স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২৫ জুন) বেলা ১১টা ৪৭ মিনিটে পদ্মা সেতুর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া পয়েন্টে টোল দেন তিনি।
এর পরেই সেতুর মাওয়া প্রান্তে সুইচ টিপে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন তিনি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিলেন মেয়ে সায়েমা ওয়াজেদ পুতুল। এ সময় সেখানে মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
মোনাজাতের আগে প্রধানমন্ত্রীর পাশেই ছিলেন সাবেক মন্ত্রী আবুল হোসেন। এ সময় কুশল বিনিময় করে প্রধানমন্ত্রীর পা ছুঁয়ে সালাম করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীও তার মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদ করেন।
আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। তখন তিনি যোগাযোগমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য হন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব ড. শামসুল আরেফিন ও দুদকের পরিচালক (মানি লন্ডারিং) গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরীর স্বাক্ষর করা ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের ১৪/১১/২০১৮ সালের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্য ও রেকর্ডপত্রের আলোকে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বিধায় দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক পরিসমাপ্তির মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, পদ্মাসেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্র নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ২০১১ সালে বিশ্বব্যাংক এ অভিযোগ করেছিল। অভিযোগে বলা হয়েছিল, তখনকার যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, সেতু বিভাগের সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা এবং পদ্মা সেতু প্রকল্প পরিচালক রফিকুল ইসলাম পরামর্শকের কাজ পাইয়ে দেয়ার বিনিময়ে এসএনসি-লাভালিনের কাছে ১০ শতাংশ অর্থ কমিশন চেয়েছিলেন। প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ ছিল চার কোটি ৭০ লাখ ডলার।
শনিবার (২৫ জুন) সকাল ১০টা ৫ মিনিটে পদ্মা সেতুর থিম সং পরিবেশনের মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এর আগে সেতু উদ্বোধন করতে হেলিকপ্টারে পদ্মার মাওয়া প্রান্তে পৌঁছান শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীরা।
সকাল ১০টায় সভামঞ্চে পৌঁছান তিনি। এর আগে সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমানবন্দর থেকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি
দিনের কর্মসূচি অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী সকাল ১০টায় মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। সেখানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
বেলা ১১টায় পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষ্যে স্মারক ডাকটিকিট, স্যুভেনির শিট, উদ্বোধন খাম ও সিলমোহর প্রকাশ করেন। এর পর টোলপ্লাজার উদ্দেশে যাত্রা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে টোল দিয়ে মাওয়া প্রান্তে উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচন করে মোনাজাতে অংশ নেন।
এরপর সড়কপথে জাজিরা প্রান্তের উদ্দেশে যাত্রা করবেন। বহুল কাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু পার হয়ে তিনি পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-২ উন্মোচন করে আবারও মোনাজাতে অংশ নেবেন।
সেখান থেকে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ির উদ্দেশে সড়কপথে যাত্রা করবেন। দুপুর ১২টায় কাঁঠালবাড়িতে আওয়ামী লীগের জনসভায় অংশ নেবেন।
দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে জনসভা শেষ করে শরীয়তপুরের জাজিরার সার্ভিস এরিয়া-২-এর উদ্দেশে সড়কপথে যাত্রা করবেন। সেখানে কিছু সময় অবস্থান করবেন। পরে জাজিরা প্রান্ত থেকে হেলিকপ্টারে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করবেন।
এ জাতীয় আরো খবর..