×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৮-১১
  • ৪৯ বার পঠিত
ঢাকা এবং বলপূর্বক বাস্তচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক বা রোহিঙ্গা শিবিরে বসবাসকারীদের মধ্যে সার্স-কোভি-২ ও অন্যান্য আন্ত্রিক জীবাণু চিহ্নিত করতে পরিবেশগত সমীক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে ঢাকা শহরের নির্দিষ্ট কিছু স্থান এবং রোহিঙ্গা শিবিরের নির্দিষ্ট ক্যাম্পের নর্দমা, খাল এবং পাম্প স্টেশন থেকে বর্জ্য পানির নমুনা সংগ্রহ করা হবে। পরে এটি জনগণের মধ্যে আন্ত্রিক জীবাণু সালমোনেলা টাইফি, ভিব্রিও কলেরি, রোটাভাইরাস এবং সার্স-কোভি-২- এই চারটি ভ্যাকসিন-প্রতিরোধযোগ্য জীবাণু চিহ্নিত এবং পর্যবেক্ষণ করার চেষ্টা করবে। আন্তর্জাতিত উদারাময় গবেষণা কেন্দ্র আইসিডিডিআর,বি’র এনভায়রনমেন্টাল ইন্টারভেনশন্স ইউনিট (ইআইইউ) এবং বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনস্থ রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট  (আইইডিসিআর) -এর উদ্যোগে এই সমীক্ষা পরিচালিত হচ্ছে।
 
এটি বাস্তবায়িত হচ্ছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা ওয়াসা, কক্সাজারে ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং (ডিপিএইচই), রিফিউজি, রিলিফ, অ্যান্ড রিপ্যাট্রিয়েশন কমিশনার (আরআরআরসি) এবং কক্সাজারের সিভিল সার্জন অফিসের সহযোগিতায়। যুক্তরাষ্ট্রের ইমোরি ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর গ্লোবাল সেইফ ওয়াটার, স্যানিটেশন অ্যান্ড হাইজিন এতে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের দ্য রকফেলার ফাউন্ডেশন এতে আর্থিক সহায়তা দেবে। গতকাল বুধবার ঢাকার একটি হেটেলে এর উদ্বোধনী সভা অনুষ্ঠিত হয়।   

সভায় জানানো হয়, পরিবেশগত সমীক্ষায় বর্জ্য/পয়ঃ পানির নমুনাতে জীবাণুর উপস্থিতি বা অনুপস্থিতিসহ জনগণের মধ্যে এর প্রবাহ চিহ্নিত করতে সহায়তা করে। একই সাথে জীবাণুর ঘনত্বের প্রবণতা সম্পর্কে ধারণা দেয় এবং প্রাথমিক সতর্কতা জানায়। পাকিস্তান ও ভারতসহ কয়েকটি নিম্ন ও মধ্যম-আয়ের দেশ এ সমীক্ষা চালু করেছে এবং সফলভাবে সুপ্ত প্রাদুর্ভাব চিহ্নিত করতে পেরেছে।

এছাড়া জানানো হয়, এ সমীক্ষার সুবিধা বহুবিধ। এটি ক্লিনিক্যাল সার্ভিলেন্স পদ্ধতির সহায়ক হিসাবে কাজ করে এবং ব্যয়-সাশ্রয়ী। এটি প্রাথমিক সতর্কতা জানায়, এর তথ্য-উপাত্ত জনস্বাস্থ্য বিষয়ক জরুরি অবস্থা সংক্রান্ত পরিকল্পনা নিতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

উদ্বোধনী সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা ওয়াসা-র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার তাকসিম এ খান। আইইডিসিআর-এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন এ সভায় সভাপতিত্ব করেন।

আইইডিসিআর-এর ভাইরোলজি শাখার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. জাকির হোসেন হাবিব নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে চলমান পরিবেশগত সমীক্ষার বিভিন্ন দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেন।

আইসিডিডিআর,বি-র ইআইইউ-এর প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর ডা. মো. মাহবুবুর রহমান তার উপস্থাপনায় এই গবেষণার বিস্তারিত তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘এই গবেষণার ফলাফল বাংলাদেশ সরকারকে টিকাদানের মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য রোগের ক্ষেত্রে সময়োপযোগী কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা বাস্তবায়নে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং মহামারির ক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত নিতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেবে। ’

মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই ধরনের গবেষণা আমাদের জন্য খুবই দরকারি, কারণ তা জনস্বাস্থ্যের সংকটে রোগ প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে। আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, রোগের শনাক্ত ও নিরাময়ের আগে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা ভালো। ’

ইঞ্জিনিয়ার তাকসিম এ খান বলেন, ‘আমি আশা করছি, এই গবেষণার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী ডাটাবেজ তৈরি হবে যা আমাদের পরিবেশের বিভিন্ন ধরনের রোগ জীবাণু পর্যবেক্ষণে সহায়ক হবে।  

যুক্তরাষ্ট্রের দ্য রকফেলার ফাউন্ডেশনের গ্লোবাল হেলথ নেটওয়ার্কের ডিরেক্টর ড. মেগান ডায়মন্ডও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। এছপাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, আইইডিসিআর, যুক্তরাষ্ট্রেরর ইমোরি ইউনিভার্সিটি এবং আইসিডিডিআর,বি-র প্রতিনিধিরাও  সভায় উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat