ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা নির্মূলে আজ (১৭ মে) থেকে ১০ দিনের বিশেষ অভিযান শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। আজ সকালে গুলশানে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ পার্ক সংলগ্ন এলাকায় ১০ দিনব্যাপী বিশেষ মশা নিধন অভিযান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা।
এ সময় সেলিম রেজা বলেন, 'মাননীয় মেয়র মহোদয়ের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে যেকোনো ভবনে, নির্মাণাধীন বাড়িতে, সরকারি-বেসরকারি বা আধাসরকারি যেকোনো প্রতিষ্ঠানে, এমনকি সিটি করপোরেশনের কোনো অফিসে মশার লার্ভা পাওয়া গেলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। লার্ভা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, 'ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বছরব্যাপী নিয়মিত মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম চলমান থাকে। এই মৌসুমে মাননীয় মেয়র মহোদয়ের নির্দেশনায় আমরা ইতিমধ্যে হটস্পট চিহ্নিত করে অঞ্চল ও ওয়ার্ড পর্যায়ে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি। '
মো. সেলিম রেজা নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ করে বলেন, 'নিজ নিজ বসতবাড়িতে জমে থাকা পানি ফেলে দিয়ে এডিসের উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করতে হবে, সবাই মিলে সচেতন হলেই ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব। '
তিনি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, 'ডিএনসিসির পুরো এলাকায় ৪০০ বর্গগজ আয়তনে বিভক্ত করে স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৯৫০ জন স্বেচ্ছাসেবককে তালিকাবদ্ধ করে তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। '
এ সময় তিনি অনন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে কয়েকটি নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করেন।
উল্লেখ্য, গত ১১ মে সকালে রাজধানীর উত্তরায় এডিস ও ডেঙ্গুবিরোধী নাগরিক সচেতনতামূলক পথসভায় অংশ নিয়ে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম ডিএনসিসি এলাকায় ১০ দিনের মশা (ডেঙ্গু ও এডিস) নিধন কর্মসূচির ঘোষণা দেন। ১৭ থেকে ২৬ মে পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তিনটি নির্মাণাধীন ভবনে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় মোট ছয় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। অঞ্চল-৩-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল বাকী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকতা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান, স্থানীয় কাউন্সিলরসহ অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এ ছাড়াও অঞ্চল-১-এর আওতাধীন ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তরা সেক্টর নম্বর ৪, ৬, ৮ এবং ওয়ার্ড ১৭-এর নিকুঞ্জ-১, ২ ও জামতলা, টানপাড়া এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুলকার নায়ন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকালে বাসাবাড়ি ও নির্মাণাধীন ভবনে, ফাঁকা প্লট, ড্রেন ঝোপঝাড়ে কিউলেক্স মশকবিরোধী অভিযান ও সমন্বিতভাবে এডিসবিরোধী অভিযানে পাঁচটি স্থানে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় পাঁচটি মামলায় মোট এক লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং দুটি নিয়মিত মামলা করা হবে।
অঞ্চল-৬-এর ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তরা সেক্টর-১১ আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরীন অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় দুটি স্থানে মালিকবিহীন পরিত্যক্ত টায়ারে ও দুটি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। লার্ভাপ্রাপ্তি স্থানসমূহের লাভা ধ্বংস করে লার্ভাপ্রাপ্ত দুই ভবন মালিককে দুটি মামলায় ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এ জাতীয় আরো খবর..