ শোকর হত্যাকাণ্ডে মধ্যপ্রাচ্যে আঞ্চলিক লড়াই ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেড়ে গেছে। এই দুই হত্যাকাণ্ডে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান ও হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী। মধ্যপ্রাচ্যে ডুবোজাহজ ও যুদ্ধজাহাজ পাঠানোর পদক্ষেপ ইরানের যেকোনো হামলা থেকে ইসরায়েলকে রক্ষা করতে যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকার বিষয়টিই পরিষ্কার করে তুলছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অস্টিন নিজেই বলেছেন, নিজের মিত্রকে রক্ষা করতে যুক্তরাষ্ট্র সম্ভাব্য সব পদক্ষেপই নেবে। গত ৩১ জুলাই তেহরানে অতিথিশালায় এক হামলায় নিহত হন হামাস নেতা হানিয়া। ওই হত্যাকাণ্ডের বদলা নিতে ইসরায়েলকে দায়ী করেছে ইরান। ইরান কখন কী ধরনের আক্রমণ চালিয়ে বসে তা আগেভাগে বুঝতে দেশটিকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
ইসরায়েলকে শাস্তি দিতে ইরান কী পরিকল্পনা আঁটছে, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
কাতারের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেহরান কামরাভা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এমন প্রকাশ্যে ডুবোজাহাজ পাঠানোর অর্থ দাঁড়ায়, ইরান ও হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে একটি প্রতিরোধ। তবে অধ্যাপক মেহরান মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ এমন কিছুর ইঙ্গিতও হতে পারে যে, ইরান হয়তো আসলেই কিছু করতে চলেছে এবং এটি আঘাত হানতে চলেছে।
এদিকে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন দেশের এয়ারলাইনসগুলো ইসরায়েল, লেবাননসহ কয়েকটি দেশে ফ্লাইট চলাচল স্থগিত করে চলেছে। সোমবার জার্মান এয়ারলাইনস লুফথানসা জানায়, তারা ইসরায়েলের তেল আবিব, লেবাননের বৈরুত, জর্দানের আম্মান, ইরানের ইরবিল ও ইরানের রাজধানী তেহরানে ফ্লাইট স্থগিত করেছে।
মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান পরিস্থিতির কারণেই তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানায়। সুইস এয়ারও তাদের তেল আবিব ও বৈরুতে ফ্লাইট স্থগিতের কথা জানায়। এয়ার ফ্রান্স তাদের বৈরুতের ফ্লাইট স্থগিতের মেয়াদ আরো বাড়িয়েছে।
সূত্র : এএফপি, বিবিসি, আলজাজিরা
এ জাতীয় আরো খবর..