কিরগিজস্তানে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয়দের হামলার ঘটনার পর চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন হাজারের বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। তারা দেশটির বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করছেন।
গত সোমবার (১৩ মে) মধ্যএশিয়ার দেশ কিরগিজস্তানের রাজধানী বিশকেকের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মিশরের ছাত্রদের সঙ্গে স্থানীয়দের দ্বন্দ্ব হয়।
কয়েকদিন পর শুক্রবার (১৭ মে) রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ক্যাম্পাসে ঢুকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় স্থানীয়রা। এরপরই অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও ছড়িয়ে পড়ে সংঘাত।
বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয়দের হামলার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ভিডিওতে দেখা যায়, রাস্তায় পড়ে থাকা ছাত্রদের মারধর চলছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে ঢুকেও তাদের মারধর করা হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, একদল দুর্বৃত্ত ভারত ও পাকিস্তানের মেডিকেল শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। বিশেষ করে যারা দেশটির রাজধানী বিশকেকের হোস্টেলে থাকেন এমন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়।
ভাতীয় গণমাধ্যম নিউজ নাইনের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, কিরগিজস্তানে দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত চারজন পাকিস্তানি। যদিও বিষয়টি অস্বীকার করেছে কিরগিজস্তানে পাকিস্তান দূতাবাস।
প্রাথমিকভাবে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানানো হয়। তবে হামলার ঘটনায় দূতাবাসের কাছে বার বার সাহায্য চাওয়া হলেও কোনো সাড়া পাওয়ার যায়নি বলে অভিযোগ পাকিস্তানি শিক্ষার্থীদের।
একের পর এক হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কিরগিজস্তানে পড়াশোনা করতে গিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা। এ অবস্থায় নিজ নিজ দেশের শিক্ষার্থীদের সতর্কতার সাথে চলাফেরার নির্দেশ দিয়েছে ভারত ও পাকিস্তান।
দেশটিতে সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ মিলিয়ে প্রায় ১২০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, সরকারি মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা নিরাপদে থাকলেও বিপদে আছেন বেসরকারি মেডিকেলের প্রায় ৯ শতাধিক শিক্ষার্থী। তারা একরকম গৃহবন্দি হয়ে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন। অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের।