সারা দেশেই প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বিদ্যুতের লোড শেডিং চলছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছে মানুষ। তবে ঈদের ছুটিতে স্বস্তি মিলবে। গতকাল শুক্রবার থেকে শিল্প-কারখানাসহ প্রায় সব ধরনের অফিস চার দিনের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে।
এতে কমেছে বিদ্যুতের চাহিদা। ফলে লোড শেডিং অনেকটাই কমে গেছে। এই পরিস্থিতিতে ঈদের ছুটিতে কম ভোগাবে লোড শেডিং।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ঈদের ছুটিতে সব ধরনের শিল্প-কারখানা বন্ধ থাকায় বিদ্যুতের চাহিদা অনেকটাই কমেছে, যার কারণে ঈদের ছুটির সময়ে লোড শেডিং কম থাকবে। তবে ঈদের পর আবার কঠিন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। কারণ তখন আবার গ্যাস ও বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাবে।
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, দু-এক দিন আগের তুলনায় গতকাল লোড শেডিংয়ের পরিমাণ অর্ধেকে নেমে এসেছে। তিন-চারবার লোড শেডিং হয়েছে। কিন্তু গত সপ্তাহজুড়ে ত্রিশালে আট থেকে ১০ বার লোড শেডিং হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব মিলিয়ে গ্রাহকরা তখন সর্বোচ্চ সাত-আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ পেয়েছিল।
ত্রিশালের মঠবাড়ী ইউনিয়নের বাসিন্দা সাইফুল আলম তুহিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে ত্রিশালে চরম মাত্রায় লোড শেডিং ছিল। সেই তুলনায় গতকাল অর্ধেকের চেয়ে কম লোড শেডিং হয়েছে। ’
এদিকে রাজধানীতেও কমে গেছে লোড শেডিং। গত সপ্তাহে প্রতিদিন তিন-চারবার করে লোড শেডিং হচ্ছিল রাজধানীর অনেক এলাকায়। তবে গতকাল মাত্র একবার লোডশেডিং হয়েছে বলে জানান রাজধানীর দক্ষিণ কুড়িল এলাকার বাসিন্দা মাসুদ রানা।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঈদের ছুটিতে দেশের শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে অনেকটাই কমেছে গ্যাস ও বিদ্যুতের চাহিদা। এসব শিল্প-কারখানা থেকে সাশ্রয় হওয়া গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে। এ কারণেই ঈদের ছুটিতে লোড শেডিং থাকার আশঙ্কা নেই। এই গরমের মধ্যে হাঁসফাঁস অবস্থায় পড়ে ম্লান হবে না ঈদের আনন্দ।
জানতে চাইলে বিপিডিবির পরিচালক সাইফুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে রাজধানী ও গ্রামাঞ্চলে লোড শেডিং থাকবে না। কারণ এখন বিদ্যুতের চাহিদা অনেক কমে গেছে। তাই আমরা ঈদের ছুটির সময়টিতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারব। ’
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় গ্যাস সরবরাহ করা যাচ্ছে না। বিশ্ববাজারে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকায় স্পট মার্কেট (খোলাবাজার) থেকে আপাতত এলএনজি কিনছে না সরকার। এ কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গেছে, যার ফলে লোড শেডিং দিতে হচ্ছে।
এ জাতীয় আরো খবর..