ইসরাইলের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়ায় এবার তুরস্কের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থার ঘোষণা দিয়েছে তেল আবিব। ফিলিস্তিনিদের সঙ্গেও আঙ্কারার বাণিজ্য সীমিত করে দেবে নেতানিয়াহু প্রশাসন।
শুধু তাই নয়, বাণিজ্য স্থগিতাদেশ দেয়ায় তুর্কি প্রেসিডেন্টের এমন ভুলের জন্য অনুশোচনা করতে হবে বলেও মন্তব্য করেছে ইসরাইল। তবে তেল আবিবকে যুদ্ধবিরতিতে বাধ্য করতেই এমন পদক্ষেপ বলে সাফ জানিয়েছেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের নির্বিচার গণহত্যার কারণে তেল আবিবের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যের দরজা বন্ধ করেছে তুরস্ক। যতক্ষণ না গাজায় নিরবচ্ছিন্ন ও পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহের অনুমতি দেয়া হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সব পণ্যের ওপর বাণিজ্য স্থগিতাদেশ থাকবে বলে জানায় আঙ্কারা।
নেতানিয়াহু প্রশাসনকে যুদ্ধবিরতিতে বাধ্য করতেই তুরস্কের এমন পদক্ষেপ, জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। শুক্রবার তিনি বলেন, পশ্চিমাদের অব্যাহত সমর্থনের কারণে বেপরোয়া নেতানিয়াহু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে গেছেন। আর এতে লাগাম টানতে চায় আঙ্কারা।
তবে তুরস্কের সিদ্ধান্তকে একতরফা পদক্ষেপ উল্লেখ করে, কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরাইল। তুর্কি প্রেসিডেন্টকে ‘স্বৈরশাসক’ আখ্যা দিয়ে আঙ্কারার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তেল আবিবের।
একইসঙ্গে এরদোয়ানকে এই ভুলের জন্য অনুশোচনা করতে হবে বলেও মন্তব্য ইসরাইলি প্রশাসনের। এতে বিকল্প হিসেবে অন্য দেশগুলো থেকে পণ্য আমদানি এবং স্থানীয়ভাবে পণ্য উৎপাদনের জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু।
শুধু তাই নয়, ক্ষিপ্ত হয়ে তড়িঘড়ি করে নিলেন পাল্টা ব্যবস্থাও। এখন থেকে গাজা ও পশ্চিম তীরের মধ্যে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে তুরস্কের বাণিজ্য সীমিত করে দেয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে তেল আবিব।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তুরস্কের পরিসংখ্যান বিভাগের হিসেব অনুযায়ী, ২০২৩ সালেও আঙ্কারা-তেল আবিবের মধ্যে প্রায় ৭০০ কোটি ডলারের বাণিজ্য হয়েছে।
ইস্পাত, যানবাহন, প্লাস্টিক, বৈদ্যুতিক ডিভাইস এবং যন্ত্রপাতিসহ ইসরাইলে ৫৪০ কোটি ডলারের রফতানি করে তুরস্ক। আর তেল আবিব থেকে আঙ্কারা আমদানি করে ১৬০ কোটি ডলারের পণ্য। গেল আট বছর ধরেই প্রায় সমপরিমাণ বাণিজ্য হয় দু'পক্ষের।
আঙ্কারা-তেল আবিবের মধ্যে বরাবরই দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্ক ভালো থাকলেও মাঝে মধ্যে গাজা ইস্যুতে কূটনৈতিক টানাপোড়েন তৈরি হয়। এবারও দু'পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মকাণ্ডে তাই হলো। এ অবস্থায় তুরস্ক-ইসরাইল দু'পক্ষেই বাণিজ্যে ক্ষতির প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ জাতীয় আরো খবর..