কেপটাউনে অস্ট্রেলিয়ার বল টেম্পারিং কাণ্ডের প্রায় চার বছর হতে চলল। অথচ ওই সময়ে পাওয়া একটি শাস্তির বোঝা এখনো বয়ে চলেছেন ডেভিড ওয়ার্নার। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া সেটি না বদলালে ওয়ার্নারকে ওই শাস্তি বয়ে বেড়াতে হবে সারা জীবনের জন্যই! এবার সেই ‘বন্দিদশা’ থেকে মুক্তি চান তিনি। সরাসরি না বললেও ওয়ার্নার ইঙ্গিত দিয়েছেন, অন্তত ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া তাঁর সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করুক!
২০১৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কেপটাউন টেস্টে বল টেম্পারিংয়ের দায়ে ওই সময়ের অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ, ক্যামেরন ব্যানক্রফট ও ওয়ার্নারকে বিভিন্ন মেয়াদের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। তবে এ ঘটনার পেছনে অন্যতম ‘হোতা’ ছিলেন, এমন অভিযোগে সবচেয়ে বড় শাস্তিটা পেতে হয় সে সময়ের সহ–অধিনায়ক ওয়ার্নারকেই। এক বছরের জন্য সব ধরনের ক্রিকেটে নিষেধাজ্ঞাসহ আজীবন অস্ট্রেলিয়ার কোনো পর্যায়ের ক্রিকেটেই নেতৃত্বে আসতে পারবেন না—শাস্তিটা ছিল এমন।
নেতৃত্বের নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে স্মিথের শাস্তির মেয়াদ ছিল দুই বছর। সেটি কাটিয়ে গত বছর নিয়মিত অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের অনুপস্থিতিতে একটি টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্বও দিয়েছেন স্মিথ। কিন্তু দলের অন্যতম অভিজ্ঞ ক্রিকেটার হওয়ার পরও ওয়ার্নার এমন অবস্থানে আসতে পারছেন না।
ওয়ার্নারের নেতৃত্বের আলোচনার প্রসঙ্গটি আবার উঠেছে মূলত তাঁর বিগ ব্যাশ লিগে ফেরার পর। প্রায় ১০ বছর বিরতি দিয়ে আবার সিডনি থান্ডারের সঙ্গে দুই বছরের চুক্তি করেছেন তিনি। সিডনির দলটির নিয়মিত অধিনায়ক উসমান খাজা আবার এ মৌসুমে পাড়ি জমিয়েছেন ব্রিসবেন হিটে। ফলে একজন অধিনায়ক লাগবে তাদের। তবে আপাতত চাইলেও ওয়ার্নারকে সে দায়িত্ব দিতে পারবে না তারা। অধিনায়ক ঘোষণা করার ক্ষেত্রে অবশ্য মৌসুম শুরুর আগপর্যন্ত তারা অপেক্ষা করবে বলে জানিয়েছে।
এখন পর্যন্ত এ প্রসঙ্গে থান্ডারের সঙ্গে কথা হয়নি, ওয়ার্নার জানিয়েছেন এমন। তবে ব্যাপারটি যে তাঁর ভাবনায় আছে, সেটিও ওয়ার্নারের কথায় পরিষ্কার, ‘আগেও অফ দ্য রেকর্ড অনেকবার বলেছি, আমার সঙ্গে আলোচনায় আসার, তাদের দুয়ার খুলে দেওয়ার ব্যাপারটি বোর্ডের ওপর। এরপরই আসলে এ ব্যাপারে খোলাখুলি একটা আলোচনা হতে পারে।’
আলোচনার ব্যাপারে তিনি যে আগ্রহী, জানিয়েছেন সেটাও, ‘২০১৮ সালে যখন ওই শাস্তি দেওয়া হয়েছিল, এরপর বোর্ডে পরিবর্তন এসেছে। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে যদি বুঝতে পারি, এখন আমাদের অবস্থান আসলে কোথায়, তাহলে ব্যাপারটি ভালোই হবে।’
ওয়ার্নারের নেতৃত্বের নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিতে এর আগেও বোর্ডকে বিবেচনা করতে বলেছেন সাবেক ক্রিকেটাররা। সম্প্রতি এ নিয়ে মুখ খুলেছেন এখনকার টেস্ট অধিনায়ক প্যাট কামিন্সও, ‘(তাঁর নেতৃত্ব দিতে না পারার) কোনো কারণ দেখি না আমি। তিনি দুর্দান্ত একজন নেতা। আশা করি...(নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়া হবে)।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৩ বছর পার করে ফেলা ওয়ার্নার অবশ্য কাগজে–কলমে নিজের পদ নিয়ে চিন্তিত নন। এমনিতেও দলের নেতৃত্বস্থানীয় একজন বলেই নিজেকে ভাবেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়াকে এখন পর্যন্ত ১২টি ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়া ওয়ার্নার, ‘আমার অভিজ্ঞতা আছে, কোনো পদে না থাকলেও আমি দলের একজন নেতা। আমার ভাবনাও অমনই। তরুণেরা যদি আমার কাছে কিছু শিখতে চান, তাহলে আমার কাছে সব সময়ই ফোন থাকে, তাঁদের কাছে আমার নম্বর আছে। অনুশীলনের সময়ও আমার সঙ্গে দেখা করতে পারেন তাঁরা।’
এ জাতীয় আরো খবর..