×
  • প্রকাশিত : ২০২৪-০৬-১০
  • ৩৯ বার পঠিত
দেশের ব্যাংক খাতে অনিয়ম দুর্নীতি এবং প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। সেটা সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই। অর্থনীতির চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান ব্যাংক খাত হলেও সদ্য প্রস্তাবিত বাজেটে এই খাত ঘুরে দাঁড় করানোর কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি। এখন খাতটি অরক্ষিত হয়ে পড়েছে।
 
আজ সোমবার (১০ জুন) রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে অর্থনীতির চালচিত্র এবং প্রস্তাবিত বাজেট ২০২৪-২৫ বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে একটি অর্থনৈতিক গোয়েন্দা সংস্থা রয়েছে যার নাম বাংলাদেশ ফাইনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বি এফ আই ইউ)। ব্যাংকে ১০ লক্ষ টাকার বেশি লেনদেন হলেই দৃষ্টিগোচর হয়। কিন্তু এত টাকা পাচার হচ্ছে এবং অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছে তাহলে কি কাজ করছে এই সংস্থাটি? আমরা আসলে এই সংস্থাকে যথাযথ কাজে লাগাতে পারিনি।
 
সময় মত সঠিক পদক্ষেপের অভাবে মূল্যস্ফীতি আমাদের ওপর গেড়ে বসেছে হলে মনে করেন এই জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ। এটার অন্যতম কারণ বিশ্বাসযোগ্য নীতি এবং নীতি সংস্কারের অভাব। দীর্ঘদিন থেকে ভুল নীতির ওপর চলার কারণে মৌলিক অনেকগুলো দুর্বলতা প্রকাশে এসেছে। তার মধ্যে মূল্যস্ফীতি, অর্থ পাচার, খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি, রিজার্ভ এর অবনমন, রাজস্ব আয় হ্রাস অন্যতম।

মৌলিক নীতিগত পরিবর্তন না আনলে এসব সমস্যা থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়। 
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আরো বলেন, ঘাটতি পূরণ করতে আমরা দেশ এবং বিদেশি উচ্চ থেকে একের পর এক ঋণ নিয়েই চলেছি। ঋণ নির্ভরতা কমাতে সরকারের কোনো পদক্ষেপ আছে নাকি, গা ছাড়া বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে তা বিবেচনা করা দরকার। ঋণের উপর নির্ভর করে এভাবে অর্থনীতি চলতে থাকলে একসময় বাজেট দেউলিয়া না হলেও বাস্তবায়ন অসম্ভব হয়ে পড়বে। এই মুহূর্তে আমাদের অর্থনীতির সবগুলো সূচক খারাপ।
 
যতদিন সুযোগ গুলো ভালো ছিল, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ছিল, রেমিটেন্স ভালো ছিল, রিজার্ভের অবস্থাও ভালো ছিল। এবং যেসব অর্থনৈতিক ত্রুটি ছিল সেগুলো হজম করার শক্তিও ছিল। কিন্তু এই মুহূর্তে আমাদের অর্থনীতির সেই শক্তি নেই। ৯০ এর দশকে বাংলাদেশ এবং ভিয়েতনামের অবস্থা একই রকম ছিল। কিন্তু এখন তাদের বিদেশি বিনিয়োগ আমাদের থেকে কয়েক গুণ বেশি। তারা মাথাপিছু আয়েও অনেক এগিয়ে।

দুর্নীতির বিষয়ে ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, সিংহভাগ দুর্নীতিবাজ উচ্চবিত্ত যখন সরকারের কর পরিশোধ করে না। তখন কিছু করদাতার ওপর অতিরিক্ত করের বোঝা চাপিয়ে দিলে তারাও আর সৎ থাকে না। আমরা ক্রমেই নৈতিকতাহীন অর্থনৈতিক ব্যবস্থার দিকে এগোচ্ছি। আমরা স্মার্ট হতে যাচ্ছি কিন্তু দুর্নীতির কারণে স্মার্ট হতে পারছি না। আমাদের দেশে ঘুষ নেওয়া অপরাধ কিন্তু দেওয়া অপরাধ নয়।

বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণে অর্থনীতির মতো সংবেদনশীল খাত গুলোকে ছাড় দিয়ে ক্ষমতার রাজনীতি করার পরামর্শ দিয়েছেন এই অর্থনীতিবিদ। তা না হলে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat