ক্যান্সারে নারী মৃত্যুর মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যান্সার বাংলাদেশে দ্বিতীয় মৃত্যুর প্রধান কারণ। প্রতি বছর দেশে ১০ হাজারের বেশি নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে মারা যায়। দেশের ৫ কোটিরও বেশি নারী এই ক্যান্সারের ঝুঁকিতে আছে। এই অবস্থায় ৯ থেকে ৪৫ বছর পর্যন্ত নারীর জরায়ুমুখের ক্যান্সার নির্মূলে ইনসেপ্টা বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো নিয়ে এসেছে নতুন ভ্যাকসিন ‘প্যাপিলোভ্যাক্স’।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এক অনাড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে ‘প্যাপিলোভ্যাক্স’ এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। একইসঙ্গে ‘জরায়ুমুখের ক্যান্সার মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য একটি প্রচেষ্টা’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারটি আয়োজন করে ওজিএসবি (অবসটেট্রিকাল অ্যান্ড গাইনোক্লোজিক্যাল সোসাইটি অফ বাংলাদেশ)। সার্বিক আয়োজনে সহযোগিতা করেছে ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেড। ওজিএসবি সভাপতি অধ্যাপক ড. ফেরদৌসী বেগমের সভাপতিত্বে সেমিনারে স্বাগত বক্তৃতা করেন অধ্যাপক ডা. গুলশান আরা।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. টিএ চৌধুরী বলেন, জরায়ুমুখ ক্যান্সারে মৃত্যুর প্রধান কারণ অসচেতনতা এবং অনেক বছরের অবহেলা। তাই বালিকা-কিশোরীদের এই ভ্যাকসিন দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধের প্রাথমিক পদক্ষেপই হলো ভ্যাকসিন।
জাতীয় অধ্যাপক শাহলা খাতুন বলেন, ভ্যাকসিনের মাধ্যমে খুব সহজেই এই ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকা যায়। এই ভ্যাকসিন রোগের আশঙ্কা অনেকটাই (৮৫ শতাংশ) কমিয়ে দেয়। এজন্য ডাব্লিওএইচও, সিডিসি, এসিআইপি ৯ বছরের পর থেকে প্রত্যেক মেয়ের জন্য এইচপিভি ভ্যাকসিন সুপারিশ করেছে এবং বিশেষভাবে বয়সের প্রথম দিকেই দিতে উৎসাহিত করেছে।
সেমিনারে দেশের এইচপিডি ভ্যাকসিনের (হিউম্যান পাপিললোমা ভাইরাস) প্রয়োজনীয়তা এবং ক্যান্সার নির্মূলে নিয়মিত স্ক্রিনিং ও এইচপিভি ভ্যাকসিন (হিউম্যান পাপিললোমাভাইরাস) প্যাপিলোভ্যাক্সের সূচনা হলে কীভাবে এটি জরায়ুমুখের ক্যান্সার মুক্ত দেশ অর্জনে অবদান রাখতে পারে- এ নিয়ে আলোচনা করেন অধ্যাপক ডা. সাবেরা খাতুন ও ডা. ফারহানা লাইজু। এ ছাড়া কয়েক বছর ধরে দেশে এইচপিডি ভ্যাকসিনের যে শুন্যতা তৈরি হয়েছে, তা প্যাপিলোভ্যার কীভাবে পূরণ করতে পারবে সে বিষয়ে আলোচনা করেন ডা. এসকে জিনাত আরা নাসরীন।
সেমিনারে জানানো হয়, বাংলাদেশে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে এখন প্যাপিলোভ্যাক্স নামে সবচেয়ে গুরুত্বপহৃর্ণ এইচপিডি ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে। এই ক্যান্সার নির্মূল করার জন্য, এইচপিভি ভ্যাকসিন প্রাথমিক পদক্ষেপ। গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে এই ভ্যাকসিনের এক বিশাল শুন্যতা ছিল। এই শুন্যতা পূরণে এগিয়ে এসেছে, দেশের প্রথম ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেড।
ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের নির্বাহী পরিচালক ডা. ই এইচ আরেফিন আহমেদ বলেন, প্রথমবারের মতো জরায়ুমুখ ক্যান্সারের ভ্যাকসিন, প্যাপিলোভ্যাক্স বাজারজাত শুরু করা হয়েছে। এই ভ্যাকসিনের মূল্য ২ হাজার ৫০০ টাকা। এটি দেশের জন্য একটি গর্বের, যা দেশ থেকে জরায়ুমুখের ক্যান্সার নির্মূল করার পথ প্রশস্ত করবে।
এ জাতীয় আরো খবর..