আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বেশিরভাগ সময়ই রাশিয়া, চীন এবং উত্তর কোরিয়ার নীতিতে সামঞ্জস্য লক্ষ্য করা যায়। পশ্চিমের বিরুদ্ধে এক জোট হয়ে পরোক্ষভাবে লড়াইও করে তারা। তবে একেবারে প্রকাশ্যে এসে তেমনটা করতে চায় না চীন। তাই উত্তর কোরিয়া সফরে গিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যখন কিম জং উনের সঙ্গে মিলে যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা জোটকে মোকাবিলার ঘোষণা দিয়েছেন, তখন চীন এ বিষয়ে কিছু না বলাকেই সমীচীন মনে করছে।
পুতিনের উত্তর কোরিয়া সফরের বিষয়ে চীনের অবস্থান জানতে চাইলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেন, এটা শুধুই রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার দ্বিপক্ষীয় মতবিনিময়। এর চেয়ে বেশিকিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
কেন রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার সুসম্পর্ক নিয়ে সতর্ক চীন, সে বিষয়টি বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সঙ্গে আলাপে ব্যাখ্যা করেছেন কারনেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের বিশ্লেষক টং ঝাও, ‘রাশিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সামরিক সহযোগিতা নিয়ে চীনের কিছু সমস্যা রয়েছে। কারণ এর ফলে পিয়ংইয়ংয়ের উপর ভূরাজনৈতিক বিষয়াবলীতে যে একক প্রভাব বিস্তার করে বেইজিং, সেটায় জং ধরতে পারে।’
এছাড়া রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার মতো চীন নিজেদের পুরোপুরি পশ্চিমাদের থেকে দূরে সরিয়ে ফেলতে চায় না বলেও মনে করেন এই বিশ্লেষক, ‘বেইজিং, মস্কো এবং পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে একটা ডি ফ্যাক্টো ত্রিপক্ষীয় জোট গড়ে উঠুক, এটা বেইজিং চায় না। কারণ এমনটা হলে পশ্চিমের গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে সমস্যা হবে চীনের।’
আন্তর্জাতিক মহলে উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে বড় সমর্থক এখনো চীন। তবে সাম্প্রতিক সময় রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে উত্তর কোরিয়ার। করোনা মহামারির পর নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক সফরের জন্য রাশিয়াকে বেছে নেন কিম জং উন। একইভাবে গত বছর উত্তর কোরিয়ার সীমান্তে কড়াকড়ি শিথিল হওয়ার পর প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে উত্তর কোরিয়া সফর করলেন পুতিন।
মস্কো-পিয়ংইয়ংয়ের সখ্যতা যে বাড়ছে, তার আরেকটা প্রমাণ ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার উত্তর কোরিয়ায় তৈরি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার। সবমিলিয়ে পুতিন-কিমের সুসম্পর্ক নিয়ে আপাতত কিছুটা চাপেই রয়েছে চীন।
এ জাতীয় আরো খবর..