×
  • প্রকাশিত : ২০২৪-০৫-২০
  • ৫১ বার পঠিত
সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ভুল তথ্য দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলে অভিযোগ করেছে অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)। সোমবার (২০ মে) ইআরএফ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানায় সংগঠনটি।

পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করলে মাঠে নেমে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইআরএফ। একইসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিয়ে ডেপুটি গভর্নর ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিভিন্ন প্রোগ্রামে মিথ্যাচার-প্রোপাগান্ডার জোর প্রতিবাদ করেছে সংগঠনটি। 

সোমবার রাজধানীর পুরান পল্ট‌নে ইআরএফ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।


ইআরএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের আগের মতো অস্থায়ী পাস নিয়ে নির্বিঘ্ন প্রবেশাধিকার চাই। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা ও একাধিকবার চিঠি চালাচালি করা হয়েছে কিন্তু সমাধান হয়নি। যদি নিয়মতান্ত্রিক আলোচনায় প্রবেশাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া না হয়, তাহলে কঠোর আন্দোলন করা হবে। 

ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা বলেন, প্রতিষ্ঠার ৩৩ বছরে কোনও বিষয়ে মাঠে নামেনি ইআরএফ। যদি দাবি না মানা হয়, তাহলে কঠোর আন্দোলনে মাঠে নামা ছাড়া উপায় নেই। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এখন দাবি না মানলে আন্দোলন ছাড়া উপায় নেই।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশ করতে পারে কিনা, তা নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন জানিয়ে ইআরএফ সভাপতি বলেন, আমাদের জানতে হবে অন্য দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কিনা। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ, ব্যাংক অব ইংল্যান্ড, রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়াসহ বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইট অনেক সমৃদ্ধ। সেখানে অর্থনীতির সব সূচকের নিয়মিত আপডেট ছাড়াও বোর্ড মিটিংয়ের কার্যবিবরণী, বিভিন্ন ব্যাংকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাসহ সব ধরনের তথ্য প্রকাশ করা হয়। কোনও সাংবাদিক প্রশ্ন করলে দ্রুত রেসপন্স করা হয়। আবার এসব দেশের আর্থিক খাতের সুশাসনের মাত্রা অনেক উঁচুতে। পদ্ধতিগত কারণে সেখানে কোনও অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য আড়াল করা কঠিন। এছাড়া বেনামি ঋণ, ঋণখেলাপি, অর্থপাচারকারী বা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত কেউ কোনও দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারে বলে আমাদের জানা নেই। এখন বাংলাদেশে সবার জন্য উন্মুক্ত রেখে কেবল সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে আসলে কী তথ্য আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে, আমরা সে প্রশ্ন রাখতে চাই।

দাবি না মানলে কী কর্মসূচি হবে এমন প্রশ্নের জবাবে ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম জানান, আগামী জাতীয় বাজেটের আগে যদি বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা না হয়, তাহলে বাজেটের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সামনে অবস্থান ও সমাবেশ করা হবে। এছাড়া দাবি না মানা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর ও মুখপাত্রের সব ধরনের কর্মসূচি বর্জন করা হবে।

লিখিত বক্তব্যে ইআরএফ সভাপতি বলেন, বর্তমান সরকার অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করার কথা বলে আসছে। অথচ ৫৩ বছরের প্রথা ভেঙে হঠাৎ করে বাংলাদেশ ব্যাংক সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, যা সরকারের অবস্থানের বিপরীত। গত ২১ মার্চ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক অলিখিতভাবে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এ বিষয়ে সমাধান চেয়ে ইআরএফের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা হয়েছে এবং দুদফা চিঠিসহ বিভিন্নভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রায় দুমাস হলেও সমস্যার সমাধান না করে এখন বিভিন্ন ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এ রকম বাস্তবতায় আজকের এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে। এখানে আমি একটি বিষয় পরিষ্কার করতে চাই। সাংবাদিকরা এর আগে নিজের কার্ড প্রদর্শন করে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারতেন। এখন তা বন্ধ করা হয়েছে। হঠাৎ করে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় নানা গুজব ডালপালা মেলার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটেছে কিনা সে প্রশ্ন উঠছে।

বর্তমান গভর্নর কার স্বার্থে কেবল গণমাধ্যমের কাছে তথ্য আড়াল করার চেষ্টা করছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বলেও জানায় অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের এ নেতা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat