গ্যাসসংকটের কারণে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। গ্যাস না পেয়ে চালানো হচ্ছে চড়া দামের তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র। এতে রাজধানীর মানুষ প্রায় সব সময় বিদ্যুৎ পেলেও লোড শেডিংয়ের কারণে ভুগছে গ্রামের মানুষ। গ্রামাঞ্চলে লোড শেডিং হচ্ছে দিনে গড়ে চার থেকে পাঁচবার।
জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জ্বালানিসংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় আপাতত লোড শেডিং হবেই। আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লোড ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হবে। এ সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবে সরকার। সেপ্টেম্বরের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশা করছেন জ্বালানি খাতের নীতিনির্ধারকরা।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্প্রতি দেশজুড়ে যে বিদ্যুৎসকট দেখা দিয়েছে সেটা মূলত জ্বালানিসংকটের কারণে। দেশের চাহিদার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে সরকারের। কিন্তু জ্বালানি তেল এবং গ্যাসের অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বড় ধরনের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। যে কারণে পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার লোড শেডিংয়ের পাশাপাশি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে নানা উদ্যোগ নিতে বাধ্য হয়েছে।
রাজধানী ও আশপাশের জেলাগুলোয় বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা বেশ খারাপ। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সেখানে সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ লোড শেডিং হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুই-তিন দিন ধরেই দিনে-রাতে লোড শেডিং হচ্ছে। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ত্রিশালের বিভিন্ন এলাকায় চার থেকে পাঁচবার লোড শেডিং হয়েছে। এতে প্রচণ্ড গরমে অসহনীয় হয়ে উঠেছে জনজীবন। ত্রিশাল উপজেলার এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সোমাইয়া সাদমিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দিনে তীব্র দাবদাহ, রাতে ভাপসা গরম। এরই মধ্যে যোগ হয়েছে একের পর এক লোড শেডিং। আজ (গতকাল) ত্রিশাল পৌরসভায় চার-পাঁচবার লোড শেডিং হয়েছে। ’
দেশের শিল্প-কারখানা ও বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাসের চাহিদা বাড়ছে। পেট্রোবাংলার অনুমান, ২০৩০ সালের মধ্যে গ্যাসের চাহিদা হবে প্রায় পাঁচ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। এ সময়ের মধ্যে উৎপাদন না বাড়লে চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ঘাটতি বাড়তে থাকবে। সে ক্ষেত্রে এলএনজির বিকল্প কিছু থাকবে না।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো. নাজমুল আহসান বলেন, ‘দেশে গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অনুসন্ধান কূপ খনন ও পুরনো কূপগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা দ্রুতই গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করছি।
এ জাতীয় আরো খবর..