উত্তরবঙ্গের একটি জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের বুলবুলি খাতুন স্বামী ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে থাকেন বাবার বাড়িতে। কোরবানির ঈদের আগে স্থানীয় হাটে পোষা খাসি বিক্রি করেছেন ৩৩ হাজার টাকায়। তার ভাইও একটি ষাঁড় বিক্রি করেছেন ১ লাখ ২০ হাজার টাকায়। এভাবে প্রতিবছরই ঈদুল আজহায় বিক্রির উদ্দেশ্যে এই পরিবারটি একাধিক গরু-ছাগল লালনপালন করে থাকে। বসতবাড়ি ছাড়া অন্য কোনো সম্পদ না থাকা হতদরিদ্র এই পরিবারটির নগদ অর্থের সমাগমের একমাত্র উৎসই হলো ঈদুল আজহার সময় গরু-ছাগল বিক্রির টাকা।
এই পরিবারটির মতো দেশের গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত এলাকায় থাকা লাখ লাখ হতদরিদ্র পরিবারের নগদ অর্থ আয়ের একমাত্র অবলম্বর হলো ঈদুল আজহায় বিক্রি করা পশু।
শুধু প্রান্তিক ও দরিদ্র পরিবারগুলোই নয়, ঈদুল আজহায় পশু বিক্রিকে সামনে রেখে দেশের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলে ছোট-বড় খামার গড়ে তুলছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা। দেশের প্রান্তিক পশু পালনকারীরাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ১৭ লাখ ছোট-বড় খামার রয়েছে বলে জানা গেছে বাংলাদেশ ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনের সূত্রে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্যানুযায়ী, এবারের ঈদুল আজহায় সারা দেশে ১ কোটি ৪ লাখ ৮ হাজারের বেশি পশু কোরবানি হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ৩ লাখ ৬৭ হাজার বেশি।
ধারণা করা হয়, এ বছর পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে পশু বেচাকেনা হয়েছে ১ লাখ কোটি টাকার। যার অধিকাংশ অর্থই যোগ হয়েছে গ্রামীণ অর্থনীতিতে। এভাবেই ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে প্রতিবছরই গ্রামীণ অর্থনীতিতে হয় গতির সঞ্চার।
পাশাপাশি ঈদুল আজহায় কোরবানির পশু কেনার জন্য দেশের ব্যাংকিং খাতেও বেড়ে যায় নগদ অর্থের প্রবাহ। বিশেষ করে প্রবাসীরা দেশে থাকা আপনজনদের কাছে কোরবানির জন্য আলাদা করে অর্থ পাঠান। এতে প্রতিবছরই কোরবানির ঈদ সামনে রেখে দেশে বেড়ে যায় রেমিট্যান্সের প্রবাহ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া তথ্যানুযায়ী, চলতি জুন মাসের প্রথম ১৪ দিনে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স এসেছে ১৬৪ কোটি ডলার, যা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। আর গত মে মাসে এসেছে ২২৫ কোটি ডলার, যা গত ৪৬ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। আর এই রেমিট্যান্সের অধিকাংশই মূলত ব্যয় হয় কোরবানির পশু কেনার পেছনে।
শুধু রেমিট্যান্সই নয়, দেশের চামড়া শিল্পেও বিপুল অবদান রয়েছে ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে সংঘটিত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের। দেশের ট্যানারিগুলোতে সংগৃহীত চামড়ার অর্ধেক ও মানসম্মত চামড়ার অর্ধেকই মূলত আসে ঈদুল আজহার সময়। আর এসব চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের অধিকাংশই হয় রফতানি, যেখান থেকে আসে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা। পোশাকের পর দেশের দ্বিতীয় প্রধান রফতানি আয় আসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি হয় ১২২ কোটি ডলারের।
পাশাপাশি দেশের হাজার হাজার এতিমখানা, মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোর্ডিংগুলোর লাখ লাখ এতিম শিশুর ভরণপোষণেরও একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আসে ঈদুল আজহার সময় সংগ্রহ করা চামড়া বিক্রি করে। সাধারণত সর্বস্তরের মানুষের দানধ্যানেই এসব মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে থাকা এতিম শিশুদের থাকা-খাওয়াসহ পড়াশোনার খরচ চালানো হলেও তাদের ভরণপোষণের একটি বড় অংশের জোগান আসে শুধু ঈদুল আজহার সময় সংগৃহীত চামড়া থেকেই।
বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দেশে মাদ্রাসাপড়ুয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২৭ লাখ ৫৮ হাজার ৫০৪ জন। যাদের উল্লেখযোগ্য অংশ হলো এসব এতিমখানা মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের শিক্ষার্থীরা। এভাবে ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে সংঘটিত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে উপকৃত হচ্ছেন দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ, যাদের বেশিরভাগই প্রান্তিক ও দরিদ্র।
তবে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে কোরবানিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এই অর্থনৈতিক চক্রের সুষম ফলাফল আহরণ করা যাচ্ছে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে চামড়া শিল্পে অব্যবস্থাপনার কারণে কাঁচা চামড়ার দাম অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়াকে এ জন্য দায়ী করছেন তারা।
বিশেষজ্ঞ ও খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিবছর কোরবানির সময় দেশে জবাই হওয়া এক কোটিরও বেশি পশুর চামড়া যদি সুষ্ঠু ও আধুনিক বৈজ্ঞানিক উপায়ে সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ সম্ভব হতো, তবে এ খাতে দেশে যোগ হতো আরও বিপুল পরিমাণ অর্থ; যা দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে অবদান রাখত। পাশাপাশি চামড়ার উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক পশু পালনকারীরাসহ মাদ্রাসার এতিম শিক্ষার্থীরা।
বনানীর জামেয়া মোহাম্মদিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার নায়েবে মোহতামিম মুফতি ওয়াজেদ আলী সময় সংবাদকে বলেন, কয়েক বছর ধরেই মন্দায় আক্রান্ত দেশের চামড়ার বাজার। এ বছর কোরবানিতে তাদের মাদ্রাসার সংগ্রহ করা চামড়া গড়ে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি করতে সমর্থ হয়েছেন তারা। অথচ কয়েক বছর আগেও একই মানের চামড়া বিক্রি করেছেন তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায়।
চামড়ার দাম কমে যাওয়ার কারণে মাদ্রাসায় থাকা এতিম বাচ্চাদের ভরণপোষণে ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে উল্লেখ করে মুফতি ওয়াজেদ আলী বলেন, দেশের মাদ্রাসাগুলোতে অসংখ্য এতিম শিশু সম্পূর্ণ বিনা খরচে পড়াশোনা করছে। তাদের খাওয়াদাওয়া থেকে ভরণপোষণ করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের দানের টাকায় এসব মাদ্রাসা চললেও মাদ্রাসাগুলোর আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস কোরবানির সময় সংগ্রহ করা চামড়া বিক্রির টাকা। কিন্তু গত কয়েক বছরে চামড়ার দাম অস্বাভাবিক হ্রাস পাওয়ায় ব্যাপক আর্থিক সংকটে পড়েছে এসব মাদ্রাসা। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতির কারণে যেখানে সব ধরনের খাদ্যপণ্যের দামই বর্তমানে বাড়তি। ফলে মাদ্রাসায় থাকা এতিম শিশুদের জন্য পুষ্টিকর খাবার জোগানো তো দূরের কথা তাদের তিন বেলার খাবার জোগানোই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে বলে উল্লেখ করেন মুফতি ওয়াজেদ আলী।
এ অবস্থায় কোরবানিকেন্দ্রিক অর্থনৈতিক সম্ভাবনার পরিপূর্ণ সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করতে অবিলম্বে চামড়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে সমস্যা চিহ্নিত করে চামড়ার উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিতকরণ এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দেশের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্ব দেয়ার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা ও অর্থনীতিবিদরা।
দেশে কয়েক বছর ধরে কাঁচা চামড়ার দাম অস্বাভাবিক হ্রাস পাওয়ার কারণ হিসেবে দেশের ট্যানারি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ সময় সংবাদকে বলেন, নানা কারণেই কয়েক বছর ধরে চামড়ার বাজার পড়তির দিকে। এর দায় এককভাবে ট্যানারি ব্যবসায়ীদের ওপর বর্তায় না। এর পেছনে অন্য অনেক কারণ রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন কেমিক্যালের দাম অত্যধিক বেড়ে যাওয়া। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে মূলত এসব কেমিক্যাল আমদানির ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপকেই দায়ী করেন তিনি।
শাহীন আহমেদ আরও বলেন, রফতানিমুখী এ শিল্পের কাঁচামাল প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় কেমিক্যালের ওপর এত শুল্ক আরোপ পক্ষান্তরে দেশের ট্যানারি শিল্পের ক্ষতির কারণ হচ্ছে। কেমিক্যালের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে বর্তমানে একটি কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতেই আড়াই হাজার টাকার বেশি খরচ হয়ে যাচ্ছে।
পাশাপাশি কোরবানির সময় একই দিনে অধিক সংখ্যক পশু জবাই হওয়ায়, অল্প সময়ের মধ্যে এত বিপুল সংখ্যক চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের মতো পর্যাপ্ত অবকাঠামোর অভাবকেও চামড়া নষ্ট হওয়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
বিটিএ সভাপতি বলেন, একইদিনে অধিক সংখ্যক পশু জবাই হওয়ায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পশুর চামড়া ছাড়ানো ও প্রাথমিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় অদক্ষ শ্রমিকদের মাধ্যমে। অনেক ক্ষেত্রেই পশু জবাইয়ের ১৫-২০ ঘণ্টা পর চামড়ায় লবণ লাগানোর কারণেও চামড়ার গুণাগুণ নষ্ট হয়ে পড়ে।
তবে কয়েক বছর আগের তুলনায় বর্তমানে প্রায় পানির দরে কাঁচা চামড়া বিক্রি হওয়ার কারণ সম্পর্কে শাহীন আহমেদ বলেন, এর প্রধান কারণ লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ (এলডব্লিউজি) সনদ না থাকা। মূলত ২০১৭ সাল থেকেই তাদের সনদ বাধ্যতামূলক হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে কঠিন হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের চামড়া রফতানি।
তিনি বলেন, চামড়ার দাম কমে যাওয়ার কারণে শুধু ট্যানারি ব্যবসায়ীরাই নন, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গরুর লালনপালনকারী, কোরবানিদাতা, মাদ্রাসার এতিম শিক্ষার্থীরাসহ সংশ্লিষ্ট ভ্যালু চেনের প্রায় সব অংশীদারই।
এই পরিস্থিতি উত্তরণে আগামী এক বছরের মধ্যেই সাভারের ট্যানারিপল্লিতে অবস্থিত সেন্ট্রাল ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের (সিইটিপি) সক্ষমতা বাড়াতে হবে। কারণ, এর ধারণক্ষমতা ২৫ হাজার ঘনমিটার বলা হলেও এর সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এর সক্ষমতা ১৫ হাজার ঘনমিটারের মতো। এর সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে। এটাকে আধুনিক করতে হবে।
আর প্রতিবছরই দেশে পশু কোরবানির সংখ্যা ৫ থেকে ১০ শতাংশ বেড়ে যাচ্ছে। সেটা মাথায় রেখে আগামী ২০ বছরের সম্ভাব্য হিসাবকে সামনে রেখে ট্যানারিপল্লির সক্ষমতা বাড়াতে হবে। পাশাপাশি সিইটিপির সক্ষমতাও সে অনুযায়ী বাড়াতে হবে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখে। পাশাপাশি শুধু তরল বর্জ্যই নয়, একইসঙ্গে কঠিন বর্জ্যও ব্যবস্থাপনার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। এ জন্য ট্যানারি শিল্পের ব্যাংক ওয়ার্ড লিংকেজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য আলাদা জমি বরাদ্দ দিতে হবে।
তিনি বলেন সিইটিপির সমস্যা মিটলেই লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের সনদ পাওয়া অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে বাংলাদেশের ট্যানারি শিল্পের উদ্যোক্তাদের জন্য। ফলে ইউরোপের বাজার ফের নিজেদের অবস্থান করে নিতে পারবে বাংলাদেশের চামড়া শিল্প।
কোরবানির পশুর ক্ষেত্রে চামড়ার ন্যায্য দাম না পাওয়ার এই সংকটের প্রভাব দেশের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রেও পড়ছে উল্লেখ করে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও থিংকট্যাংক বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবীর বলেন, এই চামড়ার অন্যতম সুবিধাভোগী ছিল দেশের হাজার হাজার এতিমখানা মাদ্রাসাগুলোতে থাকা লাখ লাখ এতিম শিশু। কিন্তু চামড়ার উপযুক্ত মূল্য না থাকায় সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত হচ্ছে এসব এতিম শিশু। এ ছাড়া গরু লালনপালনকারী গৃহস্থ থেকে শুরু করে চামড়া শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রত্যেক অংশীদারই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
চামড়া শিল্পের সংকট কাটাতে সাভারের ট্যানারিপল্লির বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আধুনিকীকরণের ওপর জোর দেন এই অর্থনীতিবিদ। পাশাপাশি প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কাঁচা চামড়া সংরক্ষণের অবকাঠামো গড়ে তোলার ওপরও গুরুত্ব দেন তিনি।
মাহফুজ কবীর বলেন, মূলত পরিবেশসম্মতভাবে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের ব্যর্থতার কারণেই বিশ্ববাজারে ব্যাপক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। এতে চামড়ার মান যেমন নষ্ট হচ্ছে তেমনি প্রচুর পরিমাণ কাঁচা চামড়া নষ্টও হয়ে পড়ছে।
এ জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অভাবকে দায়ী করে মাহফুজ কবীর বলেন, আমাদের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কাঁচা চামড়ার প্রাথমিক প্রক্রিয়াজাতকরণের উপযুক্ত ব্যবস্থাপনা বা অবকাঠামো নেই। এ ছাড়া যেভাবে এই চামড়া প্রক্রিয়াজাত করা হয় তা-ও সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক এবং এই প্রক্রিয়া পরিবেশসম্মত নয়। এর প্রভাব পড়ছে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের চামড়া পণ্যের ইমেজে। যার জন্য পাওয়া যাচ্ছে না লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের সনদ। ফলে উন্নত দেশ বিশেষ করে ইউরোপ ও আমেরিকার বাজার আমরা ধরতে পারছি না। ফলে এবারের কোরবানির ঈদে এক কোটির বেশি পশু জবাই হলেও এত বিপুল সংখ্যক চামড়ার উপযুক্ত ভ্যালু অ্যাড করতে আমরা ব্যর্থ হচ্ছি।
যতদিন-না পর্যন্ত আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক উপায়ে পরিবেশসম্মতভাবে চামড়া সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ সম্ভব হবে, ততদিন পর্যন্ত দেশের চামড়া শিল্পের উপযুক্ত ভ্যালু অ্যাড করা সম্ভব হবে না। এবং চামড়ার উপযুক্ত মূল্য পাওয়া সম্ভব হবে না বলেও উল্লেখ করেন মাহফুজ কবীর।
এ জাতীয় আরো খবর..