×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৮-২২
  • ৭০ বার পঠিত
কক্সবাজারে বঙ্গোপসাগরের নাজিরারটেক এলাকায় মাছ ধরার একটি ট্রলারডুবির ঘটনায় গতকাল রবিবার আরো পাঁচ জেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় সোনাদিয়া দ্বীপের চর থেকে আরো দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া নোয়াখালীতে ট্রলারডুবির ঘটনায় শুক্রবার দুজন ও শনিবার আরো এক জেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

গত শুক্রবার সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া শুরু হলে মাছ ধরতে যাওয়া ‘এফবি মায়ের দোয়া’ নামের ট্রলারটি তীরে ফিরে আসার পথে কক্সবাজার শহরের তীরবর্তী নাজিরারটেক এলাকায় এসে ডুবে যায়।

কক্সবাজার জেলা মাছধরা ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জানান, ট্রলারটিতে ১৯ জন জেলে ছিলেন। ট্রলারডুবির পর কোস্ট গার্ডের সহযোগিতায়, নিজেরা সাঁতরে এবং অন্য নৌকায় ১১ জেলে উঠে আসেন। নিখোঁজ ছিলেন আট জেলে।

নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে গতকাল সাগরের জোয়ারের পানিতে কক্সবাজার শহরের কয়েকটি সাগরতীরবর্তী এলাকায় পাঁচজনের লাশ ভেসে আসে। গত শনিবার সোনাদিয়া দ্বীপের চরসহ দুই দিনে সাত জেলের লাশ উদ্ধার করা হলেও এখনো এক জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। উদ্ধার হওয়া মৃত জেলেরা সবাই কক্সবাজারের খুরুশকুলের বাসিন্দা।

উদ্ধার কার্যক্রম তদারককারী খুরুশকুলের স্থানীয় সমাজসেবক আনোয়ার হোসেন জানান, সর্বশেষ শনিবার রাত পর্যন্ত ছয়জন জেলে নিখোঁজ ছিলেন। তাঁদের উদ্ধারে গতকাল সকাল থেকে তৃতীয় দিনের মতো কার্যক্রম শুরু করা হয়। তল্লাশির এক পর্যায়ে সকাল ১১টার দিকে নাজিরারটেক পয়েন্টে বিচ্ছিন্নভাবে ভাসমান অবস্থায় তিনজনের মরদেহ এবং বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে একই পয়েন্ট থেকে আরো দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত জেলেদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী বঙ্গোপসাগরের মোহনায় ধমারচর এলাকায় ‘এমবি সিরাজ’ ডুবে নিখোঁজ দুজনের মধ্যে শরীফ (২৫) নামের একজনকে জীবিত এবং শনিবার দুপুরে বেলাল (২১) নামের এক জেলের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া শুক্রবার সকালে বঙ্গোপসাগরের ধমারচরে ট্রলারডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ১৬ জনের মধ্যে ওই দিনই দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

ট্রলারসহ ৪৪ জেলে উদ্ধার

বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ইঞ্জিন বিকল হয়ে পাঁচ দিন ধরে ভাসতে থাকা দুটি ট্রলারসহ ৪৪ জন জেলেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছেন কোস্ট গার্ড সদস্যরা। কোস্ট গার্ড সদস্যরা পৃথক অভিযান চালিয়ে গতকাল সকালে সুন্দরবনের আকরাম পয়েন্টের অদূরে ত্রিকোণা দ্বীপের কাছ থেকে ‘রিভার মেট’ নামের একটি মাছধরা ট্রলারসহ ২১ জেলেকে এবং মহিপুর সাগর মোহনা থেকে ছয় নটিক্যাল মাইল দূরে সমুদ্রে ভাসমান অবস্থায় ‘এফবি মায়ের দোয়া’ নামের একটি ফিশিং ট্রলারসহ ২৩ জেলেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেন। উদ্ধারকৃত ৪৪ জেলের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি এবং চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলায়।

কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি জানান, ১৬ আগস্ট লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি থেকে রিভার মেট নামের একটি ফিশিং ট্রলার নিয়ে ২১ জেলে বঙ্গোপসাগরে যান। ১৭ আগস্ট বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে ফিশিং ট্রলারের ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। পাঁচ দিন ধরে ওই ফিশিং ট্রলার নিয়ে ২১ জেলে সাগরে ভাসতে থাকেন। কোস্ট গার্ড সদস্যরা খবর পেয়ে সকালে সাগরের ত্রিকোণা দ্বীপের কাছ থেকে ভাসমান অবস্থায় রিভার মেট নামের ট্রলারসহ ২১ জেলেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে। তাঁদের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলায়।

এ ছাড়া বৈরী আবহাওয়ার কারণে এফবি মায়ের দোয়া নামের একটি ফিশিং ট্রলারের ইঞ্জিন বিকল হয়ে ২৩ জেলে পাঁচ দিন ধরে সাগরে ভাসতে ছিল। রবিবার সকালে মহিপুর সাগর মোহনা থেকে ছয় নটিক্যাল মাইল দূরে ভাসমান অবস্থায় এফবি মায়ের দোয়া নামের ট্রলারসহ জীবিত অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করা হয়। এই ২৩ জেলের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলায়। উদ্ধারকৃত জেলেদের প্রাথমিক চিকিৎসা এবং খাদ্য সরবরাহ করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat