আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ভুক্তভোগী ৮১ জন গ্রাহক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান দালাল প্লাস ডটকমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এস এম রাব্বি আল মামুন এবং চেয়ারম্যান সালেহ উদ্দিন মুরাদসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (৫ জুলাই) ঢাকা মহানগর হাকিম মো. মোশাররফ হোসেনের আদালতে ভুক্তভোগীদের পক্ষে গ্রাহক মো. আল আমিন তামিম বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. সাইফুল ইসলাম বিষয়টি জানিয়েছেন।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজিজুল হক ওরফে সুমন, পরিচালক আবু জুবায়ের হোসেন রাব্বি, অ্যাকাউন্ট অফিসার হাসনাইন খুরশিদ অভি, প্রধান আইটি কর্মকর্তা নাজমুস শাহাদাত ও প্রধান অপারেশন কর্মকর্তা এস এম বোরহান উদ্দিন রনি।
এদিন আদালত এ মামলার বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর শুনানি শেষে আদালত মামলার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ই-কর্মাসের আলোচিত একটি কম্পানি দালাল প্লাস ডট কম। যেখানে দৈনন্দিন জীবনের প্রত্যেকটি পণ্য সরবরাহ করা হতো। মানুষ ঘরে বসে সব পণ্য অর্ডার করে ক্রয়-বিক্রয় করত। এ মামলার ৮১ জন গ্রাহককে ২০২১ সালের ১ এপ্রিল থেকে একই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোবাইল, ল্যাপটপ, মোটরসাইকেল, ডিএসএলআর ক্যামেরাসহ সব পণ্য আকর্ষণীয় অফারে আকৃষ্ট করে দালাল প্লাস ডট কম। এতে গ্রাহকরা অফার গ্রহণ করে নির্দিষ্ট সময়ে দুই কোটি ৫০ লাখ ৩৮ হাজার ৯৯৮ টাকা পেমেন্ট করেন।
অভিযোগ থেকে আরো জানা যায়, পণ্য ডেলিভারির বিষয়ে গ্রাহকদেরকে নির্দিষ্ট সময়ে মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। অনেক গ্রাহককে ওয়্যারহাউসে গিয়ে পণ্য গ্রহণ করার জন্য এসএমএস দেয়। সেখানে গেলে তাদের কাছ থেকে পণ্য না দিয়েই একটি ভিডিও সাক্ষাৎকার নেয় যে তারা পণ্য পেয়েছে। কিন্তু প্রকৃত ঘটনা হলো তারা পণ্য না দিয়েই প্রতারণর ফাঁদ পেতে গ্রাহককে ব্ল্যাকমেইল করে গ্রাহকের কাছ থেকে অসাধুভাবে অর্থ আত্মসাৎ করেন। সাক্ষাৎকার শেষ হওয়ার পর গ্রাহকদের হাতে পণ্য না দিয়ে টোকেন ধরিয়ে দিয়ে বলে, অফিস থেকে বর্তমান বাজার মূল্যে চেক নিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।
মামলার অভিযোগে আরো বলা হয়, গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর গ্রাহকরা সবাই একত্রিত হয়ে দালাল প্লাসের অফিসে গেলে কয়েকজনকে চেক প্রদান করেন। কিন্তু অধিকাংশ গ্রাহক তাদের পণ্য না পেয়ে আন্দোলন করেন। এ সময় পণ্য কখন ফেরত দেবে, তা জানতে চাইলে স্থানীয় গুণ্ডাপাণ্ডা ও ভাড়া করা ধানমণ্ডি ও হাজারীবাগ থানার স্থানীয় লোকজন নিয়ে গ্রাহকদের পিটিয়ে হুমকি-ধমকি দিয়ে অফিস থেকে তাড়িয়ে দেয়। পরবর্তী সময়ে গ্রাহকরা প্রতারণার শিকার হয়ে থানায় মামলা করতে যান। কিন্তু থানা মামলা গ্রহণ না করে আদালতে মামলা করার জন্য পরামর্শ দেয়।
এ জাতীয় আরো খবর..