×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৭-২৯
  • ৬০ বার পঠিত
দেশে গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও উত্তোলনের জন্য ২০০৯ সালে গঠন করা হয় গ্যাস উন্নয়ন তহবিল (জিডিএফ)। এই তহবিলের অর্থ সংস্থানের জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতি ঘনমিটারে ৪৬ পয়সা করে কেটে রাখা হচ্ছে।

এদিকে গত ৬ জুলাই অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব কাজী লুতফুল হাসান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে দেখা যায়, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির লক্ষ্যে সাময়িকভাবে ঋণ হিসেবে দুই হাজার কোটি টাকা পেট্রোবাংলাকে দিয়েছে গ্যাস উন্নয়ন তহবিল।

বিষয়টি জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘স্পট মার্কেট (খোলাবাজার) থেকে উচ্চমূল্যে এলএনজি কিনতে প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়েছে।

সেই ঋণ পরিশোধ করতেই এই টাকা নেওয়া হয়। ’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে অস্থিতিশীল এলএনজির আন্তর্জাতিক বাজার। অন্যদিকে চাহিদার বিপরীতে বাজেট থেকে ভর্তুকি হিসেবে পেট্রোবাংলা অর্থ বরাদ্দ পাচ্ছে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। গ্যাসের সরবরাহ ঠিক রাখতে স্পট মার্কেট থেকে উচ্চমূল্যে এলএনজি আমদানি করে পেট্রোবাংলা। এ জন্য প্রতিনিয়ত অর্থ বিভাগের দ্বারস্থ হতে হয় সংস্থাটিকে। ফলে এর আগেও গত ৮ মে এলএনজি আমদানির জন্য পেট্রোবাংলাকে গ্যাস উন্নয়ন তহবিল থেকে তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের অনুমোদন দেয় অর্থ বিভাগ।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জিডিএফের মূল উদ্দেশ্যই ছিল জ্বালানির আমদানিনির্ভরতা কমানো। অনুসন্ধান ও উন্নয়নের মাধ্যমে স্থানীয় উত্তোলন বাড়াতে গ্রাহকের কাছ থেকে নিয়মিত অর্থও নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এ অর্থ যদি আবার জ্বালানি আমদানিতেই ব্যয় করা হয়ে থাকে, তাহলে এর উদ্দেশ্যই পুরোপুরি ব্যর্থ।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, ‘এলএনজি কিনতে গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের টাকা ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। এটি বেআইনি। এ অর্থ জনগণের। দেশের খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়নকাজে এ অর্থ ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের পদক্ষেপের কারণে দেশের জ্বালানি খাতে আজ নাজুক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ’

পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় কাতার ও ওমান থেকে এলএনজি আমদানি করছে। তার পরেও চাহিদার তুলনায় ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। এ ঘাটতি পূরণের জন্য স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কিনে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে হয় পেট্রোবাংলাকে। চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে এলএনজির বাজারমূল্যেও। চলতি মাসের শুরু থেকেই স্পট মার্কেটে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজি প্রায় ৪০ ডলারের মধ্যে রয়েছে। এলএনজির এ উচ্চমূল্যের কারণে স্পট মার্কেট থেকে আমদানি আপাতত বন্ধ রেখেছে সরকার।

এলএনজি আমদানি বন্ধের বিষয়ে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনা বন্ধ রাখায় বাংলাদেশের প্রতিদিন সাশ্রয় হচ্ছে ১০০ কোটি টাকা। বর্তমান মূল্যে স্পট মার্কেট থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানি করতে আমাদের ব্যয় হতো প্রায় এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এক কার্গোতে এলএনজি থাকে তিন হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। স্পট মার্কেট থেকে দৈনিক ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি জাতীয় গ্রিডে দেওয়া হতো। এই হিসাবে আমরা এক কার্গো এলএনজি মাত্র ১৫ দিন দিতে পারতাম। এই সাশ্রয়ের কারণে আমরা স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ করে রেখেছি। ’

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat