×
  • প্রকাশিত : ২০২৪-০৫-৩০
  • ৫৩ বার পঠিত
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপেও ভোটারদের আগ্রহ কম দেখা গেছে। এই ধাপে ৮৭ উপজেলায় প্রায় ৩৫ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে দল থেকে বহিষ্কৃত হন বিএনপির ২০৩ নেতা। চার ধাপে অনুষ্ঠেয় এ নির্বাচনের প্রথম দুই ধাপে বিএনপির কয়েকজন বহিষ্কৃত নেতা চেয়ারম্যান পদে জয় পান।

কিন্তু তৃতীয় ধাপে হোঁচট খেয়েছেন তাঁরা। এ ধাপেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জয়জয়কার। গতকাল বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত ঘোষিত বেসরকারি ফলাফল বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৭০টি উপজেলার বেসরকারি ফল কালের কণ্ঠ’র কাছে আসে।

এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী ৬৩ জনই আওয়ামী লীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মী। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির দুজন, পার্বত্য চট্টগ্রামভিত্তিক সংগঠন ইউপিডিএফের দুজন এবং জনসংহতি সমিতির (এম এন) একজন প্রার্থী রয়েছেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ জাসদ সমর্থিত একজন এবং স্বতন্ত্র একজন প্রার্থীও বিজয়ী হয়েছেন। এ ধাপে বিজয়ী অন্তত ১৭ জন আওয়ামী লীগ নেতা রয়েছেন, যাঁরা পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছেন।

জাতীয় পার্টির এমন নেতা রয়েছেন একজন।
গতকাল ৮৭ উপজেলায় সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে একটানা ভোটগ্রহণ। ভোটের আগেই তিনটি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ১২ জন প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে একজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন সাতজন। এর মধ্যে পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলায় সব পদে (চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান) বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা নির্বাচিত হন।

কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছিল ইসি। ভোট কম পড়ার কারণ বিশ্লেষণ করবেন রাজনীতিবিদরা—এই মন্তব্য করে সিইসি বলেন, ‘আমাদের কাজ হচ্ছে তথ্য প্রদান করা। বিশ্লেষণ আমরা করব না। এটা গণমাধ্যম ও রাজনীতিবিদদের কাজ।’

এদিকে ভোটগ্রহণের দিন কয়েকটি উপজেলায় বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ, ব্যালট ছিনতাই, জাল ভোট প্রদান এবং প্রকাশ্যে ভোট প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। তবে দু-চারটি অনভিপ্রেত ঘটনা ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কাজী হাবিবুল আউয়াল।

সিইসি ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘সীমিত পরিসরে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেও তা ভোটকে বাধাগ্রস্ত করেনি। ভোট কারচুপির চেষ্টা করায় ৩০ জনকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী আটক করেছে, দুজনকে তাত্ক্ষণিক কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আটক করা হয়েছে দুজন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাকে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় ছয়জন আহত হয়েছেন। একজন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। রাঙামাটির নানিয়ারচরে ইউপিডিএফ কিছু ব্যালট ছিনতাই করে। তবে তা ভোটে প্রভাব ফেলেনি।’

ইসি সূত্রে জানা যায়, গতকাল নির্বাচনী অপরাধ আমলে নিয়ে সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে বিচারের মাধ্যমে ২১টি মামলা নিষ্পত্তি করেছেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরা। এর মধ্যে ২০টি মামলায় দণ্ড প্রদান করা হয়েছে। কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে ছয়জনকে এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন ১৪ জন। খালাস প্রদান করা হয়েছে একজনকে।

গতকাল ১০টি নির্বাচনী অঞ্চলের অধীনে সাত হাজার ৪৫০টি কেন্দ্রে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ভোটার ছিল দুই কোটি ৮৭ লাখের বেশি। এই ধাপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন মোট এক হাজার ১৫২ জন প্রার্থী। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩৯৭ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৫৬ এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৯৯ জন প্রার্থী ছিলেন।

তৃতীয় ধাপের ভোটে আলোচনায় এসেছে প্রকাশ্যে ভোট প্রদানের অভিযোগ। একাধিক উপজেলায় গোপন কক্ষে ভোট প্রদানের পর ব্যালটের ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন প্রার্থীর সমর্থকরা। এ ছাড়া পাবনার ঈশ্বরদীতে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ফেসবুক লাইভে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোট প্রদানের ভিডিও প্রচারের অভিযোগ উঠেছে। ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় ভোট দেওয়ার পর সিল মারা ব্যালটের সঙ্গে ছবি তুলে পোস্ট করায় উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ইয়াকুব আলীকে আটক করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat