×
  • প্রকাশিত : ২০২৪-০৬-২৫
  • ৫৬ বার পঠিত
যুক্তরাজ্যের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। মার্কিন ‘গুপ্তচরবৃত্তি’ আইন লঙ্ঘনের দায় স্বীকার করে নেয়ার চুক্তিতে তিনি মুক্তি পেয়েছেন। গতকাল সোমবার (২৪ জুন) তার কারামুক্তির মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ এড়াতে তার দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের অবসান হলো।

এক্স বার্তায় উইকিলিকস জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের বেলমার্শ কারাগারের একটি ছোট্ট প্রকোষ্ঠে ১ হাজার ৯০১ দিন আটক ছিলেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। কারাগার থেকে বেরিয়েই যুক্তরাজ্য ছেড়েছেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা।

জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে জাতীয় প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত তথ্য ফাঁসের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। এ নিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরীয় নর্দান মারিয়ানা আইল্যান্ডসের একটি আদালতে দায়ের হওয়া নথি অনুসারে অ্যাসাঞ্জ জাতীয় প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত তথ্য ফাঁসের একটি অভিযোগে দোষ স্বীকার করতে রাজি হয়েছেন বলে এএফপির খবরে বলা হয়েছে।

ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধ নিয়ে ২০১০ ও ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লাখ লাখ গোপন সামরিক-কূটনৈতিক নথি ফাঁস করে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা অ্যাসাঞ্জ। এ ঘটনায় অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে ১৮টি মামলার তদন্ত করছে মার্কিন বিচার বিভাগ। যুক্তরাজ্যে আটক থাকাবস্থায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

সিবিএসের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী অ্যাসাঞ্জকে আর যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারে যেতে হবে না। যুক্তরাষ্ট্রে তার বিরুদ্ধে যে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিল, সেই অপরাধ তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন বলে ধরা হবে এবং যুক্তরাজ্যে কারাবন্দি থাকার সময়কে সাজা খাটা হিসেবে গণ্য করা হবে। এর অর্থ হলো অ্যাসাঞ্জ নিজ দেশ অস্ট্রেলিয়ায় ফিরতে পারবেন।

তবে এর আগে তাকে যেতে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের তত্ত্বাবধানে থাকা নর্দান মারিয়ানা আইল্যান্ডসে। স্থানীয় সময় আগামীকাল বুধবার সেখানে তার পৌঁছানোর কথা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে হতে পারে ৬২ মাসের কারাদণ্ড। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাজ্যে কারাবন্দি থাকার সময়কে সাজাভোগ হিসেবে গণ্য করায় অ্যাসাঞ্জ অস্ট্রেলিয়ায় ফিরতে পারবেন।

এক নজরে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ:

২০০৬: কম্পিউটার প্রোগ্রামার জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ উইকিলিকস প্রতিষ্ঠা করেন
এপ্রিল-নভেম্বর, ২০১০: ইউএস আর্মির এক হাজার গোপন নথি ফাঁস
জুলাই, ২০১০: মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের আফগানিস্তান অভিযানের প্রায় ৭০ হাজার শ্রেণিবদ্ধ নথি প্রকাশ করে উইকিলিকস
আগস্ট, ২০১০: সুইডেনে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের দুইটি অভিযোগ আনা হয়
আগস্ট, ২০১০: সুইডেনে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানি জারি করা হয়
অক্টোবর-নভেম্বর, ২০১০: যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক আক্রমণের ৪ লাখ নথি এবং আড়াই লাখ মার্কিন কূটনৈতিক তারবার্তা ফাঁস
ফেব্রুয়ারি, ২০১১: অ্যাসাঞ্জকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয় সুইডেনের আদালত
নভেম্বর, ২০১১: আত্মসমর্পণের আদেশের বিরুদ্ধে অ্যাসাঞ্জের করা আপিল খারিজ করে দেয় সুইডেনের উচ্চ আদালত
জুন, ২০১২: লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয় চান অ্যাসাঞ্জ
আগস্ট, ২০১২: ইকুয়েডর তার রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন ইতিবাচক সাড়া দেয়
জুলাই, ২০১৪: সুইডেনে গ্রেফতারি পরোয়ানা আদেশের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে হেরে যান অ্যাসাঞ্জ
আগস্ট, ২০১৫: অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে আনা একাধিক অভিযোগের অনুসন্ধান বন্ধ করে দেয় সুইডিশ আদালত
আগস্ট, ২০১৫: ধর্ষণের অভিযোগে পুনরায় তদন্ত শুরু
এপ্রিল, ২০১৭: ইউএস অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতারের বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
মে, ২০১৭: সুইডিশ আদালত তদন্ত বন্ধ করে দেয়
জুলাই, ২০১৮: অ্যাসাঞ্জের ভাগ্য নির্ধারণে বৈঠকে বসে যুক্তরাজ্য-ইকুয়েডর
অক্টোবর, ২০১৮: অ্যাসাঞ্জের জন্য ইকুয়েডর দূতাবাস নতুন আইন আরোপ করে
এপ্রিল, ২০১৯: ইকুয়েডর দূতাবাস থেকে আশ্রয় হারানোর গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে
১১ এপ্রিল, ২০১৯: অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাজ্য পুলিশের হাতে তুলে দেয় লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাস
২৪ জুন ২০২৪: যুক্তরাজ্যের কারাগার থেকে মুক্তি পান

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat