ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালের’ আঘাতে খুলনার কয়রা-পাইকগাছা ও দাকোপের অন্তত ১০টি পয়েন্টে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ। পানি ঢুকে পড়ে লোকালয়ে। তলিয়ে যায় প্রায় ২০টি গ্রাম। ভেসে গেছে অসংখ্য মাছের ঘের। এরপর পেরিয়েছে কয়েকদিন। এখনও সেই চিত্র বদলায়নি পুরোপুরি। জোয়ারের সময় ভেঙে যাওয়া অংশ দিয়ে ঢুকছে পানি।
জানা গেছে, খুলনার উপকূলে বেড়িবাঁধ সংস্কারে গত দশ বছরে অর্ধশত কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। তবুও ভাঙছেই বাঁধ; ডুবছে লোকালয়। পূরণ হয়নি টেকসই বাঁধের দাবি। সংস্কার কাজে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন উপকূলের মানুষ। তবে স্থায়ী কাজে আরও বরাদ্দ চায় পানি উন্নয়ন বোর্ড।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, বাঁধ ভেঙে লোকালয় প্লাবিত হওয়ার পেছনে ওয়াপদার গাফিলতি আছে। যারা দায়িত্বে থাকে তারা পার্সেটেন্সের হিসাব করে। এজন্য এ অবস্থা।
আরেকজন বলেন, সাব-কন্টাক্টারের মাধ্যমে বাঁধের কাজ করায়। এতে কাজ ভালো হয় না। টেকসই বেড়িবাঁধের দাবি দীর্ঘদিনের, তবে এটি হয় না। যখন ভেঙে যায় তখন আশ্বাস দেয়া হয়। তিনি আরও বলেন, ক্ষতি তো তাদের হচ্ছে না। বাঁধ ভাঙলে কর্মকর্তাদের আয় বাড়ে, ক্ষতি হয় আমাদের।
গত ১০ বছরের এই বাঁধ সংস্কারের পেছনে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা ব্যয় করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে কর্মকর্তাদের দাবি-টেকসই কাজের জন্য এই বরাদ্দ যথেষ্ট নয়।
খুলনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, ৫০ কোটি টাকা কিন্তু খুবই নগণ্য। ৬৩০ কিলোমিটার বেরিবাঁধ আছে। যে সম্পদ প্রতিবছর রক্ষা পায় সে হিসেবে এই বাজেট খুবই নগণ্য। প্রতিবছর এসব বাঁধ রুটিন মেইনটেন্সের জন্যই আমাদের চাহিদা ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকা।
দুর্গত এলাকা পরিদর্শ করেছেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান। বাঁধ মেরামতে অনিয়ম থাকলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। সচিব বলেন, আমরা নিয়মগুলো খুবই কঠোরভাবে পালন করবো। কোনো অনিয়ম পেলে তদন্ত করে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, খুলনার উপকূলীয় চার উপজেলায় বাঁধ রয়েছে ৬৩০ কিলোমিটার। প্রশাসনের তথ্যমতে, ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত দুই লাখ ৮৯ হাজার মানুষ।
এ জাতীয় আরো খবর..