ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে এখন চলছে সুপারস্ট্রাকচারের কাজ। অর্থাৎ উড়াল সড়কের কোথাও পাইলের ওপর বসেছে পাইল ক্যাপ, কোথাও বসেছে গার্ডার। আরও একধাপ এগিয়ে জুলাইয়ে শুরু হবে মূল সড়কের ঢালাই। কর্তৃপক্ষ বলছে, চলতি বছর ধউর-আশুলিয়া বাইপাস আর আগামী বছরের মধ্যে বিমানবন্দর থেকে ধউর অংশের কাজ শেষ হবে।
ধীরে ধীরে মাথা তুলছে নতুন পথ। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এই পথ ধরেই হবে গতির নতুন যাত্রা। বিমানবন্দর এলাকা থেকে শুরু, আব্দুল্লাপুর-কামরপাড়া হয়ে ধউর। একে একে সামনের দিকে এগিয়ে গেলে চোখে পড়বে কাজের অগ্রগতি।
উত্তরার প্রান্ত থেকে একে একে উঠেছে সবগুলো পাইল। একটু পরে পাইলে যুক্ত হয়েছে পাইল ক্যাপ। কোথাও কোথাও বসেছে গার্ডারও। তুরাগ পারেই দেশি-বিদেশি কাঁচামালে তৈরি হচ্ছে গার্ডার। এই আবকাঠামো উপরে তুলে যুক্ত করা হবে একেকটি পাইল।
গার্ডারে তুলে সেখানেই ঢালাই দিয়ে হবে শেষ পর্ব অর্থাৎ স্ল্যাব ঢালাইয়ের কাজ। টি-ভিমের কারণে সুপারস্ট্রাকচারের এই পর্বে অনেকটাই কাভার করায় ঢালাই করতে খুব একটা বেগ পেতে হবে না কর্তৃপক্ষকে।
প্রকল্প পরিচালক মো. সাহাবুদ্দিন খান বলেন, টি-ভিমের একটা সুবিধা হলো স্ল্যাবের অধিকাংশই কভার করে ফেলে। যে অল্প কিছু অংশ ফাঁকা থাকে সেটাসহ বাকি কাজ আমরা কলে ফেলব।
আপতত লক্ষ্য ধরেই এগিয়ে চলছে কাজ। সব ঠিক থাকলে চলতি বছরই ধউর-আশুলিয়া বাইপাসে উড়াল পথেই শুরু হবে যান চলাচল। তারপর চলমান সড়কটি তুলে শুরু হবে এই অংশের মূল উড়াল পথের কাজ।
প্রকল্প পরিচালক বলছেন, কাওলা থেকে ধউর ১০ কিলোমিটার পথের কাজ শেষ হবে আসছে বছর ডিসেম্বরে। আর সেতু বিভাগ বলছে, সব ঠিক থাকলে নির্ধারিত সময়েই শেষ হবে পুরো প্রকল্পের কাজ।
প্রকল্পের নথি অনুযায়ী, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মূল সড়কের দৈর্ঘ্য ২৪ কিলোমিটার। সঙ্গে র্যাম্প থাকছে ১০.৮৩ কিলোমিটার। এর সঙ্গে যুক্ত হবে নবীনগরে ১.৯৫ কিলোমিটার উড়ালপথ আর ২.৭২ কিলোমিটার সেতু।
প্রকল্প এলাকায় নতুন করে নির্মাণ করা হবে আরও ১৪.২৮ কিলোমিটার সড়ক। ড্রেনেজ এবং ডাক্ট থাকবে ১৮ কিলোমিটার।
প্রকল্পের পরিকল্পনা মতে, রাজধানীর ধউর থেকে আশুলিয়া পর্যন্ত এই আড়াই কিলোমিটার সড়কের অস্তিত্ব পরে আর থাকবে না। এই অংশে পুরোটাই থাকবে উড়ালপথ। নিচের বিদ্যমান সড়কটি ভেঙে তুরাগ নদের প্রবাহকে আরও গতিশীল করা হবে।
এই অংশে করা হবে বড় দুটি সেতু। একটি এক্সপ্রেসওয়ের সড়কের জন্য, আরেকটি সাধারণ পথ হিসেবে ব্যবহৃত হবে। অর্থাৎ টোলসহ এবং টোলমুক্ত দুই ধরনের পথই উন্মুক্ত থাকবে।
প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৭ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে চীনের এক্সিম ব্যাংক ঋণ দেবে ৯ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা। বাকি অর্থের জোগান দেবে বাংলাদেশ সরকার। প্রকল্পটি ২০১৭ সালের নভেম্বরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদন পায়।