বাংলাদেশের ই-পাসপোর্ট থেকে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শব্দ বাদ দেওয়ার বিষয়টিকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে বাংলাদেশের পাসপোর্টে ওই পরিবর্তনের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁর সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি।
গতকাল শুক্রবার ঢাকায় এক বিতর্ক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোমেন এসব কথা বলেন। তিনি ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন।
বর্তমানে তিনি জাতীয় সংসদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি। গতকাল ঢাকায় এফডিসিতে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসন নিরসনে করণীয় নিয়ে ছায়া সংসদে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে কবি নজরুল সরকারি কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের বিতার্কিকরা বিজয়ী হন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, মুসলিম বিশ্বের বেশির ভাগ রাষ্ট্রনায়ক জনতার রায়ে নির্বাচিত নয়। তবে বাংলাদেশের সরকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত। তাই আরববিশ্ব ফিলিস্তিন ইস্যুতে জোরালো ভূমিকা রাখতে পারছে না।
মোমেন বলেন, ব্রাজিলের মতো অমুসলিম দেশ ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করলেও কোনো মুসলিম রাষ্ট্র এ পর্যন্ত এমন সিদ্ধান্ত নেয়নি।
ওআইসি ও আরব লীগ একাধিকবার বৈঠকে বসলেও তারা ইসরায়েলের পণ্য বর্জনে একমত হতে পারেনি।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “ইসরায়েলের সঙ্গে আমাদের কোনো বাণিজ্যিক সম্পর্ক না থাকলেও তাদের এবং তাদের মিত্রদের অনেক পণ্য আমাদের দেশে বিক্রি হচ্ছে। সম্প্রতি আমাদের ই-পাসপোর্ট থেকে ‘একসেপ্ট ইসরাইল’ শব্দটি বাদ দেওয়া দুঃখজনক।”
মোমেন বলেন, ‘আমি পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা অন্য কেউ আমার সঙ্গে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা না করেই এ পরিবর্তন করেছে। পাসপোর্টকে আরো মানসম্পন্ন করা এবং খরচ কমানোর জন্য জার্মানির একটি প্রতিষ্ঠান এ কাজটি করেছে বলে আমাকে অভিহিত করা হয়।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের নিজস্ব শক্তি বলতে কিছু নেই। পাঁচটি মোড়ল রাষ্ট্রের ওপর তারা নির্ভরশীল। ১৫ হাজার শিশুসহ ৩৬ হাজার মানুষকে হত্যার পরও মানবতার ফেরিওয়ালারা ফিলিস্তিনে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কোনো ভূমিকা রাখেনি। পশ্চিমাদের বাদ দিয়ে আরববিশ্ব এক হলেও ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল—দুটি পৃথক রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমেই বর্তমান সমস্যার সমাধান সম্ভব।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে সমর্থন করা নিয়ে কোনো বিভক্তি নেই। সবাই ফিলিস্তিনের পক্ষে। ফিলিস্তিনিদের লড়াই একক কোনো লড়াই নয়। এ লড়াই সারা পৃথিবীর মানুষের লড়াই। এই লড়াই বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে আমাদেরও লড়াই।’
এ জাতীয় আরো খবর..