নির্বাচন নিয়ে দেশে এখনো রাজনৈতিক সংকট বিরাজ করছে মন্তব্য করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘রাজনৈতিক সংকট দেশের নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলতে পারে। তাই নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার এবং রাজনৈতিকদলগুলোর মধ্যে কতিপর মৌলিক সমঝোতা প্রয়োজন।’
সোমবার (১০ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির আয়োজনে ‘আরএফইডি টক’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের পাঁচ মাস পার হয়ে গেলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরোধের জমাট বরফ এখনো গলেনি।
সার্বিক পরিবেশ এখনো পুরোপুরি অনুকূল হয়ে ওঠেনি। তবুও আমি আশাবাদী সংকট নিরসন হবে। দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকবে।’
নির্বাচন ব্যবস্থা ক্রমান্বয়ে আরও সুষ্ঠু হবে জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি, এমন অভিযোগ কোনো ভোটার করেনি।
দেশের সার্বিক নির্বাচন ব্যবস্থার আরও সংস্কার করা প্রয়োজন। এতে ব্যক্তির গুরুত্ব কমে যাবে, নির্বাচন ব্যবস্থা আরও সুসংহত হবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন কাজী হাবিবুল আউয়াল। বিগত নির্বাচনগুলোতে ভোটার উপস্থিতি কমে যাওয়া প্রসঙ্গে একাধিক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আইন ও বিধিবিধান প্রয়োগ করে।
যারা প্রার্থী তাদের দক্ষতা ও জনসম্পৃক্ততার উপর নির্ভর করে ভোটার উপস্থিতি কেমন হবে। নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দল থাকবে কিনা এ প্রশ্নে একটি বড় রাজনৈতিক দলের ভোটে না থাকায় অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হয়নি। তবে এখানে আমাদের করার কিছুই ছিল না।’
নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংকট নিয়ে সিইসির দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকেই সংলাপের মধ্য দিয়ে এর সমাধান করতে হবে। পরাজয় মেনে নিয়ে বিজয়ী দলকে অভিন্দন জানানোর মাধ্যমে একটি সুস্থ্ নির্বাচনী সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।
আর যারা নির্বাচিত হবেন তারা সেবার মনোভাব নিয়ে জনগণের কাছে গেলে সংস্কৃতিতে বড় ধরনের একটি পরিবর্তন হবে।’
সাবেক সেনা প্রধানের দুই ভাইয়ের এনআইডি জালিয়াতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এনআইডি জালিয়াতির অপরাধ ঘটছে, কোনো না কোনো ফাঁকফোকর দিয়ে অপরাধীরা এটি করছে। আমাদের জালিয়াতির তথ্য দিলে আমরা ব্যবস্থা নিব। সাবেক সেনা প্রধান ও বঙ্গবন্ধুর খুনির সন্তানদের জালিয়াতির তথ্য পাওয়ার পর আমরা তদন্ত করছি। পুরো সিস্টেমের ১ শতাংশ হয়ত এই জালিয়াতিতে যুক্ত, তাদের আমরা আইনের আওতায় আনব।’
পাঁচ ধাপে গড়ে ভোট পড়েছে ৩৬.৪৫ শতাংশ
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পাঁচ ধাপ মিলিয়ে ৪৬৯টি উপজেলায় ভোট হয়েছে। এসব উপজেলায় গড়ে মোট ৩৬.৪৫ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন সিইসি। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে অনেকে প্রভাব সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন, আমাদের তৎপরতায় সফল হননি।’
উপজেলা নির্বাচন সার্বিকভাবে অহিংস হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনেকটাই সহিংসতা মুক্ত হয়েছ। অতীতের সঙ্গে তুলনা করলে সহিংসতার মাত্রা অনেক কম। ভোটে প্রভাব বিস্তারের বিরুদ্ধে আমরা সজাগ থাকায় এবং মাঠ প্রশাসনের সহয়তায় অহিংস নির্বাচন হয়েছে।’
এ জাতীয় আরো খবর..