সেন্টমার্টিনসে পর্যটক গমন সীমিত করলে পর্যটকরা আরো বিদেশমুখী হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশের পর্যটন খাতের শীর্ষ সংগঠন ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)-এর নেতারা। তারা বলেছেন, দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপে পর্যটক সীমিত করা কোনো প্রতিকার নয়, বরং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিংয়ের মাধ্যমে এই দ্বীপকে আরো পর্যটকবান্ধব করে দেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন করা সম্ভব। অন্যথায় এই দ্বীপের স্থানীয় অধিবাসীদের কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ব্যাহত হবে।
গতকাল শনিবার ঢাকা ক্লাবে ‘পর্যটন বাঁচান, সেন্ট মার্টিন বাঁচান’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন টোয়াবের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিধি ছিলেন টোয়াবের সদ্য বিদায়ী সভাপতি ও বাংলাদেশে ট্যুরিজম বোর্ডের গভর্ণিং বডির সদস্য মো. রাফেউজ্জামান। টোয়াব সভাপতি শিবলুল আজম কোরেশীর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্বেলনে বক্তব্য দেন হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব সেন্টমার্টিনসের সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর পাটোয়ারী, সী ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (স্কোয়াব) সভাপতি তোফায়েল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর, টোয়াবের সহসভাপতি মো. সাহেদ উল্লাহ্ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, কক্সবাজার সৈকতে ঘুরতে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটকগণের প্রধান আকর্ষণ প্রবাল বেষ্টিত সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও এর আশেপাশের এলাকা। প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক দেশি-বিদেশি পর্যটক এই স্থানগুলোতে অবস্থান করে এর জীব-বৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করে। পাশাপাশি মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন অত্র দ্বীপাঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের একমাত্র উপার্জনের উৎস এই পর্যটন। একে ঘিরে তৈরি হয়েছে পর্যটকবাহী নৌযান, হোটেল-মোটেল, সঙ্গে জনপ্রিয়তা পাচ্ছিল তরুণদের ট্যুর গাইড সেবাও। সব মিলিয়ে ক্রমান্বয়ে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠা এই দ্বীপটিতে অতিরিক্ত পর্যটক গমন পরিবেশের জন্য হুমকি বিবেচনা করে সেখানে পর্যটন সীমিত করণের সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। এতে সেন্টমার্টিনকে ঘিরে ট্যুর সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে।
সংবাদ সম্মেলনে মো. রাফেউজ্জামান বলেন, ‘দেশে সমুদ্র ভ্রমণের সুযোগ সংকুচিত হলে পর্যটকরা বিদেশমুখী হবে এবং আমাদের কষ্টার্জিত বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে চলে যাবে। ফলে এই সিদ্ধান্ত চরম আত্মঘাতী। পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের স্বার্থে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ সীমিত না করে বরং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে জীব-বৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশ অক্ষুণ্ন রেখে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণ নিশ্চিত করতে হবে। ’
শিবলুল আজম কোরেশী বলেন, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় এই স্থানে যাতায়াত সীমিত করণের উদ্যোগটি এই করোনা মহামারির পর পর্যটন খাতের ওপর আরেক বড় বিপর্যয়। তাই সেন্টমার্টিন তথা দেশের পর্যটনকে বাঁচাতে সরকারকে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার দাবি জানান তিনি।
এ জাতীয় আরো খবর..