×
  • প্রকাশিত : ২০২৪-০৮-০৭
  • ৬১ বার পঠিত
‘ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এত দিন ব্যাংক খাতের দুর্নীতির ব্যাপারে কথা বলতে পারেননি বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। অনেক সীমাবদ্ধতা ছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এলে দেশের ঋণবিষয়ক সব তথ্য আমাদের কাছেই চাইবে। দেশ থেকে কারা কী পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন এসব তথ্য আমাদেরই সরবরাহ করতে হবে।

তাই এরই মধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি।’

গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী সাইদুর রহমান অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইআরএফ ও ব্যাংক খাতের সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময়সভায় এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, ব্যাংক খাত পুনর্গঠনের কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।

সব ধরনের তথ্য-উপাত্ত সাংবাদিকদের সঙ্গে আগের মতোই আদান-প্রদান হবে। তাঁদের প্রবেশে বাধা থাকবে না। ছাত্র-জনতার এই বিজয়ে অন্যদের মতো তাঁরাও আনন্দিত। তাঁরা শহীদদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেন; অসুস্থদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।

একই সঙ্গে সাংবাদিক প্রবেশে দীর্ঘদিন যে নিষেধাজ্ঞা ছিল, তা তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সরকার পতনের পর অফিস খোলার প্রথম দিন কার্যালয়ে আসেননি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে কাজী সাইদুর রহমান বলেন, গভর্নর মানসিক চাপের কারণে আজ অফিস করছেন না; তিনি যার যার কাজ চালিয়ে নেওয়ার জন্য বলেছেন।

আলোচনাসভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার, মো. হাবিবুর রহমান ও মো. খুরশীদ আলম, নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হকসহ অন্য কর্মকর্তারা। ইআরএফের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমসহ অন্য সদস্য।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীনভাবে কাজ করার দাবি নিয়ে গভর্নরের কাছে লিখিত দাবি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা। গতকাল ডেপুটি গভর্নর কাজী সাইদুর রহমানের মাধ্যমে এই দাবি তুলে ধরেন তাঁরা।

দাবিগুলো হচ্ছে অনিয়ম ও পাচারে জড়িত ব্যাংকার ও ব্যবসায়ীদের তালিকা করতে হবে। ব্যাংক কম্পানি আইনের সংশোধন, পরিবারভিত্তিক ব্যাংক গঠনের সুযোগ রহিতকরণ। ব্যাংকগুলোর পরিচালনা বোর্ডের সংশোধন, রাজনৈতিক নেতাদের অব্যাহতি। বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিতকরণ। বিভিন্ন ব্যাংকের দুর্নীতিবাজ পরিচালকদের শেয়ার বা মালিকানা জব্দকরণ। এ ছাড়া কোন কোন গ্রুপ অর্থপাচার, অর্থ লোপাটের মধ্যে জড়িত, সব ডিবিআই থেকে তথ্য নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেওয়া সার্কুলারগুলো বিশ্লেষণ করে তা বাতিল করতে হবে।

শুধু বাংলাদেশ ব্যাংক নয়, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশে অস্থিরতা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার ঢাকার দিলকুশায় ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু কর্নার ভাঙচুর করেছেন কিছু বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা। পাশাপাশি মানবসম্পদ বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তাকে মারধরও করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ ঘটনার পর ব্যাংকের সিবিএ নেতা আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের পর যত নির্বাহী এসেছেন, তাঁরা আর ব্যাংকে ঢুকতে পারবেন না। বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, ‘আপনারা শান্ত হোন। যে ইসলামী ব্যাংক দখল হয়েছে, তা আবার ফিরে আসবে। এমডি (ব্যবস্থাপনা পরিচালক) মহোদয় আমাকে প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছেন।’

তিনি আরো বলেন, ২০১৭ সালের পর থেকে পরীক্ষা ছাড়া অনিয়মের মাধ্যমে যেসব নিয়োগ হয়েছে, সেসব নিয়োগ বাতিল করা হবে। একই সঙ্গে ওই সময়ের পরে যাঁদের চাকরি অবৈধভাবে বাতিল করা হয়েছে, তাঁদের চাকরি পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এ ছাড়া গত সাত বছরে যাঁরা পদোন্নতিবঞ্চিত হয়েছেন, তাঁদের যথাযথভাবে পদোন্নতি দেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat