বিশ্বকাপের ইতিহাসে অন্যতম বড় অঘটনের জন্ম দিতে শেষ ২ বলে ২ রান দরকার ছিল নেপালের। তবে এত কাছে গিয়েও ইতিহাসের পাতায় নাম লেখানো হলো না রোহিত পাউডেলের দলের। নেপালিদের হৃদয় ভেঙে ন্যুনতম ব্যবধানে জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
সেন্ট ভিনসেন্টে শনিবার (১৫ জুন) নেপালের বিপক্ষে ১ রানে জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দক্ষিণ আফ্রিকার দেয়া ১১৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ওভার শেষে ১১৪ রানে থেমেছে নেপাল।
লক্ষ্যতাড়ায় শুরুটা ভালো করে নেপাল। পাওয়ারপ্লেতে ৩২ রান এলেও কোনো উইকেট হারায়নি দলটি। রানের গতি বজায় রেখে একটু একটু করে এগিয়ে যাওয়া নেপাল ক্রমাগত হতাশ করছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে।
অষ্টম ওভারে বোলিংয়ে এসে খেলার ধারায় পরিবর্তন আনেন তাব্রিয়াজ শামসি। ওই এক ওভারে কুশল ভুর্তেল এবং রোহিত পাউডেলকে সাজঘরে ফেরান এই স্পিনার। পরের দুই ওভারে নেপালকে মোটামুটি চাপেই রাখে দক্ষিণ আফ্রিকা।
চাপকে পাশ কাটিয়ে ভয়ডরহীন ব্যাটিং করেন অনিল শাহ। তরুণ এই ব্যাটারের চার-ছক্কায় রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেট হয়ে যাওয়া আসিফ শেখও ততক্ষণে ভালোই সঙ্গ দিচ্ছিলেন অনিলকে। ১১-১৩ ওভারের মধ্যে ৩৪ রান আসে নেপালের।
৪২ বলে ৩৪ রান দরকার ছিল নেপালের, হাতে ৮ উইকেট। এমন সময় বোলিংয়ে আসেন এইডেন মার্করাম। প্রথম ওভারেই অনিল শাহকে সাজঘরের পথ ধরান তিনি। ১ ছক্কা ও ৩ চারে ২৪ বলে ২৭ রান করেছেন অনিল। এই উইকেটটাই মূলত ম্যাচের মোড় ঘুরিয়েছে। পরের ৩ ওভারে কেবল ১২ রান তুলতে পারে নেপাল।
চাপে পড়ে উইকেট হারানো শুরু করে নেপাল। অষ্টাদশ ওভারে দীপেন্দ্র সিং এইরের উইকেট নেন শামসি। একই ওভারে মাত্র ২ রান দিয়ে আসিফ শেখের গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটাও নেন এই স্পিনার। ১ ছক্কা ও ৪ চারের ইনিংসে ৪২ বলে ৪৯ রান করেছেন আসিফ।
শেষ ২ ওভারে ১৬ রান দরকার ছিল নেপালের। ১৯ তম ওভারে প্রথম ৪ বল করে কোনো রান দেননি আনরিখ নর্টজে। ফিরিয়েছেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম শতকের মালিক কুশল মাল্লাকেও। তবে শেষ ২ বলে একটি ছক্কাসহ ৮ রান নেন সোমপাল কামি। তাতে মোমেন্টাম সঙ্গে নিয়েই শেষ ওভারে যায় নেপাল।
শেষ ওভারে যখন ৮ রান দরকার, তখন প্রথম ২ বলে কোনো রান দেননি বার্টম্যান। তৃতীয় বলে সামনে এগিয়ে এসে জোরে ব্যাট চালান গুলশান ঝা। সাহসের পুরস্কারটাও পেয়েছেন এই ক্রিকেটার। এক ড্রপে বল পেরিয়ে যায় সীমানা। পরের বলেও ২ রান নেন গুলশান। কিন্তু শেষ ২ বলের একটিও ব্যাটেই লাগাতে পারেননি তিনি।
ব্যাটে না লাগলেও শেষ বলে দৌড়ে রান নেয়ার চেষ্টা করেছেন গুলশান এবং সোমপাল। ব্যাটিং প্রান্তে সোমপাল পৌঁছে গেলেও অন্যপ্রান্তে পৌঁছাতে পারেননি গুলশান। দুর্দান্ত থ্রোয়ে স্টাম্প ভাঙেন হেনরিখ ক্লাসেন। ১ রানের ন্যুনতম ব্যবধানে জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নেপালি বোলারদের বিপক্ষে তেমন কিছুই করতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। একটু কঠিন উইকেটে প্রোটিয়াদের ইনিংসটি সঠিক পথে রাখার চেষ্টা করেছিলেন রিজা হেনড্রিকস। ১৬তম ওভারে আউট হওয়ার আগে ৪৯ বলে ৪৩ রান করেন তিনি। প্রোটিয়াদের হয়ে আর কেউ চল্লিশোর্ধ্ব ইনিংস খেলতে পারেননি। ছয়ে নামা ট্রিস্টান স্টাবস শেষ দিকে ১ ছক্বা ও ২ চারে ১৮ বলে ২৬ রানে অপরাজিত না থাকলে ১১৫ রানের সংগ্রহও পেত না দক্ষিণ আফ্রিকা।
দুর্দান্ত বল করেছেন নেপালি স্পিনাররা। অনেক বাধা পেরিয়ে দলে ফেরা সন্দ্বীপ লামিচানে উইকেট না পেলেও ৪ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ১৮ রান। আরেক লেগ স্পিনার কুশল ভুর্তেল ১৯ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। ২১ রানে ৩ উইকেট নেন অফ স্পিনার দীপেন্দ্র সিং।
এ জাতীয় আরো খবর..