পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে দুই দেশের যৌথ নদীর কীভাবে একটি অভিন্ন ব্যবস্থাপনা করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আজ রবিবার (২৩ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের আগেই শোনা গিয়েছিল, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে চীন-ভারতের এক ধরনের রেষারেষি আছে। এবারের সফরে এসব বিষয়ে কোনো কথা উঠেছিল কিনা; প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ভারত সফরটি চমৎকার, ফলপ্রসূ ও আন্তরিকতাপূর্ণ ছিল।
ভারত সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বিস্তারিত সংবাদ সম্মেলন করবেন। যে কারণে আমি বেশি কিছু বলতে চাই না।’
‘আমি এতটুকু বলতে চাই, সেখানে তিস্তা কিংবা যৌথ নদী ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে ৫৪টি যৌথ নদী রয়েছে।
সেই নদীর যদি একটি অভিন্ন ব্যবস্থাপনা করতে পারি, তাহলে তা দুটি দেশকেই উপকৃত করবে। সে নিয়ে আমরা আলোচনা উপস্থাপন করেছি। তিস্তা নিয়ে চীনের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি,’ যোগ করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘তবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনে আমরা ভারত সরকারের সহায়তা চেয়েছি।
তখন চীনা প্রসঙ্গ এসেছে। সেখানে জাতিগত যে সংঘাত চলছে, তাতে চীনের ভূমিকা নিয়ে কথা হয়েছে। অন্য কোনো কিছুতে চীনা প্রসঙ্গ আসেনি।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ই-ভিসা চালু করার বিষয়টি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন। বিশেষ করে মেডিক্যাল ভিসার ক্ষেত্রে, অন্যান্য ভিসাও যাতে সহজীকরণ হয়, সে বিষয়ে একটি প্যাকেজ নিয়ে এগোচ্ছেন তারা।
তবে কখন সেটা বাস্তবায়ন করা হবে, আমি সেই বিষয়ের কোনো কর্তৃপক্ষ না। সেটা তাদের দূতাবাস বা ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে।’
তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে আলোচনা করতে ভারতের কারিগর দল আসবে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘তিস্তা একটি বড় প্রকল্প। সেটা নিয়ে তাদের কারিগরি দল আসতেই হবে। আর কারিগরি দল আসা খুবই ইতিবাচক।’
ভারতে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক, চুক্তি ও সমঝোতা সইয়ের পর শনিবার (২২ জুন) রাতে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী ফ্লাইটটি ৬টা ২০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময়) নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দর ত্যাগ করে। ভারতের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিং, ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মুস্তাফিজুর রহমান বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সৌদি আরবে আমি মূলত হজ করতে গিয়েছিলাম। যেহেতু আমাকে রয়েল প্রটোকল দেয়া হয়েছিল, যাদের এই প্রটোকল দেয়া হয়েছিল, তাদের সবাইকে মধ্যাহ্নভোজে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন সৌদি যুবরাজ। তিনি তাদের সবার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। আমি তাকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তিনি বলেছেন ‘ইনশাআল্লাহ’। হজ পালন করতে গিয়েছি বলে অন্য কোনো আলোচনা হয়নি।’
এ সময়ে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের এখনো স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে মোকাবিলা করতে হয়। এটা নিশ্চয়ই অপ্রাপ্তির একটি অংশ। এখনো বাংলাদেশে আমরা দেখতে পাই, মাঝে মাঝে স্বাধীনতাবিরোধী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তি ফনা তুলে দাঁড়ায়। এটিও আমাদের জন্য অপ্রাপ্তির একটি অংশ। দেশ আরো এগিয়ে যেতে পারত, যদি সাংঘর্ষিক রাজনীতি না থাকত।’
এ জাতীয় আরো খবর..