×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৭-১৬
  • ৬৬ বার পঠিত
দেশে উন্নয়নের সঙ্গে হিন্দু নির্যাতনের জোয়ার চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা। তারা বলেছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে হিন্দু জনগোষ্ঠী যত রক্ত দিয়েছে, অন্য কোনো সম্প্রদায় তা দেয়নি। অথচ দেশকে হিন্দুশূন্য করার অপচেষ্টা চলছে। নাসিরনগর থেকে নড়াইল, সর্বত্র হিন্দুসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর বর্বর নির্যাতনের ঘটনা ঘটে চলেছে।

আজ শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন তারা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন ও বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি ও পার্বত্য ভূমি কমিশন আইনের দ্রুত বাস্তবায়ন এবং সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠনের দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে শাহবাগ মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সমাবেশ থেকে আগামী ২২ অক্টোবর সকাল-সন্ধ্যা গণ-অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি ঊষাতন তালুকদার নড়াইলে সাম্প্রদায়িক হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের নিন্দা জানান। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করে তিনি বলেন, এ দেশে এখন শিক্ষকদের গলায় জুতার মালা পরানো হয়, তা-ও আবার প্রশাসনের উপস্থিতিতে। পদে পদে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করা হচ্ছে। সরকার ও প্রশাসনকে সতর্ক করা সত্ত্বেও একই জেলায় আবারও সাম্প্রদায়িক হামলা হয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও নির্যাতন প্রতিহত করতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য দেশপ্রেমিক ও গণতান্ত্রিক শক্তির প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সমাবেশে আরো বক্তৃতা করেন ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক ও নির্মল রোজারিও, প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, কাজল দেবনাথ, বাসুদেব ধর, প্রিয়রঞ্জন দত্ত ও রঞ্জন কর্মকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ, জয়ন্ত কুমার দেব, শ্যামল কুমার রায়, কিশোর রঞ্জন মণ্ডল ও রবীন্দ্র নাথ বসু, সাংগঠনিক সম্পাদক পদ্মাবতী দেবী, ঐক্য পরিষদ মহানগর দক্ষিণের সভাপতি লায়ন চিত্তরঞ্জন দাস, ঐক্য পরিষদ মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার রায় শিশির, পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক, খ্রিস্টান্ অ্যাসোসিয়েশনের হেমন্ত কোড়াইয়া, বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের সুনন্দপ্রিয় ভিক্ষু, হিন্দু মহাজোটের পলাশ কান্তি দে, হিন্দু লীগের শংকর সরকার, মাইনরিটি রাইট ফোরামের পবিত্র মিস্ত্রি, জাতীয় হিন্দু মহাজোটের ড. সোনালী দাশ, মহিলা ঐক্য পরিষদের সুপ্রিয় ভট্টাচার্য, শিক্ষক ঐক্য পরিষদের ড. অরুণ কুমার গোস্বামী, সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী ঐক্য পরিষদের অনুপ কুমার সাহা প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে দেশ এখন বহুদূরে। সাম্প্রদায়িক শক্তির আগ্রাসন দেশকে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছে। সরকার এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সরকার হয়তো ভাবছে তাদের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটের প্রয়োজন নেই। কিন্তু সোনার বাংলা গড়তে হলে দেশের সব মানুষের অধিকার, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।

চলমান সাম্প্রদায়িক নির্যাতন-নিপীড়ন এবং শিক্ষকদের ওপর হয়রানি বন্ধের জোর দাবি জানিয়ে নেতারা বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকারের ইতিমধ্যের সাড়ে তিন বছর অতিক্রান্ত হলেও সংখ্যালঘু স্বার্থবান্ধব নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সরকারের কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। এতে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী হতাশ হয়ে সরকার, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এ আন্দোলনে নেমেছে। দ্রুত দাবি বাস্তবায়ন না হলে আগামী নির্বাচনে বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে সরকারি দলকে হুঁশিয়ার করেন নেতারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat