×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৭-২৬
  • ৪৯ বার পঠিত
আপনাদের সব সময় আহ্বান জানাব, নির্বাচনে আসুন। আপনারা (সব রাজনৈতিক দল) না এলে নির্বাচন করব না এ কথা নির্বাচন কমিশন (ইসি) কখনোই বলেনি। দেশের বাইরে থেকে কোনো হুমকি-ধামকি আসে কি না, সেটা আপনারা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করবেন। নির্বাচন কমিশনের এ ক্ষেত্রে কোনো কিছুই করার নেই।

নির্বাচনের কাজটা খুব সহজ নয়, কঠিন। কঠিন হলেও চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে। কমান্ড আমার হাতে, আর শক্তিটা পুলিশের, বিজিবির, সেনাবাহিনীর হাতে। আমরা কমান্ড করব শক্তিগুলো যেন এক্সপান্ড করে। নির্বাচন কমিশনের সাধ্য অসীম নয়।
গতকাল সোমবার আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের সংলাপে এসব কথা বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। অনেকে ইসিকে শক্তিশালী করতে হলে চার-পাঁচটা মন্ত্রণালয় ইসির হাতে ন্যস্ত করার যে কথা বলেন সেটা আদৌ বাস্তবসম্মত নয় বলেন তিনি।

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান বলেন, নির্বাচনে ইভিএম মেশিন নিয়ে সমস্যা নেই। সমস্যা হচ্ছে আস্থাহীনতা। আমরা আস্থা না থাকার মতো কিছুই করিনি। আমাদের ভূমিকা রেফারির মতো। খেলোয়াড় আপনারা। এখন খেলোয়াড়দের মধ্যে সমঝোতা না হলে খেলায় লাল কার্ড, হলুদ কার্ডের ব্যবহার বেড়ে যায়।

গতকালের সংলাপে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ ও এলডিপির জন্য সময় নির্ধারিত ছিল। কিন্তু বাসদ ও এলডিপি নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে দিয়েছে তারা সংলাপে যোগ দিচ্ছে না।

সংলাপে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে স্বাধীনতাবিরোধী ও ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক দলগুলোকে নিবন্ধন না দেওয়ার জন্য প্রস্তাব রাখে। এ ছাড়া বর্তমানে সংবিধানের বিধান অনুযায়ী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো বিকল্প নেই বলেও মত দেয় দলটি। এ ছাড়া  ধর্মীয় উপাসনালয়, মন্দির, মসজিদ, গির্জা, মঠ, ওয়াজ  ও ধর্মসভায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচার করা যাবে না, ফৌজদারি দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া যাবে না, নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রদানের কোনো প্রয়াজন নেই এবং সংস্কার সাপেক্ষে ইভিএম ব্যবহার করতে হবে বলেও ওয়ার্কার্স পার্টি প্রস্তাব রাখে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ জানায়, তারা সংসদ নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার চায় না। ‘না’ ভোটের ব্যবস্থাও ফিরিয়ে আনতে বলে দলটি। এ ছাড়া দলটির প্রস্তাব, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিগত ১১টি সংসদে একাধিকবার প্রতিনিধিত্বকারী সক্রিয় এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর মনোনীত প্রতিনিধি নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন এবং নির্বাচনের তিন মাস আগে জাতীয় সংসদ ভেঙে দিতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব প্রস্তাব সরকারের কাছে দিতে হবে।

ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে সংলাপে সিইসি বলেন, ‘আপনাদের সব সময় আহ্বান জানাব, নির্বাচনে আসুন। আপনারা না এলে নির্বাচন করব না এ কথা নির্বাচন কমিশন কখনোই বলেনি। দেশের বাইরে থেকে কোনো হুমকি-ধমকি এলে আপনারা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করবেন। অন্য কোনো দেশ আমাদের দেশকে বা আমাদের কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন দেবে বা ধমক দেবে এটা আমার কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয় না। হলেও এটা মাঠে রাজনৈতিকভাবে আপনাদের ফেস করতে হবে। ’

সিইসি বলেন, ‘অনেকে বলেন ইসিকে শক্তিশালী করতে হলে চার-পাঁচটা মন্ত্রণালয় ইসির হাতে ন্যস্ত করতে হবে। এটা বাস্তবায়ন করলেও আমরা নিতে পারব তা মনে হয় না। সংবিধান সংশোধন করলে হয়তো নিতে পারব। আদারওয়াইজ সম্ভব হবে না। কারণ কেবিনেটের একটা বিষয় আছে, কাদের নিয়োগ হবে, কিভাবে নিয়োগ হবে, সেটা আমাদের এখতিয়ারে নেই। নির্বাচন কমিশন মন্ত্রণালয় নয়। হোম মিনিস্টার বা আরেকটা মিনিস্টার হয়ে যাব, সেটা আরেকটা সংকট বয়ে আনবে। ’

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করব আইনে  আমাদের যে পর্যাপ্ত ক্ষমতা দেওয়া আছে তা প্রয়োগ করার। হয়তো এই ক্ষমতাগুলো অতীতে সঠিকভাবে ব্যবহার হয়নি। ’

বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সঙ্গে সংলাপে সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশনের সাধ্য অসীম নয়। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে অংশীজনের সহযোগিতা লাগবে। রাজনৈতিক সহমত, রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান করা যায়। আপনারা ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসটা নেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের যতটুকু ক্ষমতা আইনে দেওয়া হয়েছে, আমরা তা প্রয়োগের চেষ্টা করব। অনেকগুলো প্রস্তাব আমরা পেয়েছি। সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাবও পেয়েছি। আমাদের ম্যান্ডেন্ট কিন্তু লিমিটেড। সংবিধান সংশোধন হলে সংশোধিত সংবিধান অনুসারেই নির্বাচন হবে। কোনো অসুবিধা নেই। আমাদের নিয়ে বিচলিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। আমরা অবশ্যই সংবিধান মান্য করব। ’

আজকের সংলাপ : নির্বাচন কমিশনের আজকের সংলাপে আমন্ত্রিত দলগুলো হচ্ছে—জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি। এই চারটি দলের মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জানিয়ে দিয়েছে তারা সংলাপে যোগ দেবে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat