×
  • প্রকাশিত : ২০২৪-০৬-০৬
  • ৫৪ বার পঠিত
নারায়ণ চন্দ্র চন্দ : ভূমি বিষয়টি জনগণের সর্বোচ্চ স্বার্থসংশ্লিষ্ট। ভূমি মানুষের জীবন, অর্থনীতি ও সামাজিক নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গুরুত্বপূর্ণ এবং বিশাল চ্যালেঞ্জিং। নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি, জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী শেখ হাসিনা আমার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছেন।

নারায়ণ চন্দ্র চন্দ : হ্যাঁ, ভূমি মন্ত্রণালয়টি সব সময় চ্যালেঞ্জিং হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রায় পাঁচ মাসে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে মন্ত্রণালয়ের সব দপ্তর ও সংস্থা পরিদর্শন করেছি। মাঠ পর্যায়ে বেশ কিছু ভূমি অফিস এবং সেটলমেন্ট অফিস পরিদর্শন করেছি। আমরা বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ পর্যবেক্ষণ করেছি।

এসব চ্যালেঞ্জ উত্তরণে আমরা ‘ক্যাটাগরিক্যালি’ কাজ করে যাচ্ছি।
নারায়ণ চন্দ্র চন্দ : এই মন্ত্রণালয়ের দেওয়া সেবাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত সেবাগুলো এরই মধ্যে প্রায় শতভাগ ডিজিটাইজড করা হয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে নামজারি, ভূমি উন্নয়ন কর এবং খতিয়ান ও মৌজা ম্যাপ সেবা।

একই সঙ্গে, কোরিয়ান সরকারের সহায়তায় ইডিএলএমএস প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে চলমান রয়েছে। এই পাঁচটি নিয়মিত সেবা ছাড়াও অন্যান্য ভূমিসেবাও (যেমন, জলমহাল আবেদন, শুনানি ব্যবস্থা) ইত্যাদিও ডিজিটাইজড করছি আমরা।

নারায়ণ চন্দ্র চন্দ : আমরা একটি কম্প্রিহেনসিভ ‘নাগরিক গ্রাহক সেবা’ সিস্টেম স্থাপন করেছি। এর অংশ হচ্ছে ১৬১২২ হটলাইন, অটোমেটেড সার্ভিস ফিডব্যাক, এজেন্ট সেবা ইত্যাদি। এ ছাড়া, নাগরিকের ভূমি/স্থাবর সম্পদের ডাটা নিরাপত্তায় সাইবার সিকিউরিটি ফার্ম নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি সমৃদ্ধ সার্ভিস সিস্টেম ডেভেলপমেন্টের সময়, ব্যবহারকারীকেন্দ্রিক ডিজাইন, অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সার্ভিসের সঙ্গে সহজ ইন্টিগ্রেশন, অটোমেশন, দক্ষ কর্মপ্রবাহ ব্যবস্থাপনা, গুরুত্বপূর্ণ বিশ্লেষণ ও প্রতিবেদন এবং শক্তিশালী ডিজিটাল নিরাপত্তা, ওপেন ডাটা গভর্ন্যান্স পলিসি ইত্যাদির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

নারায়ণ চন্দ্র চন্দ : ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩-এর বিভিন্ন ধারা ও অনুচ্ছেদ পর্যালোচনা করে বিধিমালার খসড়া প্রণয়ন করে তা পর্যালোচনার জন্য আইন ও বিচার বিভাগে পাঠানো হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত পেলে প্রযোজ্য সংশোধন করে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনের বিধিমালা জারি করে দেব।

নারায়ণ চন্দ্র চন্দ : ভূমি সংস্কার বোর্ডের সক্ষমতা বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছি। বাজেট বৃদ্ধি, আধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ, মানবসম্পদ বৃদ্ধি এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বোর্ডের আইনগত ক্ষমতা সম্প্রসারণের বিষয়টিও বিবেচনা করা হচ্ছে।

নারায়ণ চন্দ্র চন্দ : অবৈধভাবে দখল করা খাস ও সরকারি জমি রক্ষা করা এবং উদ্ধার করা আমাদের অগ্রাধিকার। প্রথমত, সরকারি-বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টি এবং সাধারণ মানুষকে সহযোগিতা করার ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছি। দ্বিতীয়ত, ভূমি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া আছে, যেন অবৈধ দখলে থাকা খাস ও সরকারি জমি রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ নেন তাঁরা। তৃতীয়ত, সব সরকারি ও খাসজমির তথ্য ভূমি ডাটা ব্যাংকে আপলোড করার কাজ হচ্ছে। চতুর্থত, ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন অবৈধ দখল রোধে প্রয়োগ করা হবে।

নারায়ণ চন্দ্র চন্দ : জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা সেবা প্রদান প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণরূপে স্বচ্ছ ও ডিজিটাইজড করার উদ্যোগ নিয়েছি। অনলাইন সেবায় মানুষের সরাসরি যোগাযোগ কম থাকবে। ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ের কার্যালয়গুলোতে কঠোর মনিটরিং সিস্টেম চালু করা হয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করে দুর্নীতি প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা ল্যান্ড ফ্যাসিলিটি সিস্টেম তৈরি করেছি। মাঠ পর্যায়ে কেউ হয়রানি করলে দ্রুত তা ধরা হচ্ছে স্মার্ট কানেক্টের মাধ্যমে, লাইভ রিপোর্টিংয়ের মাধ্যমে। এ ছাড়া মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং টিম মাঠে গিয়ে নিয়মিত তদারকি করছে। যারা দুর্নীতিতে জড়িত থাকবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নারায়ণ চন্দ্র চন্দ : আমি বিশ্বাস করি, ভূমি মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাধীন সব দপ্তর/সংস্থায় কর্মরত আমার সহকর্মীরা দায়িত্বশীল গণকর্মচারী। তাঁদের প্রতি আমার আহ্বান নিষ্ঠা, সততা ও নৈতিক মূল্যবোধের সঙ্গে কাজ করুন। জনগণের সেবায় নিয়োজিত থাকুন এবং দুর্নীতি থেকে দূরে থাকুন। আর নাগরিকদের প্রতি আমার বার্তা হলো, আপনাদের ভূমিসংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা বা অভিযোগ আমরা গুরুত্ব সহকারে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি। আমার মন্ত্রণালয় সর্বদা আপনাদের সেবায় থাকবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat