আরও একটা মে মাস, আরও একবার চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড়। আম্ফান, ইয়াসের স্মৃতি উসকে ধেয়ে আসছে রেমাল। রোববার (২৬ মে) রাতে সুন্দরবনের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় আছড়ে পড়ার শঙ্কা আছে প্রবল এই ঘূর্ণিঝড়ের। এর মধ্যেই নতুন করে আলোচনায় ভারতের আবহাওয়া বিভাগের (আইএমডি) দেয়া আগের এক তথ্য।
ঘূর্ণিঝড় রেমাল আছড়ে পড়ার আগেই ট্রপিক্যাল সাইক্লোন বা ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর সামনে এসেছে। মূলত গত বছরের এপ্রিলে এসব তথ্য জানিয়েছিল আইএমডি।
তারা বলেছে,
সাইক্লোনকে হিট ইঞ্জিনের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এলাকার মহাসাগরগুলোরর উষ্ণ পানি এবং তার ওপরে থাকা আর্দ্র বাতাস থেকেই শক্তি সংগ্রহ করে ঘূর্ণিঝড়গুলো। জলীয় বাষ্প ঘনিভূত হয়ে জলের ফোঁটা বা বৃষ্টি তৈরি হয়। আর এর মাধ্যমে ওই শক্তি মুক্ত হয়। এই শক্তির খুব ছোট একটা অংশ (৩%) গতিশক্তিতে রূপান্তরিত হয়, যা ঘূর্ণিঝড়ের উইন্ডফিল্ডকে বজায় রাখে। আর এভাবেই পরিণত ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে শক্তি তৈরি হয়।
আইএমডির ভাষ্য,
পরিণত ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে থাকা এই শক্তি ১০০টি হাইড্রোজেন বোমার শক্তির সমান হতে পারে।
উল্লেখ্য, হাইড্রোজেন বোমা দ্বিতীয় প্রজন্মের পারমাণবিক অস্ত্র। অর্থাৎ, হিরোশিমা-নাগাসাকিতে যুক্তরাষ্ট্র যে বোমাগুলো ফেলেছিল, তার তুলনায় আকারে ছোট এবং ওজনে কম; কিন্তু এর ধ্বংস-ক্ষমতা অনেক বেশি।
এদিকে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল ক্রমেই উত্তর দিকে সরে গিয়ে রোববার (২৬ মে) রাতে বাংলাদেশের খেপুপাড়া ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের মাঝামাঝি অঞ্চল দিয়ে মোংলার পাশ দিয়ে অতিক্রম করতে পারে বলে জানা গেছে।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে মোংলায় জলোচ্ছ্বাসের পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিরও আশঙ্কা করা হচ্ছে। রোববার সবশেষ আপডেটে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ।
বলা হচ্ছে, ঘূর্ণিঝড়টি যখন বাংলাদেশ ও ভারতের উপকূল অতিক্রম করবে তখন এটির গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। আর ঝড়ো বাতাসের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটার।
ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ আরও জানিয়েছে, গত ৬ ঘণ্টায় ১৩ কিলোমিটার গতিতে উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে প্রবল এ ঘূর্ণিঝড়টি।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়া বিভাগও জানিয়েছে, আগামী কয়েক ঘণ্টায় স্থলভাগের সঙ্গে দূরত্ব আরও খানিকটা কমবে রেমালের। তা সমুদ্রের ওপরেই আরও ঘনীভূত হবে এবং শক্তি বৃদ্ধি করবে। রোববার মধ্যরাতে বাংলাদেশের খেপুপাড়া এবং পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপের মাঝে বাংলাদেশের মোংলার কাছে রেমাল আছড়ে পড়ার শঙ্কা আছে।
এদিকে বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস বলছে, ঘূর্ণিঝড় রেমাল অতিক্রমের সময় ৮ থেকে ১০ ফুট জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। সেই সঙ্গে অতিভারি বৃষ্টিতে পাঁচ জেলায় ভূমিধসের শঙ্কার কথাও জানিয়েছে সংস্থাটি। এ অবস্থায় উপকূলের বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে মাইকিং করছে স্থানীয় প্রশাসন।
সূত্র: টিভি৯, আইএমডি
এ জাতীয় আরো খবর..