×
  • প্রকাশিত : ২০২৪-০৫-০৭
  • ৫৮ বার পঠিত
গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে তিনগুণ বেশি শব্দদূষণের শিকার রাজধানী ঢাকা। একদিকে নিয়ন্ত্রণে যেমন নেই কোনো সরকারি পদক্ষেপ, তেমনি এ নিয়ে সচেতন ব্যক্তি বা সংস্থার সংখ্যাও হাতেগোনা। এতে শ্রবণজনিত সমস্যাসহ হৃদরোগ, অনিদ্রা ও স্মৃতি বিভ্রাটের মতো মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন নগরবাসী।
শব্দদূষণের কারণে বাসা বাঁধে নানা রোগ। ছবি: সময় সংবাদ
শব্দদূষণের কারণে বাসা বাঁধে নানা রোগ। ছবি: সময় সংবাদ
তাসনিয়া নিশাত মীম

গ্রামীণ জীবন ছেড়ে দুবছর হলো শহরে এসেছেন সুলতান মিয়া। কাজ করছেন পোশাক কারখানায়। শ্রবণ সমস্যায় ভুগছেন ছয় মাসের বেশি সময় ধরে। তার দাবি, কাজের জায়গায় অতিরিক্ত মাত্রা শব্দ, শহরের পথে পথে গাড়ির তীব্র হর্ন এবং আরও নানা অযাচিত আওয়াজে কানে কম শুনছেন এখন।
 
তিনি বলেন, 
বাম কানে শুনতে পাই। কিন্তু ডান কানে একেবারে হালকা করে শুনি। গাড়িতে করে চলাচল করার সময় শব্দ শুনলে কানের ব্যথা বেড়ে যায়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, একজন স্বাভাবিক মানুষের শব্দ গ্রহণের মাত্রা ৪০-৫০ ডেসিবল। কিন্তু রাজধানী ঢাকায় চলাচল করতে গেলে কী পরিমাণ শব্দ গ্রহণ করতে হয় একজন মানুষকে?
  
পরিবেশ অধিদফতর ২০২৩ সালে ২৪ ঘণ্টায় শব্দের মানমাত্রার ওপর ১০ দিনের একটি গড় হিসাব করে। সেখানে দেখা যায়, সর্বোচ্চ শব্দের মাত্রা উঠেছে ১২৯ দশমিক ৩ ডেসিবল।
 
কর্মজীবীরা বেশি আক্রান্ত হলেও শিশু ও বৃদ্ধরা ভুক্তভোগী কম না। অনেকেই ভুগছেন দীর্ঘস্থায়ী শ্রবণ সমস্যায়। ট্রাফিক বিভাগে কর্মরতরা এর মধ্যে অন্যতম।
 
ঘুম না হওয়া, উদ্বিগ্নতা, দুশ্চিন্তা, মানসিক অবসাদ, হৃদরোগ ও উচ্চরক্তচাপসহ গুরুতর ৩০টি রোগ হতে পারে এই দূষণে। তাই ত্রুটিগুলো চিহ্নিত করে জনসচেতনতায় গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
  
জাতীয় নাক, কান ও গলা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. জাকারিয়া সরকার সময় সংবাদকে বলেন, 
শব্দদূষণের কারণে একটা রোগই তৈরি হয়েছে, সেটা হলো ‘নয়েজ ইনডিউসিং হেয়ারিং লস’ বা শব্দদূষণজনিত কানের শব্দহীনতা। অধিক শব্দের কারণে কানের ভেতরের অরগানগুলোর কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়।
 
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের যুগ্ম সম্পাদক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন,
 
হর্নের ভেতরে নির্ধারিত যে মানমাত্রা রয়েছে, তার চেয়ে বেশি শব্দ তৈরিকারী হর্ন আমাদানি করা যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমরা আইনের সঠিক প্রয়োগ করে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। সচেতনতাও তৈরি হয়নি। প্রতিকারের জন্য প্রতিটি মানুষেরই সচেতন হওয়া উচিত।

সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ অনুযায়ী, নীরব জোনে হর্ন নিষিদ্ধ হলেও আইনের প্রয়োগ না থাকায় শুধু সেখানেই নয়, পুরো রাজপথজুড়েই যেন চলছে হর্নের প্রতিযোগিতা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat