জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি শ্রমজীবী মানুষের জীবনকে বিপন্ন করবে বলে মনে করেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ। তারা জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার, জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ঘোষণা, গার্মেন্ট, হোটেলসহ বিভিন্ন সেক্টরে নতুন মজুরি বোর্ড গঠন এবং শ্রমজীবীসহ সকল সাধারণ মানুষের জন্য রেশন ব্যবস্থা চালু করার জোর দাবি জানিয়েছেন।
আজ সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, আন্তর্জাতিক দাম বৃদ্ধি, বিপিসির লোকসান, ভর্তুকি দিতে সরকারের অক্ষমতা এবং তেল পাচারের দোহাই দিয়ে সরকার জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। যা শ্রমজীবীদের ওপর নিপীড়নের শামিল।
কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম এখন পড়তির দিকে। ক্রড অয়েলর যে দাম এখন ৯৫ ডলার এ বছর শেষে তা ৮০ ডলারের নিচে নামতে পারে বলে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
বিবৃতিতে তেলের দামের প্রভাবে কৃষি ও শিল্প উৎপাদন, খাদ্যপণ্য, পরিবহন খরচ, বিদ্যুৎ, পানিসহ সকল খাতে খরচ বহুগুণ বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সরকার গত ১২ বছরে অলস বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে রেখে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ ৮৬ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা প্রদান করেছে। এর মধ্যে শুধু ১০টি শীর্ষ বেসরকারি বিদ্যুৎ কম্পানিকে ৪৪ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা দিয়েছে। শুধু গত ৯ মাসে ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এভাবে বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীদের ভর্তুকি দিয়ে বাড়তি দামের বোঝা জনগণের ওপর চাপানো হচ্ছে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপণ্য ও খাদ্যপণ্যের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধিতে শ্রমজীবীসহ দেশের মানুষের এমনিতেই দিশাহারা অবস্থা। এর ওপর জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি শ্রমজীবীদের জীবনযাপনকে আরো কঠিন করে তুলবে। কোনো খাতের শ্রমিকের আয় বাড়েনি কিন্তু ব্যয় প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে দেশে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি কাঠামো ঘোষণা ও গার্মেন্ট, হোটেলসহ বিভিন্ন সেক্টরে নতুন মজুরি বোর্ড গঠন ও রেশন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এখন সময়ের দাবি। দাবি আদায়ে দেশের সকল শ্রমজীবী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ।
এ জাতীয় আরো খবর..