বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ বিনিয়োগে রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র অক্টোবরের আগে উদ্বোধন হচ্ছে না। আর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট ২০২৪ সালের শুরুর দিকে উৎপাদনে যাওয়ার আশা করছে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি আগামী সেপ্টেম্বরে প্রথম সপ্তাহে উদ্বোধন হতে পারে জানিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস সম্প্রতি এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে উদ্বোধন করা হতে পারে বাগেরহাটের রামপালে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট সক্ষমতার মৈত্রী সুপার থার্মাল বিদ্যুৎকেন্দ্র।
ওই মাসের ৫ থেকে ৭ তারিখের মধ্যে তিন দিনের সফরে ভারত যাওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। সে সময়ই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ যৌথভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উদ্বোধন করার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণের দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সাইদ একরাম উল্লাহর সঙ্গে। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সেপ্টেম্বরে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উদ্বোধনের বিষয়ে কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। তারা (হিন্দুস্তান টাইমস) এই তথ্য কোথা থেকে পেয়েছে জানি না। উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত হলে আমাদের আগেই জানানো হতো। ’
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) এবং ভারতের ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার করপোরেশন (এনটিপিসি) যৌথ কম্পানি গঠন করে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ২০১০ সালে ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরুর পর ২০১২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্মাণকাজ শুরু হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মূল অবকাঠামো তৈরি করেছে ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যাল লিমিটেড (বিএইচইএল)। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিট থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট করে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হওয়ার কথা রয়েছে।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রসঙ্গে বলে বিদ্যুৎ বিভাগের নীতি ও গবেষণা শাখা পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সেপ্টেম্বরে উদ্বোধনের বিষয়টি নিয়ে এখনো আমাদের কাছে কোনো নোটিশ আসেনি। আশা করছি, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি অক্টোবরের শেষ দিকে উদ্বোধন হতে পারে। ’
এদিকে রূপপুরসহ অন্যান্য বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনের বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট ২০২৪ সালের শুরুর দিকে উৎপাদনে যাওয়ার আশা করছি। রূপপুর কেন্দ্রে দুটি ইউনিটে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। এ ছাড়া বরিশালে একটি বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে, সেটি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে উৎপাদনে আসবে। একই সঙ্গে ভারতের আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে যে এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট আসার কথা সেটাও আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে আসবে। ’ তিনি আরো বলেন, ‘পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের গ্রিড লাইনের কাজটিও আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। যদিও পায়রা এরই মধ্যে প্রায় পূর্ণক্ষমতায় উৎপাদন করছে, সেটা গ্রিড লাইনের কারণে ঢাকায় আনা যাচ্ছে না। তবে পায়রার বিদ্যুৎ কিছু বরিশালে দেওয়া হচ্ছে, আর কিছু রামপালের গ্রিড লাইন দিয়ে খুলনায় দেওয়া হচ্ছে। ’
এ জাতীয় আরো খবর..