অমুসলিমদের জন্য নিষিদ্ধ পবিত্র শহর মক্কায় গোপনে সফর করেছেন গিল তামারি নামে এক ইহুদি সাংবাদিক। তিনি ইসরাইলি গণমাধ্যম চ্যানেল থার্টিনে কর্মরত। গোপনে মক্কা সফরের সময় আরাফাতের জাবালে রহমত পর্বতসহ বিভিন্ন ধর্মীয় স্থানের ভিডিও ধারণ করেন তিনি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব ভিডিও এবং ছবি শেয়ারের পর উঠেছে নিন্দার ঝড়।
জেরুজালেম পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আঞ্চলিক সম্মেলনের কভার করার জন্য অন্য দুই ইসরাইলি সাংবাদিকের সঙ্গে সৌদি আরবে প্রবেশের একটি বিশেষ অনুমতি পেয়েছিলেন গিল তামারি।
অমুসলিমদের মক্কা নগরীতে প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। মদিনা শহরেও কোনো কোনো অংশে অমুসলিমদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মদিনায় প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সোমবার চ্যানেল থার্টিনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তামারি উল্লেখ করেছেন, অমুসলিমদের মক্কায় প্রবেশের অনুমতি নেই। তবে তিনি কীভাবে শহরে প্রবেশ করতে পেরেছেন এবং একজন মুসলিম চালকের সঙ্গে আরাফাত পর্বতে যেতে পেরেছেন তা বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন।
অবশ্য তামারি জোর দিয়ে বলেছেন যে, ওই গাড়ি চালক জানতেন না যে তিনি একজন ইসরাইলি সাংবাদিক। কারণ ওই গাড়ি চালকের সঙ্গে তিনি শুধু ইংরেজিতে কথা বলেছিলেন।
ক্যামেরায় তামারি নিচু গলায় হিব্রুতে কথা বলছিলেন এবং নিজের ইসরাইলি পরিচয় গোপন করতে কখনো কখনো ইংরেজিতেও কথা বলছিলেন।
তামারির ওই প্রতিবেদন স্কুপ নিউজ হিসেবে প্রচার করা হয়। বলা হয়, তামারিই প্রথম ইহুদি-ইসরাইলি সাংবাদিক, যিনি হজের সময় প্রতিবেদন করেছেন।
প্রতিবেদনটি একটি স্কুপ হিসাবে বিল করা হয়েছিল এবং সাংবাদিক প্রথম ইহুদি ইসরায়েলি প্রতিবেদক যিনি বার্ষিক মুসলিম তীর্থযাত্রার নথিভুক্ত করেছিলেন।
প্রতিবেদনটি প্রচারিত হওয়ার পর টুইটারে ‘মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদে ইহুদি’ হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ডিংসহ টুইটারে এর ব্যাপক সমালোচনা করা হয়।
সমালোচকদের মধ্যে ছিলেন ইসরাইলপন্থী সৌদি আন্দোলন কর্মী মোহাম্মদ সৌদ। তিনি বলেন, ইসরাইলে আমার প্রিয় বন্ধুরা, আপনাদের একজন সাংবাদিক ইসলামের পবিত্র মক্কা শহরে প্রবেশ করেছেন এবং সেখানে নির্লজ্জভাবে ছবি তুলেছেন। ইসলাম ধর্মকে এভাবে আঘাত করার জন্য চ্যানেল থার্টিনের জন্য লজ্জা।
এদিকে, ইসরাইলের আঞ্চলিক সহযোগিতা মন্ত্রী এসাউই ফ্রেইজ, যিনি একজন মুসলিম, তামারির প্রতিবেদনকে ইসরাইল-উপসাগরীয় সম্পর্কের জন্য ‘মূর্খ এবং ক্ষতিকারক’ বলে নিন্দা করে বলেন, শুধু রেটিং এর জন্য এই প্রতিবেদনটি প্রচার করা দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং ক্ষতিকর।
অবশ্য তামারি এসব প্রতিক্রিয়ার পর ক্ষমা চেয়ে বলেন, তিনি মুসলমানদের ক্ষুব্ধ করার উদ্দেশ্য কিছু করেননি।
টুইটারে তিনি ইংরেজিতে লিখেছেন, যদি কেউ এই ভিডিওতে আঘাত পেয়ে থাকেন, আমি গভীরভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।
এ জাতীয় আরো খবর..