কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়া তার মন্ত্রিসভার বাদি সদস্যদ ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে ‘অবিলম্বে’ বরখাস্ত করেছেন। দেশব্যাপী সরকারবিরোধী বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ পদক্ষেপ নিলেন। তবে তিনি কবে নতুন সরকার গঠন করবেন তা জানাননি।
এ ছাড়া রুটো জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, তিনি পূর্ব আফ্রিকার দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেলকেও বরখাস্ত করছেন।
তবে ডেপুটি প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এ সিদ্ধান্তে প্রভাবিত হবে না। কারণ তিনি আইনত বরখাস্ত হতে পারেন না। সেই সঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিবও তার দায়িত্বে বহাল থাকবেন, যিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীও।
দেশটিতে পরিকল্পিত কর বৃদ্ধির ফলে তরুণ নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল।
এতে রুটো সেই পরিকল্পনা ত্যাগ করতে বাধ্য হন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার দুই বছরের মধ্যে এ বিক্ষোভ তার জন্য সবচেয়ে বড় সংকট তৈরি করেছিল। বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ৩৯ জন নিহত হয়েছে। গত মাসে কিছু বিক্ষোভকারী দেশটির পার্লামেন্টেও হামলা চালায়।
রুটো তার ভাষণে আরো বলেন, ‘আমি অবিলম্বে বিভিন্ন সেক্টর এবং রাজনৈতিক সংগঠন ও অন্য সরকারি-বেসরকারি কেনীয়দের সঙ্গে ব্যাপক পরামর্শে নিযুক্ত হব, যাতে একটি প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠন করা যায়।’
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এই প্রক্রিয়া চলাকালীন প্রধান সচিব ও অন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় সরকারের কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্নভাবে অব্যাহত থাকবে। আমি যথাসময়ে অতিরিক্ত ব্যবস্থা ও পদক্ষেপের ঘোষণা দেব।’
গত সপ্তাহে রুটো প্রস্তাব করেছিলেন, প্রায় ২৭ লাখ মার্কিন ডলার বাজেটের ঘাটতি পূরণ করতে প্রায় সমান পরিমাণে ব্যয় হ্রাস ও অতিরিক্ত ঋণ নেওয়া হবে। কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের কারণে এ ঘাটতি হয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহে রুটো বিভিন্ন সরকারি সংস্থাজুড়ে বেশ কয়েকটি কঠোর ব্যবস্থার ঘোষণা দিয়েছিলেন। জনরোষের পর তিনি তার মন্ত্রিপরিষদ ও সংসদ সদস্যদের জন্য প্রস্তাবিত বেতন বৃদ্ধি বন্ধের আদেশ দেন।
রুটো কেনীয়দের চাপের মধ্যে রয়েছেন, যারা সরকারবিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন এবং সরকারের কাছ থেকে আরো জবাবদিহিতার দাবি করছেন। যদিও তিনি বিতর্কিত কর বৃদ্ধি প্রত্যাহার করতে রাজি হয়েছেন। তবে কিছু বিক্ষোভকারী প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিও জানিয়েছে।
দেশটিতে শেষবার সম্পূর্ণ মন্ত্রিসভা বিলুপ্ত করা হয়েছিল ২০০৫ সালে। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট এমওয়াই কিবাকি নতুন সংবিধানের ওপর গণভোটে হেরে যাওয়ার পরপরই তা করেছিলেন।
সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি
এ জাতীয় আরো খবর..