রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে এরই মধ্যে বিশ্বব্যাপী খাদ্যের মূল্য বেড়ে আকাশচুম্বী হয়েছে। এ সময় বিশ্ববাজারে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের গম আসতে শুরু করায় কিছুটা স্বস্তির আভাস মিলছে, তবে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হচ্ছে ভারতে। দেশটিতে ধানের আবাদ কমায় চালের বাজারে নতুন সংকট তৈরির ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। গত বুধবার ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় ভারতের বেশ কিছু অঞ্চলে চলতি মৌসুমে ধান চাষের পরিমাণ কমেছে ১৩ শতাংশ। আবাদ কমে তিন বছরে সর্বনিম্ন হবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তরপ্রদেশ। ভারতের মোট চাল উৎপাদনের এক-চতুর্থাংশ আসে এই দুটি রাজ্য থেকে। ভারতের চালের উৎপাদন হুমকিতে থাকার বিষয়টি এমন একসময় সামনে এলো, যখন দেশটিতে খাদ্যের মূল্যের পাশাপাশি মূল্যস্ফীতিও বেড়েছে ব্যাপকভাবে।
এদিকে চালের উৎপাদন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশটির ব্যবসায়ীরা। কারণ উৎপাদন কম হলে মূল্যস্ফীতির ওপর আরো চাপ বাড়বে। তা ছাড়া কড়াকড়ি আসতে পারে রপ্তানিতেও। বৈশ্বিক চালের ৪০ শতাংশই আসে ভারত থেকে। দেশটির সরকার অভ্যন্তরীণ সংকট মোকাবেলায় এরই মধ্যে গম ও চিনিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে।
উৎপাদনের শঙ্কার মধ্যেই ভারতে চালের মূল্য বেড়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, ওডেশাস ও ছত্তিশগরে গত দুই সপ্তাহের চেয়ে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মূল্য বেড়েছে ১০ শতাংশ পর্যন্ত। এ অবস্থায় দেশটি রপ্তানি মূল্য বাড়াতে পারে বলে জানিয়েছেন ভারতীয় চালের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান স্পঞ্জ এন্টারপ্রাইজেজ প্রাইভেটের পরিচালক মুকেশ জাইন। তিনি বলেন, ‘আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদ রপ্তানি মূল্য বেড়ে ৪০০ ডলার হতে পারে। বর্তমানে ফ্রি অন বোর্ড ভিত্তিতে রপ্তানি মূল্য ৩৬৫ ডলার। ’
বিশ্বের এক শর বেশি দেশে চাল রপ্তানি করে ভারত। দেশটির প্রধান ক্রেতার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, চীন, নেপাল এবং মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কিছু দেশ।
ইউক্রেন সংকটের কারণে বিশ্বজুড়ে যখন গম নিয়ে সংকট তৈরি হয়েছে, তখন এশিয়ার উৎপাদনের ওপর ভর করে চালের বাজার ছিল স্থিতিশীল, যা বিশ্বের অনেক দেশকেই খাদ্যসংকট থেকে রক্ষা করে।
এ জাতীয় আরো খবর..