দুই মাস আগে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের কারণ ও দায় নিরূপণে বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষককে প্রধান করে একটি ‘বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটি’ গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
জনস্বার্থে করা এ সংক্রান্ত রিটের প্রাথমিক শুনানির পর বুধবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।
আইনজীবী পল্লব কালের কণ্ঠকে বলেন, সরকারের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিবকে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর এ কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন আদালত।
ভয়াবহ এ বিস্ফোরণের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে ও হতাহতদের পর্যাবপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। এ ধরনের বিস্ফোরণ বা দুর্ঘটনা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরকে অত্যাধুনিক করতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
এ ছাড়া কেমিক্যাল রক্ষণাবেক্ষণে জন্য র্নিদৃষ্ট স্থান নির্ধারণ ও কেমিক্যাল ডিপোতে কী ধরনের কেমিকেল কী পরিমাণ রাখা হবে, তা প্রদর্শনের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
জ্বালানি সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিল্প সচিব, বাণিজ্য সচিব, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, স্মার্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিএম কন্টেইনার বিডি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সহ ২০ বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত ৪ জুন রাত সাড়ে নয়টার দিকে সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকায় বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড থেকে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। আদালতে উপস্থাপন করা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের প্রতিবেদন অনুযায়ী এ বিস্ফোরণে মোট ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত দুই শতাধিক।
ঘটনার পর পুলিশ বাদী হয়ে সীতাকুণ্ড থানায় ডিপো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মামলা করে। তবে মামলায় মালিকপক্ষকে আসামি করা হয়নি। দুই মাস পার হলেও এ ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
এ ঘটনায় হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দিতে বিবাদীদের আইন নোটিস পাঠানো হয়। কিন্তু এ বিষয়ে জবাব না আসায় মানবাধিকার সংগঠন ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট এবং সিসিবি ফাউন্ডেশন এর পক্ষে গত ২৯ জুন হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়।
এ জাতীয় আরো খবর..