মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বিষয়ক গঠিত তদন্ত কমিটিকে আরো পাঁচ কর্মদিবস সময় দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা ৩ হাজার কর্মীর অভিযোগ তদন্ত কমিটির কাছে এসেছে। অভিযোগ দেওয়ার সময় ৮ জুন শেষ হলেও, এখনও অভিযোগ গ্রহণ করছে মন্ত্রণালয়।
আজ মঙ্গলবার (১১ জুন) প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।
শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ইমিগ্রেশানে মালয়েশিয়ার রিপোর্ট, ১০১টা রিক্রুটিং এজেন্ট, বায়বার থেকে রিপোর্ট নিচ্ছি। সে হিসেবে একটু সময় লাগছে। তদন্ত কমিটি একটু সময় চাইছে। আমরা তাদের আরো পাঁচ কর্মদিবস সময় দিয়েছি।
ঈদের পরে আমরা রিপোর্ট নিয়ে বসব।’
তিনি আরো বলেন, ‘মালয়েশিয়ার ব্যাপারে আমাদের তদন্ত কমিটি কাজ করছে। প্রত্যেকটা পয়েন্টে, প্রত্যেকটা জায়গায় খোঁজ-খবর নেওয়ার মাধ্যমে যা বেরিয়ে আসবে সেটার ব্যাপারে আমরা পদক্ষেপ নেব। আমরা প্রত্যেকটা সেক্টরে যেমন- ইমিগ্রেশান দিয়ে কতজন মালয়েশিয়া যেতে পারছে, সেই প্রতিবেদনও আনছি।
মালয়েশিয়ার অনলাইন যে ডিমান্ড আসছে; তারা কবে পাঠিয়েছে সেটাও আনছি।’
আমরা চাই, একটা সঠিক স্বচ্ছ প্রতিবেদন বেরিয়ে আসুক উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কারণ, কোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব না করুক। যার মাধ্যমে মানুষ উপকৃত হবে এবং ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের সমস্যায় না পড়তে না হয় সে ব্যাপারে আমরা কাজ করছি।’
কর্মীদের যেতে না পারার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যারা বাধাগ্রস্থ হয়েছে, তারা অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
আমরা কাউকে ছাড় দেব না। যাদের কারণে ভাবমূর্তি নষ্ট তাদের কোনো দিন ছাড় দেব না। তাদের আইনের আওতায় এনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কর্মীদের টাকার ফেরতের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘টাকাটা ফেরত পাবার ব্যাপারে আমরা বসব। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করব যেন সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ দেওয়া যায়।’
সিন্ডিকেট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা সিন্ডকেট এলাউ করব না। রিক্রুটিং এজেন্সি যারা অনুমোদিত সবাই কাজ করবে। আমরা চাই, সবাই কাজ করুক, সবার জন্য খোলা থাকুক। আমরা সিন্ডিকেটে বিশ্বাস করি না।’
মালয়েশিয়া গিয়ে কর্মীদের কাজ না পাওয়া এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যারা কাজ পাচ্ছে না আমরা রিক্রুটিং এজেন্সিকে ডেকে এবং যারা কাজ দেওয়ার জন্য ডিমান্ড নোট দিয়েছিল যারা রিসিভার তাদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করব। যদি কাজ না হয় তাহলে আমরা রিক্রুটিং এজেন্টের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’
এদিকে দুবাই, ওমান ও কাতার সফর বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দুবাই শ্রমবাজার আরো গতিশীল ও বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে দুবাইয়ের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। দুবাই থেকে ইতিমধ্যে ৩ হাজার কর্মীর চাহিদা এসেছে। এর মধ্যে ৪০০ কর্মী চলে গেছে। ৫০০ কর্মীর যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। ওমানে ৯৬ হাজার কর্মী অবৈধভাবে বসবাস করছেন। তাদেরকে বৈধ করার আশ্বাস দিয়েছে ওমান সরকার। এই বৈধ করণের জন্য একটি জরিমানা নেওয়া হয়। এই জরিমানা মওকুফ করার জন্য আমরা ওমান সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে এসেছি। এছাড়া তারা ১২টি ক্যাটাগরিতে লোক নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।’
ওমানে কর্মী ক্যাটাগরিতে কবে লোক নিবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এ বিষয় আলোচনা করেছি। এটাও পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে। দক্ষ কর্মী যাওয়া শুরু করলে অদক্ষ কর্মীও যাওয়া শুরু করবে। পর্যায়ক্রমে সে ব্যবস্থা হবে।’
এ জাতীয় আরো খবর..