×
  • প্রকাশিত : ২০২৪-০৮-১০
  • ৬৬ বার পঠিত
বিরোধী দলের ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের কাছ থেকে নিজেদের রক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে সদ্য ক্ষমতা হারানো দল আওয়ামী লীগ। পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে নিজেদের সংগঠিত করারও চেষ্টা করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয়ভাবে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য কেউ সামনে না আসা পর্যন্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা ও নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষার কাজ করবেন তাঁরা। আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র মতে, আগামী দিনে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বে পরিবর্তন আসবে। দলের হাল ধরতে পারেন শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে ওবায়দুল কাদেরকে সরিয়ে দেওয়া হবে—এটা অনেকটাই নিশ্চিত। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশে থেকে আওয়ামী লীগকে কে নেতৃত্ব দেবেন, সে বিষয়ে কোনো ধারণা পাননি দলের নেতাকর্মীরা।

একাধিক সূত্র জানায়, দু-চারজন বাদে দলের সব শীর্ষস্থানীয় নেতা এখনো দেশে আছেন। তাঁরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। দলের নেতাকর্মীদের আশঙ্কা, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাজ গুছিয়ে নেওয়ার পরপরই দলের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক নেতা গ্রেপ্তার হতে পারেন। সরকারের গতিবিধি বুঝে মাঠে নামার কর্মসূচি নেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা জানান, দলের সভাপতি শেখ হাসিনা এরই মধ্যে দেশে থাকা নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। তিনি আপাতত স্থানীয়ভাবে নেতাকর্মীদের সংগঠিত হওয়া ও প্রতিবাদ জানানোর নির্দেশনা দিয়েছেন।

গত তিন দিনে গোপালগঞ্জ জেলা সদরসহ একাধিক উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ময়মনসিংহেও প্রতিবাদ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানান গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জি এম সাহাবুদ্দিন আজম।

ওই দিন সাহাবুদ্দিন আজম ফেসবুক লাইভে বলেন, ‘আমাদের প্রিয় নেত্রী বলেছেন, আপনারা দিশাহারা হবেন না। আপনারা সংগঠিত হোন, প্রতিবাদ, প্রতিরোধ করুন। অবিলম্বে তিনি আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন। জাতির জনকের কন্যা সব হারিয়ে বাংলাদেশকে আপনজন হিসেবে জানেন। তাঁর বাবার স্বাধীন করা বাংলাদেশে আবারও তিনি আসছেন।’

গত দুই দিনে একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের ঘোষণা দিলে দেশে ফিরবেন শেখ হাসিনা। জয় আরো জানান, আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে আওয়ামী লীগ। দলের নেতাকর্মীদের বাঁচাতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসার সম্ভাবনার কথাও জানান জয়।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র মতে, দেশে থাকা গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বেশির ভাগই সজীব ওয়াজেদ জয় কিংবা শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় নেতারা সবাই তাঁদের মোবাইল নম্বর বন্ধ করে রেখেছেন। যোগাযোগ না হওয়ার ফলে কেন্দ্রীয়ভাবে দলের নেতাকর্মীদের সরাসরি কোনো নির্দেশনা দেওয়ার অবস্থা নেই।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে জানমালের নিরাপত্তা নেই। বর্তমান পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর চলমান হামলা বন্ধের কোনো ব্যবস্থা কিংবা নির্দেশনাও নেই। ফলে কোনো কর্মসূচি দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের জীবনের ঝুঁকি আরো বাড়াতে চাই না।’

একাধিক সূত্র জানায়, দলীয়ভাবে সংগঠিত হতে না পারলেও আগামী ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে ধানমণ্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বরস্থ বঙ্গবন্ধু ভবনে শ্রদ্ধা নিবেদনের কর্মসূচি পালন করবে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সাংস্কৃতিক অঙ্গন, সাংবাদিক, চিকিৎসকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ, বঙ্গবন্ধুর প্রতি সহানুভূতিশীল এমন সাধারণ নাগরিকদের এই কর্মসূচিতে যোগদানের আহ্বান জানানো হবে। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে জমায়েত বড় করতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনেকেই কাজ করছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat