অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানকে পলাতক অখ্যা দিয়ে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে এ মামলায় কোনো আইনজীবী লড়তে পারবেন না। মামলাটি পরিচালনার জন্য আইনজীবী নিয়োগ দিতে হলে তারেক-জুবাইদাকে আদালতে আত্মসমর্পন করতে হবে।
আজ রবিবার (২৬ জুন) মামলাটির বৈধতা নিয়ে তারেক-জুবাইদার তিনটি রিটে দেওয়া রুল খারিজ করে এ রায় দেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে তারেক-জুবাইদার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী কায়সার কামাল। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিকও শুনানি করেন। আর দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান ও শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগে কাফরুল থানায় এ মামলা করে দুদক।
মামলায় তারেক রহমানকে সহায়তা ও তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয় জুবাইদা ও তার মায়ের বিরুদ্ধে। মামলা হওয়ার পর ওই বছরই তারেক রহমান ও জুবাইদা মামলার বাদির কর্তৃত্ব চ্যালেঞ্জ করে তিনটি রিট আবেদন করেন। প্রাথমিক শুনানির পর ২০০৭ সালের ১ অক্টোবর আদালত মামলার কার্যাক্রম স্থগিত করার পাশাপাশি রুল দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা, ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি আইনের ১০৯ এর সাথে জরুরি ক্ষমতা বিধিমালা ২০০৭ এর ১৫(ঘ) (৫) বিধি মিলিয়ে কাফরুল থানায় করা মামলাটি কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। এ রুলটি বিচারাধীন রেখে ২০০৮ সালে মামলা বাতিল চেয়ে একটি আবেদন করেন জুবাইদা রহমান। সে আবেদনের শুনানির পর মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রুল খারিজ করে দেন আদালত। সেই সঙ্গে জুবাইদা রহমানকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) করেন জুবাইদা রহমান। ওই আবেদনের শুনানি শেষে গত ১৩ এপ্রিল তা খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত। এ আদেশের পর মামলার তদন্ত বা বিচারকাজ চলার ক্ষেত্রে বাঁধা কাটলেও ওই তিনটি রিটে এ মামলায় হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ এখনও বহাল আছে।
গত ২৯ মে এই তিনটি রিট হাইকোর্টের কার্যতালিকায় ওঠে। সেদিন তারেক-জুবাইদার রিটের পক্ষে শুনানির প্রস্তুতির জন্য সময় চান আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। সেদিন পলাতক তারেক রহমানের পক্ষে আইনজীবী সময়ের আরজি জানাতে পারেন কি না, সে প্রশ্ন রাখেন দুদকের আইনজীবী। এরপর ৫ জুন পরবর্তী শুনানির দিন এ মামলায় তারেক রহমানের পাশাপাশি জুবাইদা রহমানকেও পলাতক দাবি করেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
সেদিন পলাতক তারেক-জুবাইদার পক্ষে আইনজীবী লড়তে পারেন কিনা, সে প্রশ্ন তোলেন দুদক আইনজীবী। এরপর এ নিয়ে ১২ জুন শুনানি হয়। আজ (রবিবার) তৃতীয় দিনের শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য রাখেন।
এ জাতীয় আরো খবর..