×
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৭-০৫
  • ৩১৪ বার পঠিত
‘গরু তো নিয়া আইছি ১৪টা। এহনো কেনবার মানুষ তো পাই নাই। কার কাছে বেচমু? মানুষজন আহে আর জিগায়া যায়গা। গতবার ১০টা গরু আইনা ৮টা বেচতে পারছিলাম।

এইবার অনেক টাকা খরচা কইরা পালা গরু নিয়া আইলাম; দেহি ভাগ্যে কী আছে। ’ গতকাল সোমবার বিকেল ৩টার দিকে গাবতলীর গরুর হাটে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছিলেন কুষ্টিয়ার গরু ব্যবসায়ী জোবায়ের আহমেদ।
তিনি জানান, গরুর খাবারের দাম অনেক বেশি। এক বছরে বলতে গেলে খাবারের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। ফলে খরচ অনেক বেশি পড়েছে। তাই বিক্রিও করতে হবে বেশি। এ ছাড়া ট্রাকভাড়া, রাস্তার খরচ, এখানে কয়েক দিন থাকার খরচ তো আছেই। সব মিলিয়ে এবার গরুর দাম বেশি হবে।

গাবতলী পশুর হাটের প্রধান ফটকের পাশে সাজানো হয়েছে অস্থায়ী হাটের শেড। সারি সারি শেডে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আনা গরু সারিবদ্ধভাবে রাখা হচ্ছে। তবে অর্ধেক জায়গা এখনো ফাঁকা। গাবতলী হাটে ছোট ও মাঝারি গরুর তুলনায় বড় গরু বেশি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখনো ক্রেতা কম আসছে। বিক্রির অপেক্ষায় আছেন তাঁরা। আশা করছেন, আগামী বৃহস্পতি-শুক্রবার থেকে পুরোদমে বেচাকেনা শুরু হবে।

চুয়াডাঙ্গার গরু ব্যবসায়ী জিয়াদুল ইসলাম বলেন, এবার মাঝারি ও ছোট গরুর দাম বেশি হবে। গত বছর যে মাঝারি গরু ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে, এবার ৭০ থেকে ৮৫ হাজার টাকা দাম পড়বে। দাম বেশির একটাই কারণ, গোখাদ্যের উচ্চ দাম।

গাবতলী পশুর হাটের বিক্রেতারা জানান, এখনো কোরবানির পশু কেনাবেচা শুরু না হলেও অনেকে ঘুরে ঘুরে দেখছেন। কেউ আসছেন গরু দেখতে, কেউ আসছেন দাম জানতে।

মোহাম্মদপুরের এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা শাহাদাৎ স্বপন বলেন, ‘গরু কিনব একটা। প্রতিবছর ৯০ থেকে এক লাখ টাকার মধ্যে কিনি। ফলে দাম দেখতে এলাম। সেই হিসাবে প্রস্তুতি নেব। ’

বাজার দেখে কী মনে হচ্ছে জানতে চাইলে স্বপন বলেন, ‘গতবারের তুলনায় এবার ব্যবসায়ীরা অনেক বেশি দাম চাচ্ছে। কিছু গরুর দাম তো দেখি দ্বিগুণ। গতবার যে গরু ৯০ হাজার দিয়ে কিনেছি, সেটি এবার চাচ্ছে দুই লাখ টাকা। হয়তো দরদাম করলে এক লাখ ৩০ থেকে ৪০ হাজারে কেনা যাবে। ’

রাজধানীর বড় পশুর হাটগুলোর মধ্যে আরেকটি ঢাকা উত্তর সিটির ভাটারা সাঈদনগর পশুর হাট। গতকাল ওই হাটে গিয়ে দেখা গেছে, খামারি-ব্যবসায়ী এবং ক্রেতাদের নিরাপত্তায় প্রচুরসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী কাজ করছে। গরু রাখতে বাঁশ দিয়ে জায়গা করা আছে। ওপরে টানিয়ে দেওয়া হয়েছে ত্রিপল। পাইকারদের থাকার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই হাটে প্রচুরসংখ্যক গরু-মহিষ নিয়ে এসেছেন খামারি ও ব্যবসায়ীরা।

তবে এখনো বেচাবিক্রি শুরু হয়নি। খামারিদের সঙ্গে আসা রাখালদের অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে। সাইফুল নামের কুষ্টিয়ার এক রাখাল জানান, গরুকে খাওয়ানো, গোসল করানো, ময়লা পরিষ্কার করা ছাড়া এখন তেমন কাজ নেই। ঈদের আরো বেশ কয়েক দিন বাকি। ফলে আনুষ্ঠানিক বিক্রি এখনো শুরু হয়নি।

ব্যবসায়ীরা জানান, হাটে এরই মধ্যে বেশির ভাগ গরু চলে এলেও বিক্রি শুরু হবে আরো দুই দিন পর। মূলত ঈদের দুই-তিন দিন আগে থেকে বিক্রি শুরু হয়।

পাবনা থেকে গরু নিয়ে এসেছেন ব্যবসায়ী জিয়াউল হক। তিনি বলেন, ‘এবার মাঝারি সাইজের গরুর দাম বেশি পড়বে। প্রতিবছর এক থেকে দেড় লাখ টাকার গরুর চাহিদা বেশি থাকে। এবারও মাঝারি সাইজের চাহিদা বেশি থাকবে বলে দামও বেশি হবে। ’

সাঈদনগর পশুর হাট পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আজহার শাহীন জানান, হাট কর্তৃপক্ষ সব কাজ শেষ করেছে। বিক্রেতাদের জন্য সব ধরনের আয়োজন করা হয়েছে। ব্যবসায়ী ও খামারিদের যাতে কোনো ধরনের সমস্যা না হয় সে বিষয়টি মাথায় রেখে কার্যক্রম চলছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat