ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি শুক্রবার এএফপিকে একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তিনি আশঙ্কা করছেন, ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বে রাশিয়া আক্রমণ জোরদার করবে। পাশাপাশি তিনি সতর্ক করে দেন, যুদ্ধক্ষেত্রে কিয়েভের প্রয়োজনীয় বিমান প্রতিরক্ষার মাত্র এক চতুর্থাংশ রয়েছে। ্গণমাধ্যমটি শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
রুশ বাহিনী সাম্প্রতিক মাসগুলোতে শুধু মাঝারি অগ্রগতি করেছে।
১০ মে খারকিভ অঞ্চলে একটি আশ্চর্যজনক আক্রমণ শুরু করে তারা। এতে দেড় বছরে তাদের সবচেয়ে বড় আঞ্চলিক অর্জন হয়েছে।
জেলেনস্কি বলেছেন, রুশ সেনারা ইউক্রেনীয় বাহিনী থামানোর আগে উত্তর-পূর্ব সীমান্তে পাঁচ থেকে ১০ কিলোমিটার অগ্রসর হতে পেরেছিল। কিন্তু এই অঞ্চলটি একটি বিস্তৃত আক্রমণের ‘প্রথম অংশ’ হতে পারে।
আক্রমণের পর শুক্রবার কিয়েভ থেকে বিদেশি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি বলব না এটা (রাশিয়ার জন্য) একটি বড় সাফল্য। কিন্তু আমাদের সতর্ক থাকতে হবে এবং বুঝতে হবে, তারা আমাদের ভূখণ্ডের আরো গভীরে প্রবেশ করছে।’
জেলেনস্কি বলেন, খারকিভ অঞ্চলের পরিস্থিতি ‘নিয়ন্ত্রিত’ হয়েছে। কিন্তু ‘স্থিতিশীল নয়’।
এদিকে যুদ্ধের তৃতীয় বছর পেরিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার বিমানের শ্রেষ্ঠত্ব মোকাবেলায় আরো বিমান প্রতিরক্ষা এবং যুদ্ধবিমান পাঠানোর জন্য জেলেনস্কি মিত্রদের কাছে অনুরোধ দ্বিগুণ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আজ, ইউক্রেনকে রক্ষার জন্য আমাদের যা প্রয়োজন তার প্রায় ২৫ শতাংশ আমাদের আছে। আমি বিমান প্রতিরক্ষার কথা বলছি।’
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে ‘সমতা’ অর্জনে ইউক্রেনের ‘১২০ থেকে ১৩০’টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান বা অন্যান্য উন্নত বিমানের প্রয়োজন বলেও ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট উল্লেখ করেছেন।
খারকিভে হামলা
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই সপ্তাহে চীন সফরের সময় বলেছিলেন, ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বে আক্রমণটি ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে গোলাবর্ষণের প্রতিশোধ হিসেবে নেওয়া হয়েছে। মস্কো একটি ‘নিরাপত্তা অঞ্চল’ তৈরি করার চেষ্টা করছে।
এএফপি ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ারের (এইএসডাব্লিউ) তথ্য ব্যবহার করে গণনা করে দেখেছে, রুশ বাহিনী ৯ থেকে ১৫ মের মধ্যে ২৭৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকা দখল করেছে, যা ২০২২ সালের শেষের পর থেকে তাদের সবচেয়ে বড় অর্জন।
এদিকে রাশিয়া শনিবার খারকিভ অঞ্চলের আরেকটি গ্রাম দখল করেছে বলে জানিয়েছে। তবে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা বাহিনী বলেছে, তারা ‘রুশ দখলদারদের অগ্রসর হতে বাধা দেওয়ার প্রধান প্রচেষ্টাকে কেন্দ্রীভূত করছে।’
রাশিয়া হামলা শুরুর পর থেকে ইউক্রেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত এলাকা থেকে প্রায় ১০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে।
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছেন, তারা পূর্বাঞ্চলীয় শহর ভোভচানস্কে তাদের কমান্ড সদর দপ্তরকে রক্ষার জন্য ‘মানব ঢাল’ হিসেবে ব্যবহারের জন্য কয়েক ডজন বেসামরিক নাগরিককে বন্দি করেছে। তবে এ দাবির সত্যতা তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে এএফপি।
এ জাতীয় আরো খবর..