দেশের কৃষি ও উৎপাদন খাতে ধারাবাহিক উন্নয়নের চিত্র উঠে এলো দেশে প্রথমবারের মতো প্রকাশিত পারচেজিং ম্যানেজার ইনডেক্স বা পিএমআই সূচকে। দেশের অর্থনীতির প্রধান চারটি খাত কৃষি, ম্যানুফ্যাকচারিং, নির্মাণ ও সেবা- এর ওপর ভিত্তি করে এই পিএমআই সূচক যৌথভাবে প্রকাশ করেছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ।

যুক্তরাজ্যের ইউকে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের আর্থিক সহযোগিতায় এই প্রকল্পে কারিগরি সহযোগিতা দিচ্ছে সিঙ্গাপুরভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ’সিঙ্গাপুর ইন্সটিটিউট অব পারচেজিং অ্যান্ড ম্যাটেরিয়ালস ম্যানেজমেন্ট’ (এসআইপিএমএম)।

এপ্রিল মাসে দেশের ’পারচেজিং ম্যানেজার ইনডেক্স’ বা পিএমআই সূচক দাঁড়িয়েছে ৬২ দশমিক ২ শতাংশে। গত মার্চে যা ছিল ৬৪ দশমিক ৩ শতাংশ। এপ্রিলে সার্বিক পিএমআই গত মার্চ মাসের চেয়ে ২ দশমিক ১ শতাংশ কমলেও, এখানে কৃষি ও উৎপাদন খাতে অর্থনীতির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার বিষয়টি উঠে আসে। তবে এপ্রিলে নির্মাণ ও সেবা খাতে অর্থনীতির গতি আগের মার্চ মাসের তুলনায় কিছুটা মন্থর।

  

বৃহস্পতিবার (৯ মে) রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত এমসিসিআই প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পিএমআই ইনডেক্স প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়েশা খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশনার ম্যাট ক্যানেল।

 

সবশেষ প্রকাশিত পিএমআইতে দেখা যাচ্ছে, এপ্রিলে কৃষি ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে পিএমআই সূচক ঊর্ধ্বমুখী। এর মধ্যে কৃষি খাতে এপ্রিল মাসে পিএমআই ছিল ৬০ দশমিক ৯ শতাংশ। আগের মাস মার্চে যা ছিল ৫৫ দশমিক ৭ শতাংশ। অপরদিকে নির্মাণ খাতে এপ্রিলে পিএমআই ৭৪ দশমিক ৫, যা তার আগের মার্চ মাসে ছিল ৬৮ দশমিক ৪।

 

তবে এপ্রিলে নির্মাণ ও সেবা খাতে পিএমআই সূচকের নিম্নগতি লক্ষ করা গেছে। এপ্রিলে নির্মাণ খাতে পিএমআই ছিল ৬৩ দশমিক ৮, যা তার আগের মার্চ মাসে ছিল ৬৭ দশমিক ৭ শতাংশ। অপরদিকে সেবা খাতে এপ্রিলে পিএমআই ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ, যা মার্চ মাসে ছিল ৬৩ দশমিক ৬ শতাংশ।

 

অনুষ্ঠানে দেশের প্রথম এ ধরনের পারচেজিং ম্যানেজার ইনডেক্সের নানা দিক তুলে ধরেন সিঙ্গাপুরের এসআইপিএমএম নির্বাহী পরিচালক স্টিভেন পোহ ও পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাশরুর রিয়াজ।

  

দেশের অর্থনীতির প্রধান চারটি খাত কৃষি, নির্মাণ, উৎপাদন ও সেবা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদের মতামতের ভিত্তিতে প্রতি মাসে এই পিএমআই প্রকাশ করা হচ্ছে। শুরুতে প্রতি প্রান্তিকে এই সূচক প্রকাশ করা হলেও, এখন থেকে তা প্রতি মাসে প্রকাশ করা হবে।  

 

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রথমবারের মতো প্রণীত এই সূচকে পিএমআইকে শূন্য থেকে ১০০ নম্বরের মধ্যে পরিমাপ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে মাসরুর রিয়াজ জানান, আগের মাসের তুলনায় পিএমআই স্কোর ৫০ এর বেশি হলে অর্থনীতির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এবং তার নিচে হলে নিম্নমুখী প্রবণতা বোঝাবে। আর সূচক ৫০ এ থাকলে তা অর্থনীতির স্থিতি অবস্থাকে নির্দেশ করবে।