যুক্তরাষ্ট্রের লিহাই ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা মেয়নেজের মতো অতি সাধারণ উপাদান ব্যবহার করে পারমাণবিক ফিউশন গবেষণায় বিপ্লব ঘটানোর সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছেন। মাখনের মতো বৈশিষ্ট্য এবং বহুমুখী প্রয়োগের জন্য পরিচিত মেয়নেজ। একদল বিজ্ঞানী ফিউশন চুল্লিতে প্লাজমার জটিল আচরণ বোঝার এক ভিন্নধর্মী মডেল হিসেবে ব্যবহার করছেন একে।
দুটি ছোট নিউক্লিয়াস যুক্ত হয়ে যখন একটি বড় নিউক্লিয়াস তৈরি হয় তাকে নিউক্লিয়ার ফিউশন বলে।
এ প্রক্রিয়ায় বিপুল পরিমাণ শক্তি তৈরি হয়। লিহাই ইউনিভার্সিটির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড মেকানিক্স বিভাগের পল বি রেইনহোল্ড অধ্যাপক অরিন্দম ব্যানার্জি বলেছেন, ‘আমরা এখনো একই সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। এটি হচ্ছে আইসিএফ নামে পরিচিত বিশেষ ধরনের ফিউশনে ব্যবহৃত ফিউশন ক্যাপসুলের কাঠামোগত অখণ্ডতা রক্ষা। আর হেলম্যানেস রিয়াল ব্র্যান্ডের মেয়নেজ আমাদের এ সমস্যা সমাধানের সন্ধানে সাহায্য করছে।
সহজ ভাষায় বললে, সূর্যের ভেতরে যেভাবে শক্তি উৎপাদিত হয় তা-ই ফিউশন বিক্রিয়া। বিজ্ঞানীরা মনে করেন সূর্যের এই প্রক্রিয়াটি পৃথিবীতে ব্যবহার করা গেলে এটি প্রায় সীমাহীন এবং পরিবেশ অনুকূল জ্বালানি সরবরাহ করতে পারে। তবে সূর্যের চরম অবস্থার অনুরূপ প্রক্রিয়া পৃথিবীতে তৈরি করা একটি বিশাল কঠিন চ্যালেঞ্জ। বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে সমস্যাটি খতিয়ে দেখছেন।
আইসিএফ বা ইনার্শিয়াল কনফাইনমেন্ট ফিউশন হচ্ছে এমন ফিউশন, যাতে অল্প পরিমাণ জ্বালানি খুব দ্রুত ঘনীভূত ও উত্তপ্ত করা হয়।অরিন্দম ব্যানার্জিদের গবেষণাদলটি আবিষ্কার করেছে, মেয়নেজ সাধারণত একটি কঠিন পদার্থ হিসেবে বিবেচিত হলেও বিশেষ চাপের পরিস্থিতিতে তরলের মতো বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে। মেয়নেজের এই আচরণটির সঙ্গে প্লাজমার বৈশিষ্ট্যের ঘনিষ্ঠ মিল রয়েছে। প্লাজমা হচ্ছে পদার্থের অতি উত্তপ্ত অবস্থা, যা পারমাণবিক ফিউশনের জন্য অতি প্রয়োজনীয়।
মেয়নেজের প্রবাহের ধরন এবং উপাদানটির ভেতরের অস্থিতিশীলতাগুলো খতিয়ে দেখার মাধ্যমে গবেষকরা ফিউশন চুল্লিতে প্লাজমাকে নিয়ন্ত্রণের চ্যালেঞ্জগুলো বুঝতে চাইছেন।
চূড়ান্ত পর্যায়ে এ থেকে পাওয়া জ্ঞান পরিবেশবান্ধব ও টেকসই বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য পারমাণবিক ফিউশনের বিপুল শক্তির সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোতে সাফল্য এনে দিতে পারে।
সূত্র : এনডিটিভি
এ জাতীয় আরো খবর..