×
  • প্রকাশিত : ২০২৪-০৮-০৭
  • ৭১ বার পঠিত
গাজীপুরে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় গুলিতে ৬ বন্দি নিহত হয়েছেন। এ সময় কারাগার থেকে পালিয়ে গেছে ২০৯ বন্দি। মঙ্গলবার বিকালে কাশিমপুর হাই-সিকিউরিটি কারাগার বন্দিদের বিদ্রোহের সময় ওই গুলির ঘটনা ঘটেছিল। সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহতরা হলেন, নরসিংদীর রায়পুরা থানার নলভাটা গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে মো. জিন্নাহ (২৯), সিলেটর মৌলভীবাজারে কমলগঞ্জ থানার রামেশ্বরপুর এলাকার মকবুল মিয়ার ছেলে ইমতিয়াজ পাভেল (২৭), নওগাঁর আব্দুস সালাম সরদারের ছেলে আসলাম হোসেন (২৭), জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানার সোনারপাড়া গ্রামের রইস উদ্দিনের আফজাল হোসেন (৬৩), টঙ্গাইলের নাগরপুর থানার কানুটিয়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক শেখের ছেলে স্বপন শেখ ওরফে কালু (৪৫) ও মৃত রাম হরিজনের ছেলে রাধে শ্যাম হরিজজন জমাদ্দার (৬৭)। তার বিস্তারিত ঠিকানা পাওয়া যায়নি।

কারাগারের একটি সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকালে নানা অনিয়ম ও বন্দিদের মারধরের অভিযোগ তুলে এবং মুক্তির দাবিতে গত মঙ্গলবার সকালে বন্দিরা বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে কারারক্ষীদের জিম্মি করে বন্দিরা।

কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। বন্দিরা কারগার থেকে বের হয়ে যেতে চাইলে গুলি ছুড়ে কারারক্ষীরা। বুধবার ভোর পৌনে ৪টার দিকে ওই কারাগার থেকে ৬টি লাশ গাজীপুর মর্গে আনা হয়। 
কারাগারে বন্দি নিহতের খবর পেয়ে নিহতের স্বজনরা হাসপাতালে ভিড় করেন।

এসময় স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। নিহত বন্দি ইমতিয়াজের ভাই সোহেল আহমেদ বলেন, ‘আমার ভাই আড়াই বছর ধরে কারাগারে বন্দি ছিল। সকালে খবর পাই কারাগারে সে গুলিতে মারা গেছে।’
জেল সুপার বালা বলেন, ‘দেওয়াল টপকে পালিয়ে যাওয়ার সময় গুলিতে ৬ বন্দি নিহত হয়েছে। ২০৯ বন্দি পালিয়ে গেছে।

তাদের লাশ রাত ৩টার দিকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মোস্তাক আহমেদ জানান, রাত ৩টা ৪০ মিনিটে কারাগার থেকে ছয়টি লাশ হাসপাতালে আনা হয়েছে। পুলিশ না থাকায় সুরতহাল না করায় লাশগুলো দীর্ঘ সময় পড়ে ছিল। দুপুরে গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার কার্যালয় থেকে একজন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার এসে লাশের সুরতহাল করেন। কিন্তু পরে আবেদনের প্রেক্ষিতে বিনা ময়নাতদন্তে সন্ধ্যার দিকে ৫ জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাধে শ্যাম হরিজজন জমাদ্দার স্বজনদের কেউ না আসায় তার লাশ মর্গে রয়েছে। 

এ ব্যাপারে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। কারাগারে কি ঘটেছিল সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।  

একাধিক সূত্রে জানা গেছে,  ঘটনার সময় কারগারের বাইরে থাকা বন্দিদের স্বজনরা গুলির শব্দে আতংকিত হয়ে পড়ে। পরে তারা স্বজনরাও বিক্ষোভ করে। আলোচিত শিশু ধর্মীয় বক্তা রফিকুল ইসলাম মাদানীও বিক্ষোভে অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সূত্রে জেনেছি কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার কারাবন্দি ওলামা-আলেমদের ঠিকমতো খাবার দিচ্ছে না। তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং কারারক্ষীদের দিয়ে তাদের লাঠিচার্জ করেন। সোমবার রাত থেকে বন্দিদের কিছুই খেতে দেওয়া হয়নি। মঙ্গলবার বন্দিরা বিক্ষোভ করলে কারারক্ষীরা সাইরেন বাজিয়ে অস্ত্র নিয়ে বন্দিদের উপর হামলে পড়ে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat