বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ক্যাফেটেরিয়ায় ছাত্রলীগের ব্যানারে আলোচনাসভার আয়োজন করায় বিক্ষোভ করেছেন বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তবে আয়োজকরা বলছেন, এটা কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় শোক দিবস সামনে রেখে দোয়ার আয়োজন করা হয়। এতে বুয়েটের সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা অংশ নেন।
২০১৯ সালে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে আবরার ফাহাদ হত্যার পর থেকে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ। সেই সূত্র ধরে ছাত্রলীগের এই কর্মসূচির প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিক্ষোভ করেছেন বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শনিবার বিকেল ৫টা থেকে শুরু হয়ে ছাত্রলীগের ওই কর্মসূচি চলে রাত সোয়া ৮টা পর্যন্ত চলে। এর আগেই সন্ধ্যা ৭টা থেকেই সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাফেটেরিয়ার সামনে একত্রিত হতে থাকেন। এরপর প্রগ্রাম শেষে বুয়েটের সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা বের হলে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ‘আবরারের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ‘রাজনীতির ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।
বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাল মাহমুদ বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘এটা কোনো রাজনৈতিক প্রগ্রাম নয়। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর জন্য দোয়ার প্রগ্রাম। ’ এ সময় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সমস্বরে বলে ওঠেন, ‘তাহলে ছাত্রলীগের ব্যানারে কেন? আপনাদের বুয়েটের প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবেও করতে পারতেন!’
পরে রাত পৌনে ৯টার দিকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা ক্যাম্পাস ত্যাগ করলে শিক্ষার্থীরা প্রেস ব্রিফিং করেন। এ সময় তাঁরা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালি হারায় হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তাঁর আদর্শ অনুসরণ করেই আমরা নিরন্তর কাজ করে চলেছি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে। এরই ধারাবাহিকতায় নিরাপদ ও সন্ত্রাসমুক্ত শিক্ষাঙ্গন নিশ্চিত করা সব শিক্ষার্থীর মৌলিক চাহিদার মধ্যে অন্যতম। অথচ দুঃখজনক হলেও সত্য, যে ছাত্ররাজনীতি একসময় দেশের ক্রান্তিলগ্নে অগ্রগণ্য ভূমিকা রেখেছিল, পরাধীনতার হাত থেকে মুক্ত করে জন্ম দিয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের, সেই ছাত্ররাজনীতি আজ ক্ষমতার অপব্যবহারে কলুষিত।
শিক্ষার্থীরা বলেন—ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও অত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্রসংগঠনের বারবার নিজেদের উপস্থিতি জানিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি পাওয়ায় বুয়েট কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। এহেন কার্যক্রমের ব্যাপারে আমরা, বুয়েটের সব সাধারণ শিক্ষার্থী কর্তৃপক্ষের অবস্থান এবং সুস্পষ্ট জবাব আশা করছি।
এ জাতীয় আরো খবর..