অসাধু ডিম ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জরিমানার পাশাপাশি মামলা করবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। রোববার ডিম ও ব্রয়লার মুরিগসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্বাভাবিক রাখার লক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এমন বার্তা দেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান। তার সভাপতিত্বে সভায় এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমিতি, কাওরান বাজার ব্যবসায়ী সমিতি, করপোরেট ও পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সফিকুজ্জামান বলেন, ডিমের দাম বাড়াতে ব্যবসায়ীদের ফোন দিয়েছে মালিক সমিতি। তারা ডিমের দাম নিজেরাই নির্ধারণ করেছে। যা কাম্য নয়। এছাড়া ডিমের দাম সমিতি নির্ধারণ করতে পারে না। তারপরও সমিতির পক্ষ থেকে তা করা হয়েছে। এ অবস্থা আর চলতে দেয়া যাবে না। আগামীতে বড় কোম্পানি ও খামারি পর্যায়ে অভিযান চালানো হবে। এ সময় জরিমানার পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
মহাপরিচালক জানান, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় প্রতি পিস ডিমের পরিবহণ ব্যয় তিন পয়সা থেকে চার পয়সা বেড়েছে। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছে ২ টাকা ৭০ পয়সা। নিজেই একটি সিল মেরে অর্গানিক বানিয়ে দ্বিগুণ বা তিনগুণ দামে ডিম বিক্রি করেছে। এভাবে দেশে ব্যবসা করা যাবে না। আপনারা এভাবে ব্যবসা করতে পারবেন না। ইচ্ছা হলেই সিল মেরে অর্গানিক ডিম বানাবেন এটা হতে পারে না।
সভা চলাকালে সফিকুজ্জামান তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমানত উল্লাহকে প্রশ্ন করেন ব্যবসায়ী সংগঠনের অনুমতি কোথা থেকে নিয়েছেন। জবাবে তিনি জানান, সমবায় সমিতির কাছ থেকে নিয়েছেন। তখন সব কাগজপত্র চাইলে তিনি দেখাতে ব্যর্থ হন। পরে তাকে থাকতে বলে অন্য কাউকে দিয়ে কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলা হয়। সেই সঙ্গে সেক্রেটারিকেও থাকতে বলা হয়। তখন ডিমের দাম বাড়ানোর কারণ জানতে চাইলে আমানত উল্লাহ কোনো সঠিক উত্তর দিতে পারেননি। এ সময় কাজী ফার্মের ডিলারকে দাম নির্ধারণের কাগজপত্র দেখানোর জন্য থাকতে বলা হয়। সিল মেরে অর্গানিক ডিম হিসাবে বিক্রি করার অভিযোগে একজন বিক্রেতাকে অর্গানিক ডিমের প্রমাণপত্র দেখানোর জন্য থাকতে বলা হয়।
এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, আমি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই-সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করা যায় কিনা এই জায়গায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে হাত দিতে হবে।
সমবায় সমিতি ব্যবসা করতে পারে কিনা আমি জানি না, এই বিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আশা করি দেখবে। এই ধরনের সমবায় সমিতি, আড়তদাররা কিন্তু মধ্যস্বত্বভোগী। তারাই কিন্তু দেশকে অস্থিতিশীল করছে। তারা ইচ্ছামতো দাম কমায়-বাড়ায়। সরকারের উচিত তাদের আইনের আওতায় আনা।
সভায় জানানো হয়, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর পোলট্রি ফিডের দাম বাড়েনি। জ্বালানির বাড়তি মূল্যের জন্য ময়মনসিংহ অঞ্চল থেকে ঢাকায় প্রতি পিস ডিম আনতে খরচ বাড়ে ৩ থেকে চার পয়সা। ভোক্তা অধিদপ্তর বাজার তদারকি করে প্রমাণ পেয়েছে, যে দাম বাড়ার কথা তার চাইতে দুই থেকে তিনগুণ বেশি দামে ডিম বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি অভিযানকালে ক্রয় রসিদ গোপন রাখেন অনেক ব্যবসায়ী। অনেক ব্যবসায়ী অভিযানের সময় ক্রয়-বিক্রয়ের রসিদের কার্বন কপি ছিঁড়ে ফেলেছেন। যাতে দাম না দেখা যায়। আবার অনেকেই কার্বন কপি নষ্ট করে ফেলেছেন। তাদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
এ জাতীয় আরো খবর..