ইতালিতে শুরু হওয়া বিশ্বের শীর্ষ ধনী দেশগুলোর জোট জি-৭ সম্মেলনের সাইডলাইনেই ইউক্রেনের সঙ্গে ১০ বছর মেয়াদি নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর করবে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টির সঙ্গে যুক্ত একটি সূত্র মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনকে বিষয়টি জানিয়েছে। সূত্রটি জানিয়েছে, ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের অন্য কোনো সরকার চাইলে এ চুক্তি পরিবর্তন করতে পারবে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে দীর্ঘ কয়েক মাসের আলোচনার পরম এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে যাচ্ছে। এই চুক্তির খসড়া অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীকে ১০ বছরের জন্য প্রশিক্ষণ, অস্ত্র উৎপাদনে সহযোগিতা বৃদ্ধি, সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে এবং গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার বাড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবে। তবে এ চুক্তিটি যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশে হতে যাওয়া চুক্তি। যা পরবর্তী যেকোনো প্রেসিডেন্ট চাইলে নাও মানতে পারেন।
চুক্তির বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত দুটি সূত্র সিএনএনকে জানিয়েছে, এ চুক্তিতে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষার জন্য একটি নির্দিষ্ট আর্থিক কোনো অঙ্গীকার করা হয়নি। একটি সূত্র উল্লেখ করেছে, চুক্তির একটি বর্ধিতাংশ রূপরেখা দেবে যে, কিভাবে বাইডেন প্রশাসন নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে দেশটির পার্লামেন্ট কংগ্রেসের সঙ্গে সহযোগিতা করতে চায়। বিশেষ করে ইউক্রেনকে সমর্থন করার জন্য প্রয়োজনীয় দীর্ঘমেয়াদি তহবিল সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে কংগ্রেসের সঙ্গে মিলে কাজ করবে বাইডেন প্রশাসন।
এদিকে রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদ নিজ স্বার্থে বিশেষ করে ইউক্রেনের জন্য ব্যবহারে সম্মত হতে পারে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ৭ দেশের জোট জি-৭। এমনটাই উঠে এসেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে। বৃহস্পতিবার থেকে ইতালিতে শুরু হওয়া এ সম্মেলনে সদস্য দেশ—যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি ও জাপান ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি দেশের নেতারা অংশগ্রহণ করবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া প্রস্তাব অনুসারে, রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদ থেকে জি-৭ ভুক্ত দেশগুলো প্রতিবছর ইউক্রেনের জন্য ৫ হাজার কোটি ডলার তহবিল সংগ্রহ করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে রাশিয়ার অর্থনীতিকে আরও চাপে ফেলার পরিকল্পনা করছে জোটটি।
প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুসারে—রাশিয়ার কাছ থেকে জব্দ করা জি-৭ ভুক্ত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে থাকা ৩২ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের সম্পদের সুদ থেকে প্রাপ্ত অর্থ ইউক্রেনকে ঋণ আকারে দেওয়া হবে। রাশিয়া ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণের পর পশ্চিমা দেশগুলো পর্যায়ক্রমে এসব সম্পদ জব্দ করে।
আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে, কোনো দেশ রাশিয়ার কাছ থেকে জব্দ করা সম্পত্তি ইউক্রেনকে দিতে পারবে না। কিন্তু জি-৭ যদি এ পরিকল্পনা পাশ করে, তবে হয়তো সরাসরি না দিলেও সেই সম্পদ থেকে অর্জিত সুদ ইউক্রেনকে দেওয়া সম্ভব হবে যা দেশটিকে রণক্ষেত্রে দারুণ সুবিধা দেবে।
এ জাতীয় আরো খবর..