রবার্ট লেভানডফস্কি বার্সেলোনাতেই গেলেন। এককালীন ৪ কোটি ৫০ লাখ ইউরো এবং শর্তসাপেক্ষ আরও ৫০ লাখ ইউরোতে তাঁকে ছেড়ে দিয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ। কিন্তু রাজি হওয়ার আগপর্যন্ত বায়ার্ন ও লেভানডফস্কির মধ্যে যা হয়েছে, সেটাকে এককথায় বলতে গেলে কদর্য শব্দটাই ব্যবহার করতে হবে। একদিকে পোলিশ স্ট্রাইকার প্রকাশ্যে ক্লাবের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, ওদিকে ক্লাবের প্রধান নির্বাহী, চেয়ারম্যান ও ক্রীড়া পরিচালকেরা কোনোভাবেই লেভানডফস্কিকে ছাড়তে রাজি ছিলেন না।
খেলোয়াড় বনাম ক্লাব দ্বন্দ্বে খেলোয়াড়ই জিতেছেন। ব্যালন ডি’অর জেতার স্বপ্ন নিয়ে লেভানডফস্কি এখন বার্সেলোনা স্কোয়াডে যোগ দিয়েছেন। ওদিকে তাঁকে ছাড়াই আগামী মৌসুমের দল গোছাচ্ছে বায়ার্ন। দলবদলটা হয়ে যাওয়ায় তাই এখন মাঝের তিক্ততার কথা ভুলতে চাইছেন লেভানডফস্কি।
বায়ার্ন মিউনিখে আট বছরে আটবার লিগ ও একবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন। ব্যক্তিগত সাফল্যের দিক থেকে জিতেছেন দুটি ফিফা দ্য বেস্টের পুরস্কার। তবু ৩৪ বছর বয়সে এসে তাঁর হঠাৎ ক্লাব বদলে বার্সেলোনায় যাওয়ার ইচ্ছা হয়েছে। বায়ার্ন ছাড়তে কেন এত মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন লেভানডফস্কি, পোলিশ স্ট্রাইকার সেটা জানিয়েছেন জার্মান দৈনিক বিল্ডকে, ‘বুন্দেসলিগার বাইরে ভিন্ন কোনো লিগে খেলতে চেয়েছিলাম, বহুদিন আগেই এ সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু জোর দিয়ে বলছি, এটা আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল। আমি আবার অন্য কোথাও থাকতে চেয়েছি, আমার পরিবার নিয়ে নতুন করে কিছু শুরু করতে চেয়েছিলাম।’
বাজারে গুঞ্জন, বায়ার্ন লেভানডফস্কিকে বড় চুক্তি দিতে রাজি ছিল না, যা বার্সেলোনা দিয়েছে। সে কারণেই বার্সেলোনায় যেতে এত উঠেপড়ে লেগেছিলেন এই স্ট্রাইকার। যদিও লেভা বলছেন, পরিবারের জন্যই নাকি এই সিদ্ধান্ত, ‘আমার মেয়ে ক্লারা আগামী বছর স্কুল শুরু করবে। আমাদের একটা সিদ্ধান্ত নিতে হতো এবং এমন সিদ্ধান্ত, যেটা নতুন কিছু হবে। এখন না নিতে না পারলে আর কখনো নেওয়া হতো না। এটা জীবনে একবারই আসে—এমন এক সুযোগ। আমি কয় দিন পরই ৩৪ হব, কিন্তু শারীরিক ও মানসিকভাবে খুব শক্তিশালী বোধ করি। বার্সেলোনাও সেটাই মনে করে। আমি জানি না এর পর কী হবে, কিন্তু ২০২৬ সালই যে শেষ এমন নয়। আমি শীর্ষ পর্যায়ে আরও অনেক বছর খেলতে চাই।’
নতুন অধ্যায় শুরু করার আগে পুরোনো অধ্যায়ের সুন্দর সমাপ্তি তো টানতে হয়। লেভানডফস্কি সে চেষ্টাই করেছেন, ‘এখানে দারুণ আটটি বছর কাটিয়েছি। আশা করি, কয়েক দিন পর গত কয়েক সপ্তাহে যা হয়েছে, সেগুলো ভুলে যেতে পারব। দুই পক্ষ থেকেই অপ্রয়োজনীয় কিছু কাজ করা হয়েছে। আমরা একসঙ্গে যা অর্জন করেছি: শিরোপা, জয়—সেগুলোই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমি সমর্থকদের ধন্যবাদ দিতে চাই। মিউনিখে আমার শেষ সপ্তাহেও অনেক গুঞ্জন ছিল, সমস্যা ছিল, তখনো তাঁরা আমাকে সমর্থন দিয়েছেন। আমি বুঝতে পেরেছি, তাঁরা আমার ইচ্ছার পেছনে যুক্তিটা বুঝতে পেরেছেন, আমাকে সমর্থন দিয়েছেন। আমি কখনো এটা ভুলব না।
এ জাতীয় আরো খবর..